#মিটু: কাশ্মীরেও সাড়া ফেলেছে এই আন্দোলন
আসুন, মহিলারা যে রক্তমাংসে গড়া তা প্রমান করবার সময় এসেছে
- Total Shares
কাশ্মীরে বরাবরই পুরুষরা মহিলাদের উপর কতৃত্ব ফলিয়ে এসেছেন। আর, এই ধরণের মানসিকতা জন্য এ রাজ্যে মহিলারা নির্যাতিত হওয়ার পরও তাদের কণ্ঠরোধ করা হয়ে থাকে। বহু যুগ ধরেই মহিলারা প্রতিবাদ করতে পারেননি এবং এর জন্যে তাঁদের অনেক মূল্যও দিতে হয়েছে। তাই, আজ, তাঁরা এমন একটি মঞ্চের খোঁজ করছেন যেখানে দাঁড়িয়ে তাঁরা তাঁদের নির্যাতনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনতে পারবেন।
#মিটু আন্দোলন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হলেও তা ইতিমধ্যেই ভারতে প্রবেশ করে ফেলেছে। অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত ২০০৮ সালে বর্ষীয়ান অভিনেতা নানা পাটেকারের হাতে নির্যাতিত হওয়ার কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে এই আন্দোলন আসমুদ্রহিমাচল জুড়ে অন্য মাত্রা পেয়েছে।
গোটা বিশ্বজুড়েই হলিউড পরিচালক থেকে শুরু করে কাগজের সম্পাদক, সাংবাদিক, অভিনেতা, রাজনৈতিক নেতা এমনকি শিক্ষকদেরও মুখুশ খুলে দিয়েছে। কাশ্মীরেও এই বিষয়টির অন্যথা হয়নি। মহিলারা বিভিন্ন জগতের সঙ্গে যুক্ত পুরুষদের বিরুদ্ধে যৌন্য নির্যাতন ও যৌন্য হেনস্থার অভিযোগ করেছেন।
কাশ্মীর সুশীল সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মিটু আন্দোলনের ভূয়সী প্রশংসা করেছে [সৌজন্যে: টুইটার]
তাঁরা হোয়াটস অ্যাপের কথোপকথন ও টেক্সট মেসেজের স্ক্রিনশট প্রকাশ্যে এনেছেন। এদের মধ্যে কিছু দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, কিছু যৌন্য হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে আবার কিছু যৌন্য নিগ্রহেরও অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্তদের অনেকেই অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেছেন। আবার, অনেকেই কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হননি।
কাশ্মীর ওমেন্স কালেকটিভ বলে ফেসবুকে বেশ কয়েকজন উল্লেখযোগ্য অভিযুক্তের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা রাজনৈতিক বিশ্লেষক গওহর গিলানি। তিনি নাকি অনেকেকেই যৌন্য হেনস্তা করেছেন। পিডিপি নেতা জাভাইড ত্রলীর বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন্য নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। #মিটু আন্দোলনের জেরে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
অনেকে অবশ্য এই আন্দোলনের বিরোধিতা করে বলেছেন যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই আন্দোলনকে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই এই আন্দোলনের প্রশংসা করেছেন। এর কারণ 'দাগি' অভিযুক্তদের মনে ভয়ের সঞ্চার করতে পেরেছে এই আন্দোলন।
এই আন্দোলনে শুধু আমাদের নৈতিক সমর্থন থাকলে চলবে না। দেখতে হবে অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে তার যেন উপযুক্ত সাজা হয়। এই পরিস্থিতিতেও মহিলারা যখন সাহস করে মুখ খুলতে পারছেন তখন সুশীল সমাজের দায়িত্ব এই মহিলারা যেন বিচার পান।
আসুন, মহিলারও যে রক্তমাংসে গড়া মানুষ তা প্রমান করার সুযোগ এবার আমাদের সামনে এসেছে।