ফ্রান্সে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন কেন দিশাহীন হয়ে পড়েছে
বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন পৌনে তিন লক্ষের বেশি, শুধু শনিবারই নষ্ট হয়েছে ৩৪,০০০ মার্কিন ডলার সম্পত্তি
- Total Shares
ফের উত্তাল হল প্যারিস।
১৭ নভেম্বর থেকে ছুটির দিনগুলিতে ফ্রান্স জুড়ে হাজার হাজার মানুষ সরকারি নীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে ধারাবাহিক ভাবে বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছেন। শনিবার ৮ ডিসেম্বর সেই বিক্ষোভ ভয়াবহ আকার নেয়। সেদিন বিক্ষোভকারীরা বুলেভার্ড আর্ক দ্য থিঁয়ুফ মনুমেন্টের কাছে জড়ো হন। তার আগে প্রতিবাদের সময় এই মনুমেন্টটিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ-বিরোধী দেওয়ালচিত্র এঁকে রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে মাউন্টেড (ঘোড়ায় চড়া) পুলিশ তাদের তাড়া করে, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে। অগ্নিসংযোগ থেকে লুঠপাটের মতো ঘটনাও ঘটে। গ্রেফতার হন হাজারখানেক বিক্ষোভকারী। এঁদের কাছ থেকে হাতুড়ি, বেসবল ব্যাট ও খেলায় ব্যবহৃত ধাতব বল উদ্ধার হয়।
ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবনে। (ছবি: এএফপি)
আগেই প্যারিস মিউজিয়াম ও ল্যুভর মিউজিয়ামের মতো পর্যটকেদর কাছে আকর্ষণীয় কেন্দ্রগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত দশ-বারো বছরের মধ্যে ফ্রান্সে সরকার বিরোধী বিক্ষোভ সংগঠিত হয়েছে বলে শোনা যায়নি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রান্সের ইতিহাসে গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে প্রশমিত করতে কার্বন নির্গমন বন্ধ করতে জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে করেছে ফরাসি সরকার। এতে চাপ পড়েছেন মূলত স্বল্প আয়ের মানুষজন। এর প্রতিবাদে আন্দোলন সংগঠিত হয়। বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে এই আন্দোলন সারা বিশ্বে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন নামে পরিচিত হয়।
কেন উত্তাল ফ্রান্স
ফ্রান্সে গত এক বছরে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ। চলতি বছরের গোড়া থেকে ডিজেল এবং পেট্রলে করও বাড়ানো হয়েছে ব্যাপক হারে । এর সমস্যা পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এমনিতেই সে দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় গণপরিবহণ ব্যবস্থা অপ্রতুল, দৈনন্দিন কাজ ও পরিষেবাকেন্দ্রগুলিও যথেষ্ট দূরে, ফলে ব্যক্তিগত গাড়ির খরচ ও জ্বালানি খরচ বেড়ে আকাশছোঁয়া।
২০০০ সালের পর ফ্রান্সে জ্বালানি তেলের দাম এতটা বাড়েনি। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমলেও দেশবাসীকে আশার কথা শোনাতে পারেননি ম্যাক্রঁ। উল্টে ম্যাক্রঁ সরকার নতুন বছরের শুরু থেকে জ্বালানি তেলের দাম আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। এর সঙ্গে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম এতটাই বেড়েছে যে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ক্রমেই কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই অবস্থায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর সরকারের তরফে প্রতিকারের কোনও ব্যবস্থা করা তো দূরের কথা, চিন্তাভাবনা করার ইচ্ছে পর্যন্ত নেই বলে মনে করছেন আন্দোলনকারীরা। যদিও প্রেসিডেন্টের তরফে বলা হয় – দূষণমুক্ত শক্তি উৎপাদন (ক্লিন এনার্জি) নিয়ে উদ্যোগের কারণেই কর বাড়ানো হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত ভালো ভাবে নেয়নি দেশটির মধ্যবিত্ত শ্রেণী।
ফ্রান্সের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও জ্বালানি তেলের দাম কমানো ও অন্যান্য দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও গ্রিন ট্যাক্সের বিরোধিতায়। পরবর্তীতে সেই বিক্ষোভে স্লোগান ওঠে, ‘ম্যাক্রঁ রিজাইন’। বিক্ষোভকারীরা ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ-র পদত্যাগ দাবি করছেন। তাঁরা চাইছেন সংসদ ভেঙে দেওয়া হোক। তাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছে পড়ুয়ারাও।
