পুজোর মুখে ক্ষতি, এখন কী ভাবে ব্যবসা শুরু করবেন ব্যবসায়ীরা?
১৯৫০ সালে তৈরি হয় বাগরি মার্কেট, মধ্যরাতে আগুনে তা পুড়ে খাক
- Total Shares
মাঝরাতে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল বড়বাজারের কাছে ক্যানিং স্ট্রিটের বাগরি মার্কেট। এর ফলে পুজোর আগে ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হল। ছোট-বড় সমস্ত ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে। ১৯৫০ সালে তৈরি হওয়া এই বাজারটি শহরে আর যে কটি পুরোনো বাজার আছে তার মধ্যে অন্যতম। উত্তর, মধ্য এবং শহরের অন্যান্য খুচরো বাজারগুলোতে এখান থেকেই মাল যায়। বাগরি বাজারের ঘটনা শহরের মানুষের মনে আবার নন্দরাম বাজারের অগ্নিকাণ্ডের স্মৃতি তাজা করে দিয়ে গেল।
ছোট ব্যবসায়ীদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। শহরের ব্যবসায়ীদের অনুমান, ওই বাজার পুড়ে যাওয়ায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বড়বাজার এলাকায় যতগুলো পাইকারি বাজার আছে তার মধ্যে অন্যতম হল এই বাগরি বাজার বা প্রচলিত ভাবে যাকে বাগরি মার্কেট বলে লোকে।
কী করে এই ঋণ চোকাবে বাগরির ব্যবসায়ীরা?
এখনও বহু জায়গায় আগুন জ্বলছে। বড়-ছোট মিলিয়ে অসংখ্য দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকানিরা অবশিষ্ট জিনিসপত্র উদ্ধারে এখনও ব্যস্ত হয়ে রয়েছে। বাজারের চারদিক এখন একটা ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে। পুজোর আগে ব্যবসায়ীদের বিশেষ করে খুচরো ব্যবসায়ীদের এ এক অপূরণীয় ক্ষতি।
প্লাস্টিক, ওষুধ, সুগন্ধী, প্রসাধনী, গহনা, কাগজপত্র প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস থেকে খাবারদাবার- সবকিছু ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
প্যারাফিন ব্যবসায়ী অনিল বিশ্বাস বলেন, "আমার দোকানে প্যারাফিন থাকে তাই যে আগুনে গুদামের বেশিরভাগ মাল নষ্ট হয়ে গেছে। তবে দোকান ও গুদাম মিলিয়ে যেটুকু প্যারাফিন উদ্ধার করা গেছে সেগুলো কোনও মোমবাতি তৈরির কারখানায় কম দামে বিক্রি করে দেব, এমনটাই ভেবেছি। অন্তত সেই টাকা দিয়ে কিছুটা হলেও ধার শোধ করতে পারব।"
ছোট-বড় সমস্ত ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত পড়েছে
এখনও এমন অনেক দোকান আছে যেখান থেকে এখনও লক্ষ লক্ষ টাকার মাল উদ্ধার করা যায়নি।
স্টেশনারি ব্যবসায়ী গণেশ জোশী বলেন, “ভগবান কী নিষ্ঠুর। সামনে দুর্গাপুজো তারপর কালীপুজো আর তার আগেই এতো বড় ক্ষতি হয়ে গেল। ভাবতেই পারছি না সারা বছর সংসার কী ভাবে চালাব। ব্যবসাই বা আবার কী ভাবে দাঁড়াবে?"
পুজোর মরসুম শুরু হয়ে গেছে তাই ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরাই চড়া সুদে ঋণ নিয়ে মাল তুলেছেন। বিভিন্ন রসায়ন এবং এসেনশিয়াল অয়েলের ব্যবসায়ী প্রকাশ যাদব বলেন, "চিন্তায় আমার আর মাথার ঠিক নেই। এই ঋণ কী ভাবে চোকাব।"
এখনও লক্ষ লক্ষ টাকার মাল উদ্ধার করা যায়নি
বাগরি বাজারে অসংখ্য ওধুষের পাইকারি ডোনাকে যাচ্ছে যেখান থেকে শহরের বহু ওষুধের দোকানে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। অনেকেই মনে করছেন আগামী বেশ কিছুদিন প্রয়োজনীয় বহু ওষুধ শহরের অনেক দোকানে নাও পাওয়া যেতে পারে।
কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
তাই যতদিন না আবার বাজার চালু হচ্ছে ওষুধের দোকানে স্টক শেষ হয়ে গেলে তা আবার কবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে বহু ওষুধ দোকানিদের। শহরের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা মনে করছে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এই বাজারটি পরিকল্পিত ভাবে গড়ে তুলতে পাশাপাশি পুজোর আগে এতবড় ক্ষত কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে।