ভেঙে পড়ল মাঝেরহাট সেতু, তদন্তের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর

সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে পূর্ত দপ্তরের দিকে আঙুল রাজ্যপালের

 |  3-minute read |   04-09-2018
  • Total Shares

২০১৬ সালের ৩১ মার্চের স্মৃতি ফিরে এল ৪ অগস্ট বিকেলে। ভেঙে পড়ল মাঝেরহাট সেতু। উত্তর কলকাতার নির্মীয়মান বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল, আহত হয়েছিলেন অন্তত ৮০ জন। তবে ৪০ থেকে ৬০ বছরের বছরের পুরোনো মাঝেরহাট সেতু ভেঙে মঙ্গলবার এক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে।

body1_090418092421.jpgভেঙে পড়েছে মাঝেরহাট সেতু (সুবীর হালদার)

সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবকেই দায়ী করছেন অনেকে। এই সেতু যে বেহাল, তা বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল। এই সেতু দিয়ে শুধু গাড়ি চলাচলই করে না, অনেকে হেঁটে এই সেতু পার হন। সেতুর নীচে রেল লাইন থাকায় ট্রেন চলাচলের সময় সেতু কাঁপত। সব মিলিয়ে জীর্ণ সেতুটি ক্রমেই জীর্ণতর হচ্ছিল। প্রশ্ন উঠেছে সেতু ভাঙার দায় কার।

শহরে পুরোনো সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনা এই প্রথম। যে সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্ন উঠেছে, এখন সেই সেতু ভেঙে পড়ায় আঙুল উঠছে রাজ্যের পূর্ত দপ্তর ও কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির দিকে। সেতুর কাছেই মাঝেরহাট রেলস্টেশন।

body2_090418092517.jpgভেঙে পড়েছে মাঝেরহাট সেতু (নিজস্ব চিত্র)

মঙ্গলবার বিকেলে সেতুটি ভেঙে পড়ার পরেই দাবানলের মতো মৃত্যুর আশঙ্কার কথা ছড়িয়ে পড়ে, কারণ ওই অংশে ছিল একটি যাত্রীসমেত মিনিবাস (আন্দাজ ৭০ জন যাত্রী ছিলেন) এবং একাধিক গাড়ি, বাইক, বেশ কয়েকজন পথচারী। সেতু ভেঙে পড়ার খবর শুনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন উত্তরবঙ্গ সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন সেতুটি হঠাৎই বসে যেতে শুরু করে এবং ভেঙে পড়ে। সেতুটির বিভিন্ন অংশে ফাটলও লক্ষ্য করা গেছে ভেঙে পড়ার পরে।

রাত পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, সেতুর নীচে কয়েক জন মতো আটকে থাকতে পারেন। ওই অংশে অস্থায়ী অফিস ও ঝুপড়ি করে ছিলেন কয়েকজন মেট্রোরেলকর্মী। বৃষ্টির জন্য তাঁরা সেখানে বিশ্রাম করছিলেন বলে ধারণা অনেকের। তবে তাঁদের মধ্যে চারজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছে সন্ধ্যারাতের মধ্যেই।

body3_090418092553.jpgভেঙে পড়েছে মাঝেরহাট সেতু (ডেইলিও বাংলা)

মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে থাকায় এবং বৃষ্টির মধ্যে কোনও ভাবেই উড়ানে শহরে ফেরার উপায় না থাকায় তিনি মন্ত্রীদের নির্দেশ দেন ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারের তদারকি করতে। ঘটনাস্থলে চলে যান রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।

আলোর অভাবে প্রথম দিকে উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছিল, তবে পরে অত্যাধুনিক আলোর ব্যবস্থা করা হয়। তোলার চেষ্টা করা হয় সেতুর ভাঙা অংশ। ড্রিল করে উদ্ধারকারীরা সেতুর নীচে নেমে দেখতে শুরু করেন। সন্ধ্যারাত পর্যন্ত জীবিত মা মৃত কাউকেই উদ্ধার করা হয়নি।

body5_090418092656.jpgভেঙে পড়েছে মাঝেরহাট সেতু (ডেইলিও)

রাজ্যপাল মনে করেন এই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের উচিত ছিল, তিনি মনে করেন এই ঘটনার তদন্ত হওয়া উচিৎ। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটি এই ঘটনার তদন্ত করবেন। ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে।

সেনা ও নৌসেনা বাহিনীর জওয়ান ও আধিকারিকরাও ঘটনার অল্পক্ষণের মধ্যেই হাজির হযে যান। পরে আসে পুলিশ ও অসামরিক প্রতিরক্ষা দপ্তরের কর্মীরা। ন’টি আর্থমুভারের সাহায্যে সেতুর ভাঙা অংশ সরানোর চেষ্টা হয়। মাস্টলাইটের ব্যবস্থাও করা হয়।

রাতভর উদ্ধারকাজ চলে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment