প্লাস্টিকের বিকল্প পাট: কিন্তু পাটশিল্পের প্রসারে কেন্দ্র বা রাজ্যের কোনও উদ্যোগ নেই

পাটশিল্পের অগ্রগ্রতি না হলে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ কোনও দিনও সম্ভব নয়

 |  2-minute read |   05-06-2018
  • Total Shares

২০১৮ সালে ঘনঘটা করে আন্তর্জাতিক পরিবেশ দিবস পালিত হবে ভারতবর্ষে, অংশগ্রহণ করবে বিভিন্ন দেশ। ২০১৮ সালের পরিবেশ বার্তা 'প্লাস্টিক দূষণ হোক পরাভূত'।

১৯৯৯ শাল থেকেই প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন পরিবর্তিত হয়েছে কিন্তু আইনের কার্যকারীতা প্রায় শূন্যমার্গে। পৌর এলাকা সহ দিল্লি রোডের দু'পাশই প্লাস্টিকের আবর্জনায় ভরে গেছে। যদিও, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিয়ম অনুযায়ী দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও স্থানীয় কতৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ বা পঞ্চায়েত কিংবা দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শুধুই বছরে একবার করে সচেতনতা শিবির করে নিজেদের দায়িত্ব সেরেছে।

রাজ্য সরকার রাজ্যের ৩৯টি পুর সংস্থাকে সবুজ শহর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিন্তু সেই উদ্যোগের স্বার্থে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ ব্রাত্য থেকে গিয়েছে। এই ব্যাপার নিয়ে পরিবেশ অ্যাকাডেমি চন্দননগর প্রশাসনিক স্তরে চিঠি দিয়েছে যাতে সবুজ শহর পরিকল্পনাতে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ অগ্রাধিকার পায়। পরিবেশ দপ্তর বিষয়টি পর্ষদের কাঁধে দায়িত্ব দিয়ে নিস্তার পেতে চাইছে।

body1_060518121029.jpgরাজ্য সরকার ৩৯টি পৌর সংস্থাকে সবুজ শহর করার পরিকল্পনা করলেও প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ ব্রাত্য থেকে গিয়েছে

প্লাস্টিকের বিকল্প জুট। কিন্তু জুট শিল্পের প্রসারে কেন্দ্র তথা রাজ্যের প্রায় কোনও উদ্যোগ নেই।

২০১৫ সাল থেকে চন্দননগরের আইন সহায়তা কেন্দ্র লাগাতার ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করছে পাট শিল্পের প্রসার না ঘটলে প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। প্লাস্টিক পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর কিন্তু পাট শিল্প পরিবেশ বান্ধব। কয়েক বছর আগে প্যারিসে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ জুট শিল্পের প্রসার ঘটানোর জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে উদ্যোগ গ্রহণ করে।

body_060518121220.jpgজুট শিল্পের প্রসারে কেন্দ্র তথা রাজ্যের প্রায় কোনও উদ্যোগ নেই

উল্টোদিকে, ভারতবর্ষ কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করে না এবং আইন সহায়তা কেন্দ্র ও পরিবেশ অ্যাকাডেমি সরাসরি রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে প্লাষ্টিক নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্বব্যাপী পাটশিল্পের প্রসারের জন্য আবেদন করে। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দেয়, যেহেতু পাটশিল্পের প্রসারের বিষয়টি সরাসরি রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানানো হয়েছে, তাই কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আন্তর্জাতিক স্তরে উত্থাপন করবে না।

দিন যতই এগোচ্ছে খাদ্য দ্রব্য থেকে সর্বত্রই প্লাস্টিকের দৌরাত্ম্য বাড়ছে আর পাটের ব্যাগের ব্যবহার ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে দূষণও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আবার পাটকল বা চটকলের সংখ্যা প্রতিদিনই কমছে।

বর্তমানে, পাটের উপর নির্ভরশীল প্রায় এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান আক্রান্ত। রাষ্ট্রপুঞ্জ প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও, প্লাস্টিকের বিকল্প পাট শিল্পের অগ্রগ্রতি না হলে কিন্তু প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণ কোনও দিনও সম্ভব নয়।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

BISWAJIT MUKERJEE BISWAJIT MUKERJEE

The writer is the former chief law officer, Environment Department, West Bengal and West Bengal Pollution Control Board. Indira Gandhi Paryavaran Puroskar awardee.

Comment