বর্ষাকালে ছুলি, মেচেতা কিংবা চুলকানি থেকে বাঁচতে ত্বককে পরিষ্কার রাখুন
বৃষ্টির নোংরা জল-কাদা গায় লেগে বিভিন্ন সংক্রমণ হতে পারে
- Total Shares
গ্রীষ্মকালে যখন গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা তখন আমরা ভাবি কবে আসবে বৃষ্টি। চারপাশ শীতল করে যখন বৃষ্টি নামে তখন আবার তা একনাগাড়ে চলতে থাকলে আমাদের অভিযোগ শুরু হয়ে যায়। রাস্তাঘাট জল থইথই, বাড়িঘর স্যাঁৎস্যাঁতে এবং জামাকাপড় ভিজে-- এই সব মিলিয়ে বৃষ্টিতেও যেন আমাদের অবস্থা কাহিল হয়ে যায়।
শুধু তাই নয়, গরমে যেমন অনেকের ত্বকের নানা সমস্যা দেখা দেয় বিশেষ করে ঘামাচি ঠিক তেমনই বর্ষাকালে দেখা দেয় বিভিন্ন ধরণের ত্বকের সমস্যা।
ত্বক পরিষ্কার রাখুন
বর্ষাকালে ত্বকের অসুখের একটা বিরাট কারণ হল বৃষ্টির নোংরা জল-কাদা গায় লেগে তার থেকে বিভিন্ন সংক্রমণ হতে পারে। যেমন চুলকানি কিংবা ত্বকে লালচে র্যাশ হতে পারে। তবে র্যাশ বেড়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
আবার কখনও খুব গরম কখনও বা ঠান্ডা, প্রকৃতির এই খেয়ালের প্রভাব যেমন মানুষের মনের উপর পরে তেমনই তা ত্বকের উপরেও পরে।
ত্বক বিশেষজ্ঞ কথাকলি চট্টোপাধ্যায় বলেন, "বর্ষাকালে ত্বকের যে সমস্যাটা খুব দেখা যায় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফাঙ্গাল ও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন বা ত্বকে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া থেকে সংক্রমণ। যদিও এই সমস্যাটা এখন বছরের অন্যান্য সময়ও হতে পারে, তবে বর্ষাকালে এর প্রকোপটা অনেক বেশি বেড়ে যায়। এর একটা প্রধান কারণ হল বর্ষাকালে আমাদের জামাকাপড় রোদের অভাবে ভালো করে শুকোয় না। তাই ভেজা জামাকাপড় আমাদের ত্বকে ঘষা লেগে সমস্যা হয়, যেমন র্যাশ বেরোয় বা চুলকানি দেখা দেয়।"
এ ছাড়াও এই সময় ছুলির ও মেচেতার প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়।
ত্বকের একটি বিশেষ ধরণের রোগ হল এগজিমা। বর্ষাকালে বৃষ্টির নোংরা জল লাগলে এগজিমা বেড়ে যায়। পথেঘাটে বৃষ্টির জমা জলের সঙ্গে মিশে যায় কলকারখানার তেল-কালি ও অন্য বর্জ্য এবং এই জল পায়ের ত্বকে বা শরীরের অন্য জায়গাতেও লাগে। এর জেরেই ত্বকে এগজিমার মতো সমস্যাগুলি অনেক বেড়ে যায়।
অ্যালার্জির সমস্যায় যাঁরা ভোগেন এই সময় তাঁদের সসম্যা বেড়ে যায়। এই সময় আমবাতও দেখা যায়। চুল পড়তেও দেখা যায় এই সময়।
তাই কয়েকটি সাধারণ কয়েকটা নিয়ম ও ত্বকের একটু যত্ন নিলেই এই সমস্যা থেকে দূরে থাকা সম্ভব।
কখনও গরম কখনও বা ঠান্ডা, ত্বকে প্রভাব ফেলে
প্রথমত, প্রত্যেকদিন স্নান করতে হবে ও ত্বক পরিষ্কার রাখুন। চেষ্টা করতে হবে যাতে জামাকাপড় যতটা সম্ভব শুকিয়ে পরা যায়। যতটা সম্ভম জামাকাপড় শুকনো করে বা ইস্তিরি করে পরুন। বাইরে থেকে এসে ভালো করে পা ধুয়ে নিতে হবে।
প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে গামবুট জাতীয় জুতো পরে রাস্তায় বেরোতে পারলে সব চেয়ে ভালো। পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের তোয়ালে যেন আলাদা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে যাঁরা সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন তাঁরা ক্রিম বা লোশন জাতীয় সানস্ক্রিন ব্যবহার না করে জেল জাতীয় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
প্রত্যেকদিন ভালো করে স্নান করতে হবে
তবে তা জেল হতে হবে ক্রিম জাতীয় জিনিস ব্যবহার করলে চলবে না। কথাকলি চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমি বলব এই সময় যেহেতু ত্বক খুব একটা শুষ্ক হয় যায় না তাই প্রয়োজন না পড়লে ক্রিম বা লোশন না ব্যবহার করা শ্রেয়। তবে আমার কাছে যাঁরা আসেন পরামর্শ নিতে তাঁদের আমি সরিষার তেল ব্যবহার না করে নারকোল তেল ব্যবহার করার পরামর্শ দিই।"
যথেষ্ট পরিমাণে জল খান।
বর্ষাকালে নোংরা জল লাগার জন্য আমরা অনেকেই প্রচুর সাবান ব্যবহার করে থাকি। অতিরিক্ত সাবানের ব্যবহার কোনও কাজের কথা নয়। যেহেতু সাবান বিভিন্ন রাসায়নিক দিয়ে তৈরি করা হয় তাই ত্বকের পক্ষে অতিরিক্ত সাবান ভালো নয়। এখন বাজারের একটি বিশেষ ধরণের সাবান পাওয়া যায় যাকে 'সিন্ডেট বার' বলা হয়। এই সাবান ত্বকের ক্ষতি করে না। এটি একটি বিশেষ ধরণের সাবান যা আর পাঁচটা সাবানের তুলনায় এতে রাসায়নিকের পরিমাণ প্রায় নেই বললেই চলে তাই এই সাবানটি শিশুদের ত্বকে ও যাঁদের খুব সূক্ষ্ম চামড়া তাঁরা ব্যবহার করতে পারেন।
চুলকানি কিংবা ত্বকে লালচে র্যা শ হতে পারে
বাতাসে আর্দ্রতার চুল তেলচিটে হয়ে যায় তাই নিয়মিত শ্যাম্পু করুন। এছাড়া খাবারদাবারের মধ্যে এমন খাবার খান যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে যা ত্বককে সতেজ রাখতে সাহায্য করে।