লন্ডন অলিম্পিক্সের হারের ক্ষতটা এখনও শুকায়নি, আজ কি নেইমাররা বদলা নিতে পারবে?
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দু’দল মুখোমুখি হয়েছে ৩৮ বার, ব্রাজিল জিতেছে ২২ আর মেক্সিকো ৬ বার
- Total Shares
দুই সুপারস্টার বিদায়ের পর মেক্সিকো মোকাবিলায় নেইমার কী ভাবছেন?
প্রথম দিনের খেলায় হলুদ কার্ড খেয়ে নেইমার নিশ্চই কিছুটা ভয়ে আছেন। ভয়ে ভয়ে থাকলেও তিনি কিন্তু সাংবাদিকদের বলেছেন উল্টো কথা। তিনি বলেছেন, একটুও গা বাঁচিয়ে খেলবেন না। পরের ম্যাচে সাসপেনশনের আশঙ্কাকে পাত্তা দেওয়ার সময় নেই । বাইশ বছরের তরুণের তো এমনই হওয়ার কথা, সে যত বড় সুপারস্টারই হোক, যত বড় দায়িত্বই তার কাঁধে পড়ুক। তবে আজ মঙ্গলবার মেক্সিকো মোকাবেলায় নেইমারের ব্রাজিল কি করছে সে দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব। তবে ভাল খেলার অঙ্গীকার সকলের মাজে।
সবার মধ্যে তো আর নেইমারের মতো হলুদ কার্ডের ‘প্রভাব’ বা প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের কড়া পাহারায় পড়ার আশঙ্কা নেই। আজ কাগজে-কলমে, সামর্থ্যে পিছিয়ে থাকা মেক্সিকো’র বিপক্ষেও আগ্রাসী খেলতে চাইবে ব্রাজিল। এতে কোনও সন্দেহ নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই দু’দল এ যাবৎ মুখোমুখি হয়েছে ৩৮ বার। যার মধ্যে ব্রাজিল জিতেছে ২২ ,মেক্সিকো ৬ বার।
লন্ডন অলিম্পিক ফাইনালে মেক্সিকোর কাছে হেরেছিল ব্রাজিল
আগের ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের পারফর্ম্যান্স হতাশাজনক ছিল না। তবে ৩-১ গোলের জয়ে সেই পারফরম্যান্সে যতটা মন ভরার কথা ছিল, ভরেনি। শুরুতেই আত্মঘাতী গোলে দুশ্চিন্তা, তারপর বিতর্কিত এক পেনাল্টি থেকে নেইমারের গোল! আর যাই হোক, সেলেসাও-সমর্থকেরা যে প্রিয় দলকে এ ভাবে জিততে দেখতে চান না!
অন্যদিকে ক্যামেরুনের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বরং রেফারির ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছে মেক্সিকো। জিওভান্নি দস সান্তোসের দু'টি গোল বাতিল হয়েছে অফসাইড বলে, প্রথমটি যে ঘোরতর ভুল সিদ্ধান্ত, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই বেশির ভাগ ফুটবলবোদ্ধার। শেষ পর্যন্ত পেরালতার একমাত্র গোলে জয়, কিন্তু ব্যবধানটা আরও বড় না হওয়ার দায় মেক্সিকোর নয়, রেফারির। প্লে-অফ খেলে বাছাই পর্ব পার হওয়া মেক্সিকো এমনকি তাদের প্রস্তুতি ম্যাচ দুটিতেও হেরেছে বসনিয়া আর পর্তুগালের কাছে। কিন্তু বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই মেক্সিকো বুঝিয়ে দিয়েছে, সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে তারা প্রস্তুত।
দুই দলই নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ায় আজ আরেকটা জয় দ্বিতীয় রাউন্ড প্রায় নিশ্চিত করে দেবে। শেষ ম্যাচের অপেক্ষায় না থেকে তাই আজই কাজটা সেরে রাখতে চান অস্কার, ‘কোন দল দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে, এই ম্যাচেই হয়তো সেটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। এই ম্যাচটা তাই আমাদের কাছে কঠিন পরীক্ষা।’
আজ নেইমারের উপর অনেকটাই নির্ভর করছে
সেই কঠিন পরীক্ষায় আজ স্কোলারি হয়তো পাবেন না আক্রমণভাগে তাঁর অন্যতম আস্থা হাল্ককে। ঊরুর চোটের কারণে ঠিকঠাক অনুশীলন করতে পারেননি ব্রাজিল স্ট্রাইকার। শেষ পর্যন্ত যদি তিনি খেলেন, একাদশে ঢুকে যেতে পারেন প্রথম ম্যাচে হাল্কের বদলি হিসেবে নামা বার্নার্ড।
ব্রাজিল আর মেক্সিকো এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে তিনবারের সাক্ষাতে প্রতিবারই জিতেছে ব্রাজিল। তবে ব্রাজিলের বিপক্ষে সাম্প্রতিক রেকর্ড অন্য যে কোনও দলের চেয়ে ভালো মেক্সিকোর। দুই দলের সর্বশেষ ১৫ দেখায় সাতবার জয় পেয়েছে মেক্সিকো। এমনকি ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকে নেইমার-অস্কার-হাল্কদের নিয়ে গড়া ব্রাজিলকেই ফাইনালে হারিয়ে সোনা জিতেছিলেন দস সান্তোস-পেরালতারা। সেই ক্ষতটা এখনও শুকায়নি বলেই আজ পুরোনো প্রতিপক্ষকে নিয়ে বাড়তি সতর্ক ব্রাজিল মিডফিল্ডার অস্কার, ‘আমরা সেই ম্যাচের কথা ভুলিনি। মেক্সিকো কত ভালো দল, সেটা ভালোভাবেই জানি। ওরা অনেকবার আমাদের ভুগিয়েছে, আমি নিশ্চিত, এবারও সেটা করতে চাইবে।’ তবে দিন শেষে ভাল খেলাই নিশ্চিত করতে পারে একটি দলের জয়।