নির্দিষ্ট কোনও একটা বিশ্বাসকে চরিতার্থ করার তাগিদেই হয়তো ভাটিয়া পরিবারের এই পদক্ষেপ
কোনও 'গডম্যান' বা গুরুদেবের আদেশে 'মোক্ষ লাভে'র আশাতেই হয়তো এই পদক্ষেপ করেছেন ভাটিয়া পরিবার
- Total Shares
সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে একই পরিবারের যে ১১ জনের রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে সে বিষয় পুলিশের কাছে পরিষ্কার কোনও তথ্য এখনও নেই, তবে তদন্ত চলছে।
ঘটনাক্রমে এখনও বেশ ধোঁয়াশা থাকলেও খবরের কাগজগুলো পড়ে মনে হচ্ছে যে কোনও 'গডম্যান' গোছের কোনও সাধুবাবা বা গুরুদেবের নির্দেশে 'মোক্ষ লাভে'র আশাতেই হয়তো এই পদক্ষেপ করেছেন ভাটিয়া পরিবার। যদিও দিল্লি পুলিশ ১২তম ব্যক্তির হাত এই ঘটনার পেছনে যে থাকতেও পারে সে সন্দেহও একদম উড়িয়ে দিচ্ছে না।
ভাটিয়া পরিবার
প্রথম দিন পুলিশি তদন্তের সময় ভাটিয়াদের বাড়ি থেকে কয়েকটি হাতে লেখা কাগজ পাওয়া যায় যাতে মোক্ষ লাভের বিভিন্ন উপায়ের কথা লেখা রয়েছে।
কারোও যদি কোনও কিছুর উপরে বিশ্বাসটা বেশ বদ্ধমূল হয়ে যায় তখন অনেক সময় সে সেই বিশ্বাসকে চরিতার্থ করার জন্য যে কোনও পদক্ষেপ করতে প্রস্তুত থাকেন।
পুলিশি প্রহরা
ঠিক একই ভাবে যিনি মানববোমা হতে চলেছেন, মৃত্যু অনিবার্য্য জেনেও তিনি সেই কাজটা করতে পিছপা হন না। তাই বিশ্বাসটা যখন অন্ধবিশ্বাসের জায়গায় চলে যায় বা খুব গভীর হয় এবং একই সঙ্গে সেই ব্যক্তি যখন মনে করেন যে তিনি যা করতে চলেছেন তার ফলে একটা প্রাপ্তি হবে তখন নিজের মৃত্যুও তাঁর কাছে খুব তুচ্ছ বলে মনে হয়।
ভাটিয়াদের বাড়ি থেকে যে হাতে লেখা নোটগুলো পাওয়া গেছে সেখানে এই ধরণের 'পরমপ্রাপ্তি'র কথা লেখা রয়েছে। তাই এই প্রাপ্তির লোভটা এতটাই বেশি যে তাঁরা আর কোনও কিছুকেই ভয় করেন না।
এই মৃত্যুর কারণ যদি সত্যিই মোক্ষ লাভের জন্য হয়ে থাকে তাহলে তা মানসিক বিকৃতির নামান্তর মাত্র।
ভাটিয়াদের আত্মীয়স্বজন
আবার জীবনে কিছু না পাওয়ার অতৃপ্তির থেকেও মানুষ একটা বিশ্বাসকে অনেক সময় আঁকড়ে ধরেন।
এখানে আরও একটা ব্যাপার আছে সেটা হল এই ধরণের কাজ যখন কোনও একজন ব্যক্তি করার চেষ্টা করেন তখন অনেক সময় তিনি অকৃতকার্য হন কিংবা যথেষ্ট মানসিক জোর জোটাতে পারেন না, কিন্তু যখন সেই কাজটা একসঙ্গে অনেকে মিলে করেন তখন তাঁরা একে অপরকে শক্তি যোগান ও মানসিক সাহস প্রদান করেন যার ফলে কাজটা আরও সহজ হয় যায়।
বাড়ির সামনে পুলিশ ও সাধারণ মানুষের ভিড়
এখন টেলিভশন খুললে বা খবরের কাগজ খুলেই ভালো খবরের থেকে খারাপ খবর অনেক বেশি চোখে পরে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি মোবাইল, টেলিভিশন কিংবা কম্পিউটারের মাধ্যমে মানুষের হাতের মুটিয়ে এখন বিশ্ব, দেশবিদেশের নানা তথ্যে আমাদের মুখ ঢেকে যাচ্ছে। মিডিয়ার ভূমিকাও একেবারে অস্বীকার করলে চলবে না। তাই প্রত্যেকদিন এই খবরগুলো পড়তে পড়তে আমাদের মনন ও আবেগগুলো যেন কেমন ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। এখন খুব খারাপ খবর পড়লে সেটা নিয়ে আমরা আলোচনা করি ঠিকই তবে এই খবরগুলো তেমন ভাবে আর আমাদের বিচলিত করে না।