সরকারের আর্থিক নীতি নিয়েও সমালোচনায় মুখর সাধারণ মানুষ। কেবলমাত্র পেট্রোপণ্য নয়, দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্রের লাগামছাড়া মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে অশান্ত হয়ে রয়েছে ফ্রান্স। আন্দোলনের জেরে ছন্দ হারিয়েছে ফ্রান্সের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। বিক্ষোভকারীরা প্যারিস শহরে ফরাসি গণতন্ত্রের প্রতীক মারিয়ানে মনুমেন্ট ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আগুন জ্বলছে রাস্তায় রাস্তায় । বন্ধ দোকানপাট।
আগুন জ্বলছে রাস্তায়, বন্ধ দোকানপাট। (ছবি: এএফপি)
টানা দু’সপ্তাহ দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর ৩ ডিসেম্বর রাতে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এদুয়া ফিলিপ জ্বালানির ওপর বর্ধিত কর প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী ফিলিপের জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে যোগ দিতে পোল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা ছিল। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি সফর বাতিল করতে বাধ্য হন। মানুষের মনের চাপা ক্ষোভ থেকেই তীব্র নাগরিক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবাদে ট্যাক্সিচালকদের ব্যবহৃত ‘ইয়েলো ভেস্ট’ পরে রাস্তায় নেমেছেন বিক্ষোভকারীরা।
‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন মানে কী
ফ্রান্সের এই নজিরবিহীন আন্দোলনকে কেন বলা হচ্ছে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ মুভমেন্ট? আসলে আন্দোলনকারীরা ইয়েলো ভেস্ট বা হলুদ গেঞ্জি পরছেন রূপক অর্থে। ২০০৮ সাল থেকে ফ্রান্সে আইন অনুযায়ী যে কোনও মোটর গাড়ি চালককে গাঢ় হলুদ রঙের গেঞ্জি পরতে হয়, যাতে গাড়ি চালককে সহজে চিহ্নিত করা যায়। ফ্রান্সের বিক্ষোভকারীরা এই হলুদ গেঞ্জিই বেছে নিয়েছেন কারণ, পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন পরিবহণ কর্মীরা। বামপন্থী দলগুলির নেতৃত্বে তাঁরাই শুরু করেছিলেন এই আন্দোলন। তাঁদের প্রতি সহমর্মিতা দেখাতে সাধারণ মানুষও হলুদ গেঞ্জি পরেই রাস্তায় নেমেছেন, যাতে গাড়ির জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে চিহ্নিত করা যায় চালকদের পোশাকের রঙ দেখে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমান করছে, এ পর্যন্ত মোট ২ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। শনিবারের তাণ্ডবে রাজধানীতে ৩৪ লাখ মার্কিন ডলারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। ১৭ নভেম্বর থেকে রাস্তা অবরোধ করতে শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। এরপর থেকে প্রতি শনিবার প্রতিবাদ করছে তারা।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, এই ঘটনায় ২০০ গাড়ি পুড়েছে এবং ৪১২ জনকে পুলিশ আটক করেছে। ফরাসি সরকার বলছে, আন্দোলনটি ক্ষুব্ধ সাধারণ ফরাসিদের দ্বারা সংঘঠিত হলেও, এখন সেটি চরম দক্ষিণপন্থী এবং নৈরাজ্যবাদীদের দখলে চলে গেছে। তারা হিংসা ও অস্থিরতা তৈরি করছে। আন্দোলনের মুখে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত বাতিল করলেও, ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলনকারীরা এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে হাজির হচ্ছেন। কর কমানো, বর্ধিত হারে নূন্যতম আয় নিশ্চিত করা, জ্বালানির মূল্য আরও কমানো, অবসরকালীন সুবিধা বাড়ানো এবং ফরাসি প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের মতো দাবিও এখন যুক্ত হয়েছে দাবির তালিকায়।
কোন পথে ‘ইয়েলো ভেস্ট’
জ্বালানি তেলের বাড়তি কর, জীবনযাত্রার মান নেমে যাওয়া আর নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ফ্রান্সে যে ‘ইয়েলো ভেস্ট’ আন্দোলন চলছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কতগুলি সাধারণ জিজ্ঞাসা তৈরি হয়েছে। এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী, কোন দিকে যাবে তার অভিমুখ, আর এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে কে? সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আয়োজিত এসব প্রতিবাদ–বিক্ষোভে ট্যাক্সিচালকদের ব্যবহৃত হলুদ জ্যাকেট পরে যারা ঝো দিচ্ছেন তাঁদের মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো নেতা কি কেউ আছেন?
