আইপিএলে বাংলার ছ'জন, তাও কেন বাংলার ক্রিকেটাররা আইপিএলে সেই ভাবে সফল হচ্ছে না?
বাংলার ঘরোয়া ক্রিকেটে ১২ টা দল নিয়ে একটা সুপার ডিভিসন হওয়া দরকার
- Total Shares
বিএনআরের বিরুদ্ধে ২০ বলে ১০২ রান জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বাংলার ঋদ্ধিমান সাহা। ১৪টি ছক্কা ও চারটি চারে সাজানো ছিল তাঁর সেই রাজকীয় ইনিংস। এটা একটা রেকর্ডও বটে। অথচ তার অল্পদিনের মধ্যে আইপিএল খেলতে নেমে এখনও অবধি ব্যর্থ ঋদ্ধি।
এবছরই বাংলা থেকে সবচেয়ে বেশি ক্রিকেটার আইপিএলে প্রতিনিধিত্ব করেছে। মোট ছ'জন। কিন্তু ঋদ্ধিমান ছাড়া বাকিরা সেই ভাবে সুযোগই পাচ্ছে না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন বাংলার ক্রিকেটাররা আইপিএলে সেই ভাবে সফল হচ্ছে না?
এবার ঋদ্ধির জায়গায় হয়ত শ্রীবৎসকে খেলতে দেখা যাবে
বাংলার ছেলেদের আইপিএলের জন্য প্রস্তুতির অভাব রয়েছে। কলকাতা মাঠে থেকে যারা আইপিএলে সুযোগ পেয়েছে তাঁরা ছোটো ছোটো মাঠে অতি নিম্নস্তরের বোলারদের বিরুদ্ধে ব্যাটিং করেন জে সি মুখার্জী ট্রফির খেলাগুলিতে। এই ম্যাচগুলিই বাংলার ছেলেদের কাছে আইপিএলের প্রস্তুতি ম্যাচ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অথচ এই খেলাগুলির গুনগত মানের সঙ্গে আইপিএলের মানের কোনও মিল নেই|
ময়দানের নিম্ন স্তরের ব্যাটিং উইকেট যে উইকেটে ব্যাটিং করে মাঠের বাইরে বলকে পাঠানো অতি সহজ। কিন্তু আইপিএল খেলা হয় বড় মাঠে এবং আন্তর্জাতিক মানের উইকেটগুলোতে। উলটোদিকে থাকেন পৃথিবীর তাবড় তাবড় ক্রিকেটাররা আর তাই বাংলার ছেলেদের সড়গড় হতে বেশ সময় লাগে।
প্রকৃত ব্যাটসম্যান বলতে একমাত্র বাংলার বর্তমান অধিনায়ক মনোজ তেওয়ারী যিনি এ বছর পঞ্জাবে খেলছেন, কিন্তু সুযোগ পাচ্ছেন না।ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে বাংলার অধিনায়কের। মনোজ সেভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটটা খেলেন না তাই ম্যাচ প্রস্তুতিরও অভাব রয়েছে মনোজের।
অশোক দিন্ডার মত বাংলার জোরে বোলার যিনি রঞ্জি ট্রফিতে এবারও বাংলাকে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছেন তিনিও সুযোগ পাননি এবছর। আর একজন বাংলার পেসার মহম্মদ সামি এবছর দিল্লি দলে। কিন্তু আইপিএলের আগে যেভাবে তাঁর সংসারিক জীবনে বিতর্কে জরিয়ে পরেছিলেন এবং খেলার আগে তাঁর যে দুর্ঘটনা ঘটলো তাতে করে উনি বেশ চাপে রয়েছেন। সামির থেকে এ মুহূর্তে বেশী কিছু আশা করা অন্যায়। আইপিএল শুরুর ঠিক আগেই পুরপুরি ক্রিকেটের থেকে সরে গিয়েছিলেন তিনি।
আইপিএল শুরু থেকেই চাপে রয়েছেন সামি
আর কনিষ্ক শেঠ কিংবা সায়ন ঘোষকে আইপিএলে খেলতে গেলে এখনও অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হিসাবে শ্রীবৎস এ বছর হায়দরাবাদ দলে আছে| কিন্তু তিনিও তো দীর্ঘদিন ম্যাচের বাইরে। ঋদ্ধিমানের জায়গায় তার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা এখন জোরদার হচ্ছে। কিন্তু সুযোগ পেলে কতটা মানিয়ে নিতে পারবে সেটাই বলা কঠিন|
আইপিএলে বাংলার ক্রিকেটারদের ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে বাংলার ঘরোয়া ক্রিকেটে ১২ টা দল নিয়ে একটা সুপার ডিভিসন হওয়া দরকার। এই টুর্নামেন্টে বাংলার সেরা ক্রিকেটাররাই শুধু খেলবেন। প্রয়োজন পড়লে প্রতিটি দলে একজন কি দু'জন ভালো মানের ভিনরাজ্যের ক্রিকেটার নেওয়া যেতে পারে। ঘরোয়া ক্রিকেটের পরিকাঠামোর উন্নতি না ঘটাতে পারলে এ রাজ্যের ক্রিকেটাররা আইপিএলে ব্রাত্যই রয়ে যাবে।