অমরনাথ যাত্রা করতে পারেন দুটি পথে, আপনি কোন পথে যাবেন?
একটি পথ ৩২ কিমি, অন্যটি ১৪। কারা কোন পথে যান
- Total Shares
অমরনাথ যাত্রা যে সহজ নয়, এ কথা সকলেই জানেন। তাই স্বাস্থ্যপরীক্ষা ছাড়া সেখানে যাওয়ার ছাড়পত্র মেলে না। তবে একটা কথা প্রথমেই বলে রাখা দরকার, কেদারনাথ ও যমুনোত্রী যাত্রার সঙ্গে অমরনাথ যাত্রার পার্থক্য আছে। উত্তরাঞ্চলের ওই দুই তীর্থস্থানে যাওয়ার হাঁটাপথ একটিই। তবে অমরনাথ যাওয়ার দুটি পথ আছে। একটি পহেলগাম হয়ে, অন্যটি শ্রীনগর হয়ে।
অমরনাথের পথে নিরাপত্তা (পিটিআই)
পহেলগাম হয়ে অমরনাথ পৌঁছাতে হলে ৩২ কিলোমিটার হাঁটতে হবে, শ্রীনগর ও বালতাল হয়ে পৌঁছালে ১৪ কিলোমিটার হাঁটতে হবে। দুই পথেই অবশ্য ঘোড়া, পালকি প্রভৃতির ব্যবস্থা আছে। দুই পথেই মোটামুটি একই সংখ্যায় তীর্থযাত্রী থাকেন। পহেলগাম হল খুব পুরোনো রুট। তাই পুণ্যার্থীরা আগে এই পথ দিয়েই যেতে চান। যাঁরা শারীরিক ভাবে পারেন না, তাঁরা শ্রীনগরের পথ ধরেন। হেলিকপ্টারে যাওয়ার বন্দোবস্তও আছে।
মাস তিনেক আগে যাওয়ার জন্য আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হয়। এ রাজ্যে পঞ্চাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে তা পাওয়া যায়। স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট ও নির্দিষ্ট স্থান থেকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরেই যাওয়ার ছাড়পত্র মেলে। পহেলগাঁও পৌঁছে আবার কয়েকটি পরীক্ষা করা হয়, মূলত রক্তচাপ, রক্তশর্করা (যদি থাকে) প্রভৃতি। তারপরে যাওয়ার ছাড়পত্র মেলে। অনেক সময় এক-দু’রাত পহেলগামে কাটাতে হতে পারে, যদি উপরের দিকে আবহাওয়ার কারণে তীর্থযাত্রীরা হোটেলে আটকে পড়েন তা হলে এ দিক থেকেও যাত্রীদের ছাড়া হয় না। তাই যাত্রা শুরু করার পরে পথে থাক-খাওয়ার কোনও সমস্যা হয় না। পহেলগাম ছাড়াও শেষনাগ ও পঞ্চতরণীতে বেসক্যাম্প আছে।
অমরনাথ যাত্রা (পিটিআই)
জম্মু-কাশ্মীর বললেই অনেকেই জঙ্গি-হামলা প্রসঙ্গ তোলেন। তবে এই রুটে তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর কর্মী অতন্দ্র পাহারা দেন। দুর্ঘটনা হতে পারে, সে তো বাসে-ট্রেনে চড়লেও হতে পারে। আমি কয়েকবার অমরনাথ গিয়েছি। আমার কোনও সমস্যা হয়নি, কোনও আশঙ্কার মধ্যেও রাত কাটাতে হয়নি। আমি অবশ্য প্রতি বারই ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যা,সীদের থেকে সাহায্য পেয়েছি। তাঁরা তীর্থযাত্রীদের চা খাওয়ানো থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া, এমনকি প্রয়োজনে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করে থাকেন।
অমরনাথের পথে সাধুসন্তরা, নাম নথিভুক্তিকরণের লাইনে
যাঁরা এই পথে আসতে চান, তাঁরা যদি শারীরিক ভাবে খুব বলিষ্ঠ না হন, তা হলে দুটি উপায় আছে। সহজ হল শ্রীনগর হয়ে যাওয়া। আর যদি পহেলগাম হয়েই যেতে চান, সে ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে হেঁটে ও বিশ্রাম করে তিন দিন ধরে যেতে পারেন, নামার সময় দু’দিন সময় নিতে পারেন। সে জন্য খরচ যে বাড়বে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই সেই মতো টাকা-পয়সা সঙ্গে রাখলেই চলবে।