রো-রো পরিষেবা: বাঁচবে সেতু, কমবে দূষণ ও যানজট, হ্রাস পাবে খোলা বাজারে পণ্যের মূল্য

১৮৩৩ সালে রেলগাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্যে রো-রো চালু হয় স্কটল্যান্ডে, ভারতে রয়েছে গুজরাটে

 |  2-minute read |   11-09-2018
  • Total Shares

মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর শহরের বেশ কয়েকটি উড়ালপুরে ২০ বা তার বেশি চাকা বিশিষ্ট ট্রাক ও ট্রেলার চলাচল নিষিদ্ধ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তাই এবার বিকল্প পথ খোঁজার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের পরিবহণ দপ্তর। সম্প্রতি এক বৈঠকে পরিবহণ দফতরের কর্তাদের একাংশ মত দিয়েছেন যে শহরের ব্যস্ত রাস্তা ও সেতু এড়িয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে শত শত ভারী ট্রাক-ট্রেলার পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ধরণের বার্জ পরিষেবা চালু করা হোক। এই বার্জগুলোর পোশাকি নাম ‘রোল অন-রোল অফ’ বা সংক্ষেপে রো-রো।

১৮৩৩ সালে আস্ত একটি রেলগাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্যে এই রো-রো পরিষেবার সূচনা হয় স্কটল্যান্ডে। রো-রো পরিষেবার মাধ্যমে ট্রেলার, ট্রাক, বাস, গাড়ির মতো চাকাওয়ালা যান বাহন বার্জে চড়িয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতে এই পরিষেবা রয়েছে গুজরাটে। ওই রাজ্যের ঘোগ ও দহেজ বন্দরের মধ্যে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রত্যেক বার কমবেশি ১০০টি করে গাড়ি এবং ২৫০ জন করে যাত্রী বহন করা হয়।

এই পরিষেবা পশ্চিমবঙ্গে চালু করার যে চিন্তাভানা সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে তা নিয়ে একটু বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে যে এই ধরণের পরিষেবা কতটা যুক্তিসঙ্গত।

body_091118051718.jpgগুজরাটে চালু হয়েছে রো রো পরিষেবা [ছবি: পিটিআই]

কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গের ফরাক্কা পর্যন্ত গঙ্গার নদীপথে মোট আটটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু রয়েছে। এই সেতুগুলো বা তার লাগোয়া রাস্তাতে প্রতিদিনই গাড়ির চাপ বেড়ে চলেছে। ফলে, সেতুগুলির উপর চাপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে।

তাই পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা মনে করছেন যে বড় ট্রাক ও ট্রেলার পারাপারের উপযোগী রো-রো পরিষেবা ব্যবহার করে সেতু এবং শহর ও শহরাঞ্চলের রাস্তার উপর চাপ কমাতে হবে। কর্তাদের মতে, রো-রো পরিষেবা চালু হলে কলকাতায় যানজট কমার সঙ্গে সঙ্গে বন্দরের পণ্য পরিবহণ বহুগুণ বাড়তে পারে। স্বাস্থ্যহানি থেকে রক্ষা পেতে পারে বড় ও মাঝারি সেতুগুলি। কমবে নতুন করে বড় সেতু তৈরির প্রয়োজনও।পরিবহণ দপ্তর এই নিয়ে সবিস্তার পরিকল্পনাও তৈরি করছে।

রো-রো পরিষেবার মাধ্যমে যদি পণ্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পাঠানো হয় তাহলে পরিকাঠামোগত খরচ অনেকটাই কমবে। এর ফলে, খোলা বাজারে পণ্যের দামও হ্রাস পাবে। সাধারণত, সড়কপথে কিলোমিটার-পিছু প্রতি টন পণ্য পরিবহণে তিন টাকা ২০ পয়সা করে খরচ পড়ে। জলপথে সেই খরচ নেমে দাঁড়াবে মাত্র ৪০-৫০ পয়সা।

আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা আদায় করে নেওয়া যাবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। কলকাতা বা রাজ্যের বেশ কয়েকটি বড় শহরে এখন দূষণ ও যানজট অন্যতম প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রকল্প রূপায়ণ হলে এই সমস্যা থেকে যে অনেকাংশেই মুক্তি পাওয়া যাবে তা বলাইবাহুল্য।

জেটি পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশ্বব্যাঙ্ক এক হাজার কোটি টাকা দিতে রাজি। সরকার চাইছে সেই টাকা ব্যয় করে ২০২০ সালের মধ্যে এই প্রকল্প রূপায়ণ করতে।

সরকারের উচিৎ সময়ের মধ্যেই যেন এই প্রকল্প রূপায়ণ করা যায়। কারণ এই প্রকল্প যত দ্রুত রূপায়ণ করা সম্ভব ততই মঙ্গল।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

ARPIT BASU ARPIT BASU @virusfound007

Arpit Basu is the Special Correspondent with the India Today Group’s fact check team. With more than one-and-a-half decade's experience in print and digital media, he has reported on aviation, transport, crime, civic and human interests issues. His sting operation on how precious Aviation Turbine Fuel, meant for Kolkata airport, was pilfered and sold in local market as ‘white kerosene’ received widespread acclaim. Arpit has worked with reputed media houses like The Times of India and Hindustan Times and had received letter of appreciation for reporting during the Phalin cyclone in Odisha in 2013.

Comment