আন্দোলনে এখনও পর্যন্ত অন্তত ২০০টি গাড়ি পুড়েছে। (ছবি: এএফপি)
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঝড় তুললেও ইয়োলো ভেস্ট আন্দোলন এখনও পর্যন্ত নেতৃত্বহীন। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ যে সঠিক দিশা পেয়েছে এ কথা বলা যাবে না। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ জ্বালানি তেলের মূল্য কমানোর দাবি করছেন, কেউ কেউ অন্যান্য আর্থিক বোঝা কমাতে বলছেন। কেউ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চাইছেন। ফরাসি সংবিধানে এমন কোনও আইন নেই যাতে জোর করে দেশের প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করা যায়। তাই প্রেসিডেন্টের ইচ্ছে ছাড়া তাঁকে পদ থেকে সরাতে জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে ২০২২ সালের নির্বাচন পর্যন্ত। যদিও, বর্তমান পরিস্থিতিতে যথেষ্টই চাপে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ।
কেউ কেউ পেনশন বাড়ানোর বা সর্বনিম্ন মজুরি বাড়ানোর কথাও বলছেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর গত ১৮ মাসের মধ্যে এমানুয়েল ম্যাক্রঁর সরকারের বিরুদ্ধে এটাই সবচেয়ে বড় ও ধারাবাহিক আন্দোলন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সেই আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেয়। ফ্রান্সের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ এই বিক্ষোভের পক্ষে মত দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরাও বলছেন, তাঁরা খালি হাতে ফিরতে চান না। কিন্তু এর কোনও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব না থাকায় কার সঙ্গে কথা বললে আন্দোলন থামবে, তা খুঁজে পেতে দিশেহারা সরকার। পাশাপাশি অনেকেই আন্দোলনের এই জঙ্গি ভাব ও ভয়াবহতাকে সমর্থন করছেন না।
ইয়েলো ভেস্ট মুভমেন্টকে ফ্রান্সের ১৯৬৮ সালে প্যারিসের চ্যাম্প-ইলিসেস ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করছেন অনেকেই। যেখানে প্রবল আন্দোলনের মুখে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট চার্ল দ্য গল বাধ্য হয়েছিলেন আন্দোলনকারীদের দাবি মানতে এবং পরে প্রেসিডেন্টের পদ থেকে ইস্তফা দেন গল।
আন্দোলন ক্রমেই দিশাহীন হয়ে পড়ছে। (ছবি: এএফপি)
এই আন্দোলনের জেরে এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৮০০ মানুষ। বহু আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জি ২০ মিটিং ছেড়ে তড়িঘড়ি দেশে ফিরেছেন ফরাসি রাষ্ট্রপতি। সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বহু চেষ্টা হচ্ছে কিন্তু পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এই আন্দোলন আসলে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে বলে মনে করছে সরকার। আন্দোলনের পিছনে সরকার বিরোধী বড়সড় চক্রান্ত দেখছেন ম্যাক্রঁ। তিনি দোষীদের চিহ্নিত করে আদালতে তোলার কথাও ভাবছেন।
প্রসঙ্গত, ৫০ বছর আগে ছাত্রদের এক তীব্র বিক্ষোভ-বিদ্রোহে কেঁপে উঠেছিল ফ্রান্স। ১৯৬৮ সালের মে মাসে এই বিদ্রোহের শুরু করেছিলেন ফ্রান্সের শিক্ষার্থীরা। ভিয়েতনাম যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে তাঁরা সোচ্চার হয়েছিলেন 'রক্ষণশীল ও কর্তৃত্ববাদী' সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন ফ্রান্সের শ্রমিকরাও। একথা ঠিকই যেএই আন্দোলনের প্রকৃতপক্ষে কোন নেতা নেই এবং এর আয়োজন মূলত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেই করা হচ্ছে। সরকার এই আন্দোলনের দায় চাপাচ্ছে ডানপন্থী সমর্থকদের উপর, কিন্ত এই আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থান খুবই মিশ্র ধরণের। এখনও ফ্রান্সের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নাগরিক এই আন্দোলনর প্রতি আস্থা রেখেছেন এবং ৮০% মানুষ মনে করেন মাক্রোঁকে তার সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে।