এ রাজ্যে শুটিং পরিকাঠামো নেই বললে কম বলা হবে, পরিকাঠামো টোটাল জিরো
উত্তর কলকাতা শুটিং ক্লাবের সেরা রাইফেলটার বয়স পঞ্চাশের উপরে
- Total Shares
"এটা কি শুটিং রেঞ্জ? নাকি, গরুর খাটাল?" কোনও খেলোয়াড়, কর্মকর্তা বা সমর্থকের মন্তব্য নয়। রাজ্যের এক ক্রীড়ামন্ত্রী এই রাজ্যেরই একটি শুটিং রেঞ্জ পরিদর্শন করতে গিয়ে এই উক্তিটি করেছিলেন। সত্যি সত্যিই, রাজ্যে শুটিংয়ের পরিকাঠামোর অবস্থা খুবই খারাপ। আরও সঠিক লিখতে গেলে লিখতে হয় একেবারেই নেই - 'টোটাল জিরো'।
আপনারা যাঁরা শুটিং সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন তাঁদের জানিয়ে রাখি যে শুটিং মোট চার ধরণের হয়। একটি ১০ মিটার ইনডোরে, একটি ৫০ মিটার রাইফেল শুটিং, একটি ২৫ মিটার পিস্তল শুটিং ও সবশেষে ট্রাপ এন্ড স্কিট শুটিং। এর মধ্যে শেষেরটা বাংলায় হয় না। এ রাজ্যে ৫০ মিটারের জন্য মোট তিনটে শুটিং রেঞ্জ রয়েছে - আসানসোল, উত্তর কলকাতা ও শ্রীরামপুরে। এখানেই জায়গা ছোট করে ২৫ মিটারের শুটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এই তিনটে রেঞ্জের অবস্থা বেশ করুন।
ঠিক কতটা করুন তার একটি উদাহরণ দিলেই বুঝবেন। আমি ১০ বছর বয়স থেকে উত্তর কলকাতা শুটিং ক্লাবের সদস্য। দেশের অন্যতম প্রাচীন শুটিং ক্লাব এটি। বর্তমানে এই ক্লাবে সবচাইতে ভালো যে পিস্তলটি রয়েছে তার বয়স ৫০ বছরের বেশি। তিরিশ বছর আগে আমি যখন খেলা শুরু করি তখন এই পিস্তলটার বয়স ২০ বছরের উপরে। ভেবে দেখুন গোটা বিশ্ব যখন আধুনিক প্রযুক্তির পিস্তলে উঠতি খেলোয়াড় তৈরি করছে তখন আমাকে ২০ বছরের পুরোনো একটি পিস্তল নিয়ে অনুশীলন করতে হচ্ছে।
পরিশেষে আসি ইনডোর রেঞ্জের কথায়। বর্তমানে রাজ্যে দু'দুটি আধুনিক প্রযুক্তি বিশিষ্ট শুটিং রেঞ্জ রয়েছে। একটি আয়ুষীর (পোদ্দার) বাবার হুগলি জেলায় অন্যটি আমার, নিউ টাউনে। কিন্তু এগুলো তো ব্যক্তিগত মালিকানার প্ৰতিষ্ঠান। এর জন্যে আমরা কোনও রকম আর্থিক সাহায্য পাই না সরকারের কাছ থেকে। আমি নিজে স্পোর্টস কাউন্সিলের সদস্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েও কোনও দাবি আদায় করে নিতে পারেনি।
আয়ুষী শুনলাম পঞ্জাব যাচ্ছে। তবে সেটা খুব সম্ভবত ভালো অফার পেয়েছে বলে। আর যাবে নাই বা কেন? মেহুলী কমনওয়েলথে রুপো জিতল। সরকার কিছুই দিল না। অথচ সেই কমনওয়েলথে রুপো জেতার জন্য হরিয়ানা সরকার সেই রাজ্যের একটি শুটারকে দেড় কোটি টাকা পুরস্কার দিয়েছে।
এই ভাবে চললে বাংলা হয়ত প্রতিভা পাবে। কিন্তু কোনও প্রতিভাই আর বাংলার থাকবে না।