বিরাট কোহলি ও সচিন তেন্ডুলকর: মিল তাঁদের আছে, তবে অমিলটাই বেশি
দু'জনেই একার কাঁধে দলের দায়িত্ব সামলিয়ে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান হয়েছেন
- Total Shares
সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে বিরাট কোহলি অমিল প্রচুর। বিশ্বজুড়ে আপনি নিন্দিত হবেন, একজন প্লেয়ারের পক্ষে এ ধরণের ইমেজ তৈরি করা কিন্তু বেশ দুরূহ। ভারত অধিনায়ক কিন্তু ইংরেজ বা অস্ট্রেলীয়দের খুব প্রিয় পাত্র নন। কিন্তু এই ইমেজের সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই মানিয়ে নিয়েছেন কোহলি।
সিরিজের মাঝে
সময় বিশেষে এই বিতর্কিত ইমেজটাকে আড়াল করে কোহলি পাশের বাড়ির ভালো ছেলে হয়ে ওঠেন। কিন্তু পর মুহূর্তেই তিনি আবার সেই বিতর্কিত চরিত্র। তবে বিতর্কের সৃষ্টি হয়ে সেই বিতর্ককে আড়াল করে নিতে কোহলি সিদ্ধহস্ত। একেবারে বেনারসি শিল্পীদের মতো সূচ-সুতো নিয়ে এমন সেলাই করেন যে বিতর্ক তাঁকে আর ছুঁতেই পারেন না। অনেক সময়ই এই বিতর্কের সৃষ্টি করে থাকেন কোহলি নিজেই।
এই টেস্টের কথায় এবার আসা যাক। ইশান্ত যখন আউট হলেন কোহলি শতরানের থেকে কয়েক রান কম। ইন্ডিয়া যখন আউট হলেন কোহলির রান ১৫০ থেকে কিছু কম। এই সময় আমরা দেখলাম বিরাট কোহলি বল ছেড়ে খেলতেও সিদ্ধহস্ত। উল্টোদিকে অ্যান্ডার্সন দুর্দান্ত বল করছিলেন। একটা বেশ অসম লড়াই আমার উভোগ করছিলাম। যুদ্ধে জয়ী হলেন বিরাট। ওই ইনিংসে অ্যান্ডার্সন ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে কম রান দিয়েই থাকতে পারেন, কিন্তু কোহলিকে তিনি পরাস্ত করতে পারেননি।
সত্যি বেশ নাটকীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। এমনিতেই কোর্টনি ওয়ালশ বা ওই মানের বোলার না হলে এত রক্ষণাত্মক খেলার প্রশ্ন ওঠে না। এই স্ট্রাটেজি প্রয়োগ করেই অবশ্য কোহলি ইংল্যান্ডের মাটিতে নিজের শতরানের বীজটা পুঁতে ফেললেন। শতরানটা ইশান্ত আউট হওয়ার ছ'বল পরে চারটে বল ড্রপ হওয়ার পরে। স্কোয়্যারে গ্লান্স করে। এর পরেই সেই দৃশ্য। হেলমেট খুলে, দেন হাতের গ্লাভস খুলে গলায় ঝোলা লকেট বের করে কোহলির চুম্বন।
গলায় ঝোলা লকেট বের করে কোহলির চুমু
টিভির পর্দায় মাঠের নাটক চলাকালীন কোহলি অসাধারণ ব্যাটসম্যান বলে মন্তব্য করেছেন আথারটন। এর পরেই এক অন্য ধরণের একদিনের ক্রিকেট দেখা গেল। মারব কিন্তু সিঙ্গেলস নেব না। শেষ উইকেটে ১২ ওভারে ইন্ডিয়া ৬৩ রান যোগ করেছিল। এর মধ্যে অধিনায়ক নিজেই আটটি চার ও একটি ছয় মেরেছেন।
স চিনও এধরণের বহু ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু এত কিছুর পরেও কোহলির সঙ্গে তাঁর অমিল প্রচুর। ওই যে বললাম সচিন সবার কাছে প্রিয়, কিন্তু কোহলি তো অপ্রিয় হয়ে থাকতেই পছন্দ করেন। আরও একটি বিষয় আমরা নিশ্চিত। কোহলি সচিনের থেকে বড় অধিনায়ক। হয়ত বড় অধিনায়করা এ রমই হন।
এই সিরিজ যদি ভারত কোনও ক্রমে জিতে যায় তাহলে কে জানে আবার কী নতুন নাটক রচনা করবেন। রচনা যে করবেন তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।
হ্যাঁ, আরও একটি বিষয় নিশ্চিত থাকতে পারেন। সচিনকে কিন্তু তখনও দর্শকের ভূমিকাতেই দেখা যাবে।