কোথায় পিছিয়ে পড়ছে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো?
রাজ্যের ছেলেমেয়েরা কি আদৌ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের জন্য রাজ্যে থাকছে?
- Total Shares
সম্প্রতি মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি মূল্যায়ন করে যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট।পশ্চিমবঙ্গের কোন বিশ্ববিদ্যালয় অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়কে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেল, সেটা আলোচ্য বিষয়বস্তু হতে পারে না। এ রাজ্যে এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় থাকা সত্ত্বেও (শুধুমাত্র উচ্চশিক্ষা দফতরের অধীনেই রয়েছে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়) যে নামগুলো চিরকালই উপরের দিকে ছিল, সেগুলোই উপরে থেকে যাচ্ছে, এবং কলকাতা বাদে অন্যান্য জেলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন এই তালিকায় স্থান পাচ্ছে না, সেই দিকে নজর দেওয়া দরকার।
দেখা যাচ্ছে, দেশের প্রথম ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বেশ উপরের দিকে রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (ষষ্ঠ), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় (চতুর্দশ)। শেষের দিকে রয়েছে কল্যাণী আর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও আছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ও বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, আর বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয় উচ্চশিক্ষা দফতরের আওতায় নয়।
মূল্যায়নের পরিমাপক বেশ অনেকগুলো। স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে পড়াশোনার মান, পরিকাঠামো ছাড়াও গবেষণা, পেটেণ্ট, মহিলা পড়ুয়ার সংখ্যা, ভিন রাজ্যের পড়ুয়ার সংখ্যা প্রভৃতি আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোও গণ্য করেছেন নিরীক্ষকরা।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
আশ্চর্যের বিষয়, ভিন রাজ্যের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা শোচনীয়। সে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ই হোক বা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। এই তথ্যের জন্য অবশ্য আমাদের এই কেন্দ্রীয় সমীক্ষার কোনও প্রয়োজন ছিল না। আমরা যারা কলকাতায় স্নাতক বা স্নাতকোত্তর নিয়ে পড়াশোনা করেছি, আমরা নিজেরাই জানি সহপাঠী হিসেবে ভিনরাজ্যে পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল হাতে গোনা এবং, সেই চিত্রটা কিন্তু কোথাও বদলাচ্ছে না।
এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। নতুন ধরনের কোর্সের অভাব বা পুরোনো পাঠ্যক্রমের উত্তর দায় চাপিয়ে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না। দেখতে হবে, রাজ্যের ছেলেমেয়েরাও কি আদৌ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের জন্য রাজ্যে থাকছে? স্নাতক শেষ করেই হয়তো সবাই চাকরি খুঁজবে না। কিন্তু চাকরির সুযোগ যেখানে আছে, সেখানেই যাওয়া সমীচীন। পশ্চিমবঙ্গে পড়াশোনা করে চাকরির জন্য অন্য রাজ্যে গিয়ে প্রতিযোগিতার মুখে পড়ার চেয়ে সহজ পড়াশোনার জন্যই অন্য রাজ্যে যাওয়া। তাই নয় কি?
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলা থেকে পড়ুয়ারা আসছে কলকাতার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে, যদিও এখন কিন্তু জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। কারণ একটাই, বিকাশ সর্বাঙ্গীন নয়। কলকাতার কোনও পড়ুয়ার কাছে যেখানে জামিয়া মিলিয়া লক্ষ্য, উত্তরবঙ্গের কোনও পড়ুয়া তেমনি চাইছে গৌড়বঙ্গ নয়, কলকাতা বা যাদবপুরে পড়াশোনা করতে।