বিজ্ঞানকে কী ভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব?

বিজ্ঞান-গবেষণা নিয়ে প্রচারের জন্য শপিং মলগুলিকে ব্যবহার করা সম্ভব?

 |  3-minute read |   20-09-2018
  • Total Shares

শহুরে ভিড় এখন শপিং মলেই বেশি দেখা যায়। যাঁরা শপিং মলে যেতে পছন্দ করেন তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ হল অল্পবয়সী এবং মধ্যবিত্ত মানুষজন। তাই শপিং মলের খোলা জায়েগায় কোনও বিজ্ঞাপনী প্রচার অনুষ্ঠান বা নতুন কোনও ছবির প্রচার অথবা ইনস্টলেশন আর্ট কিংবা বিভিন্ন রকম সামাজিক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার করা হয়।

যে সব গবেষক বিভিন্ন সামাজিক বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন তাঁদের গবেষণার প্রচারের জন্য কী শপিং মলকে ব্যবহার করা সম্ভব?

সম্প্রতি দক্ষিণ দিল্লিতে এমনই একটি ছোট অনুষ্ঠান করা হয়। ভারতের দ্য জর্জ ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ এবং দ্য ওয়েলকাম ট্রাস্ট ডিবিটি ইন্ডিয়া অ্যালায়ান্স যৌথ ভাবে শপিং মলে একটি পথচিত্র প্রদর্শন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন।

অনুষ্ঠানটিতে বেশ কয়েকজন শিল্পী এবং গবেষককেও আমন্ত্রণ করা হয়, যাঁরা কর্মস্থলে মানসিক চাপের বিষয়ে আলোচনা করেন। কর্মস্থলে মানসিক চাপকে এখন মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিভিন্ন কারণে কর্মস্থলে মানসিক চাপ এবং মনোকষ্ট ও যন্ত্রণা সম্বন্ধে অতিথিদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ কথা বলেন। এ ভাবেই অনুষ্ঠানটিকে পরিকল্পনা করা হয়।

এই বিষয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-র তৈরি একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যর ছবি দেখান হয়।

1_092018070124.jpgগবেষণার প্রচারের জন্য কী শপিং মলকে ব্যবহার করা সম্ভব?

জর্জ ইনস্টিটিউটের সদস্য পল্লব মৌলিক এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন। তিনি বলেন, “ভারত সহ অন্যান্য দেশেও কর্মস্থলে মানসিক চাপের বিষয়টিকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না।”

অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে পথনাটিকার আয়োজন করা হয় ও বিষয়টি নিয়ে শিল্পীরাও ছবি আঁকেন। এখানে যাঁরা কেনাকাটা করতে এসেছিলেন তাঁদের চোখে পড়ায় স্বাভাবিক ভাবে তাঁরা একটু কৌতূহলী হয়ে পড়েন। তাঁরা আমন্ত্রিতদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাও বলেন।

শিল্পী, গবেষক এবং সাধারণ মানুষ যাতে বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্যর বিভিন্ন দিক সম্বন্ধে অনুসন্ধান করতে পারে সেটাই ছিল অনুষ্ঠানটির উদ্দেশ্য। ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্সের সিইও শাহিদ জামিল বলেন, "বিজ্ঞান এবং সমাজের মধ্যে যে দূরত্বর সৃষ্টি হয়েছে সেটিকে কিছুটা হলেও মুছে ফেলতে সক্ষম হয়েছে আর্থিং হেলথ। অনুপ্রেরণার জন্য বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সকে ব্যবহার করা হয়েছে এবং শিল্পের সাহায্যে সেটা ব্যক্ত করা হয়েছে।"

সম্প্রতি চণ্ডীগড়েও এমনই একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে পুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি প্রভৃতি বিষয় সচেতনতার জন্য একটি ট্রাকের গায় বিভিন্ন চিত্র আঁকা হয়।

প্রত্যেকদিন জাতীয় এবং রাজ্যের সড়ক দিয়ে লক্ষ লক্ষ ট্রাক যাতায়াত করে এবং সেই ট্রাকের কয়েকটির গায়ে এখন নানা ধরনের ছবি আঁকা থাকে।

ট্রাকের গায় এইধরণের চিত্র অঙ্কন করে খাদ্য নিরাপত্তা এবং খাদ্যের পুষ্টি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে একটা সামাজিক বার্তা দেওয়াটা হল মূল উদ্দেশ্য।

2_092018070204.jpgট্রাকের গায় চিত্র অঙ্কন করে খাদ্য নিরাপত্তা এবং খাদ্যের পুষ্টি সম্পর্কে মানুষকে সামাজিক বার্তা দেওয়াটা হল উদ্দেশ্য

কর্মশালায় যাঁরা ট্রাকের গায় ছবি এঁকেছেন তাঁরা পাঞ্জাবের। গবেষকদের সাহায্যে কী ছবি আঁকা হবে সেটা ঠিক করা হয় তারপর তা শিল্পীদের দেওয়া হয় যাতে তাঁরা ট্রাকের গায় সেগুলো আঁকতে পারেন। 

ইন্ডিয়া অ্যালায়েন্সের পাবলিক এনগেজমেন্ট অফিসার সারা ইকবাল বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের পরিকল্পনাগুলো দিল্লির শিল্পীদের সঙ্গেও ভাগ করে নেব।"

শপিং মল এবং ট্রাকের গায় চিত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান সচেতনতা বাড়াতে একটা ভালো পদক্ষেপ।

আমাদের দেশে যদি বিজ্ঞান মঞ্চ যেমন শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান, রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত কাউন্সিল এবং অন্যান্য বিজ্ঞান সংস্থার এইধরণের আরও উদ্যোগ নিতে হবে। ইতিমধ্যেই আমাদের দেশে এই ধরণের বেশ কয়েকটি অসাধারণ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যেমন বেঙ্গালুরুর দ্য ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সে 'ডায়াল এ সাইন্টিস্ট' অনুষ্ঠান শুরু করেছে। মুম্বাইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চও এমন একটি অনুষ্ঠান শুরু করেছে-'চায়ে অ্যান্ড হোয়াই'।

মিউজিক্যাল সভার ধাঁচে তৈরি করা হয়েছে চেন্নাইয়ের ম্যাথমেটিক্যাল সাইন্সের ‘সাইন্স অ্যাট দা সভা'। তাই আশা করা যায় যে, যে সব গবেষক বিশ্বাস করেন যে বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন তাঁদের কথায় সকলের কাছে ছড়িয়ে পড়বে।

(সৌজন্যে মেল টুডে)

লেখাটি ইংরেজিতে পড়ুন

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

DINESH C SHARMA DINESH C SHARMA @dineshcsharma

Journalist, columnist and author based in New Delhi

Comment