যুক্তরাষ্ট্র -চিনের শুল্ক হার যুদ্ধে ভারতের সয়াবিন কৃষকরা আশার আলো দেখছেন
চিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া সয়াবিনের উপর আমদানি শুল্ক ধার্য করায় ভারতীয় কৃষকরা উপকৃত হতে পারে
- Total Shares
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে শুল্ক হার নিয়ে লড়াই শুরু হয়েছে আর এর থেকে ব্যবসায়িকভাবে লাভবান হতে পারে মধ্যে ভারতের সয়াবিন কৃষকরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিন যে সয়াবিন আমদানি করে তার উপর আমদানি শুল্ক চালু করা হয়েছে। এর ফলে চিনে যে তৈলবীজের চাহিদা সৃষ্টি হবে তা ভারতের কৃষকদের পূরণ করতে হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। চিনে সয়াবিনের বার্ষিক চাহিদা ১২ লক্ষ টনের মতো।
ভারতে সর্বোচ্চ সয়াবিন মধ্যপ্রদেশে উৎপন্ন হয় যা এ দেশে উৎপাদিত সয়াবিনের ৫৫ শতাংশ। মধ্যেপ্রদেশ ছাড়া মহারাষ্ট্র ও রাজস্থানেও বেশ ভালো পরিমাণে এই তৈলবীজ উৎপাদন করা হয়।
উল্টোদিকে, গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সয়াবিন আমদানি করে থাকে চিন। ২০১৬-১৭ আর্থিক বর্ষে চিন ৯৩ মিলিয়ন টন সয়াবিন আমদানি করেছে, যার সিংহভাগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও আর্জেন্তিনার থেকে এসেছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। জুলাই ৬ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থেকে আমদানি হওয়া সয়াবিনের উপর চিন ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করেছে। এর পর থেকেই আশার আলো দেখতে শুরু করেছে ভারত। এ বছরেই কেন্দ্রীয় সরকার সয়াবিন ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য ৩,০৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩,৩৩৯ টাকা প্রতি কুইন্টাল করে দিয়েছে।
সয়াবিন ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য ৩,০৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩,৩৩৯ টাকা প্রতি কুইন্টাল করে দিয়েছে
এবার সত্যি সত্যি যদি এদেশের সয়াবিনের চাহিদা চিনে বৃদ্ধি পায়ে তাহলে ভারতে সয়াবিন উৎপাদন নতুন জীবন পাবে। খরিফ শস্যের সময় সয়াবিন উৎপাদন অনেকটাই জৌলুশ হারিয়েছে কারণ এই ফসল থেকে খুব কম আয়ে হয়।
এর ফলে, মধ্যপ্রদেশের প্রচুর সয়াবিন কৃষকই এখন বাসমতি চালের মতো রপ্তানি-জাত পণ্যের উৎপাদন শুরু করে দিয়েছেন। বাসমতি উৎপাদনের জন্যে নিঃসন্দেহে কৃষকদের আয়ে বেড়েছে। কিন্তু এর জন্যে অন্য সমস্যাও সৃষ্টি হয়েছে, যেমন ভূগর্ভস্থ জলের স্তর নেমে গিয়েছে।
এই মুহূর্তে সয়াবিন ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য গতবছরের ৩,০৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৩,৪০০ টাকা করা হয়েছে। কিন্তু বাজারে সয়াবিনের দাম মেরেকেটে ১,২০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। দু'দশক আগেও সয়াবিন বেঁচে যা লাভ করা যেত তার তুলনায় যা কিছুই নয়।
আশির দশকের মাঝে ও ও নব্বইয়ের দশকে মধ্য মধ্যপ্রদেশে এই সয়াবিন সে রাজ্যের কৃষি আয়ে অনেকটাই বৃদ্ধি করেছিল যা রাজ্যের কৃষকদের বিভিন্ন ধরণের আধুনিক প্রযুক্তির কৃষি সরঞ্জামের উপর বিনিয়োগ করতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু সয়াবিনের আন্তর্জাতিক চাহিদা পড়ে যাওয়ার ফলে কৃষকরা এখন আর এই ফসল উৎপাদন করতে চান না। চিনে ভারতের সয়াবিনের চাহিদা বাড়লে এ এদেশে সয়াবিন উৎপাদনের ভাগ্য খুলে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
(সৌজন্য: মেল টুডে)
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে