অন্তত কলকাতার প্রতি দায়বদ্ধতা দেখিয়ে পদত্যাগ করা উচিৎ দুর্নীতিপরায়ণ মেয়রের
কর্মদক্ষতা হারিয়েছেন পুরকর্মীরা, তাঁদের পরিচালন করতে পারেন না দুর্নীতি পরায়ণ মেয়র
- Total Shares
মাত্র কিছুক্ষণের জন্য এক পশলা বৃষ্টি, আর তাতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ল কলকাতার কয়েকটি অঞ্চল। একটা তিনশো বছরের বেশি পুরোনো শহরে বর্ষার পর জলমগ্ন হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, তাই বলে এক পশলা বৃষ্টিতেও? সব চেয়ে বড় বিষয় সেই জল নামতে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করে থাকতে হল এলাকাবাসীদের। কিছুদিন আগেই এমন ঘটনার সাক্ষী থেকেছে কলকাতা।
এই সমস্যার শিকড় তো সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের লাল রঙের বাড়িতে, যার পোশাকি নাম কলকাতা পুরসভার সদরদপ্তর। বলতে কোনও বাধা নেই যে নিজেদের কর্মদক্ষতা হারিয়েছেন পুর ভবনের কর্মীরা। সব কিছুতেই একটা গা ছাড়া মনোভাব। অফিসে এসে কোনও রকমে সময় কাটিয়ে বাড়ি ফিরে যাও এবং তারপর মাসের শেষে বেতনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাক -এই ফর্মুলাতেই কাজ করে চলেছেন পুরকর্মীরা। তাঁদের বলার কেউ নেই। অধিকাংশই তো শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকা কর্মী।
ব্যক্তিগত ভাবে আমি কাউকে আক্রমণ করা পছন্দ করি না। এক্ষেত্রেও আমি গোটা পুরসভাকেই দোষ দেব। আর সেই পুরসভার মেয়র হিসেবে শোভন চট্টোপাধ্যায় কী ভাবে নিজের ভূমিকা অস্বীকার করতে পারেন?
নিজেদের কর্মদক্ষতা হারিয়েছেন পুর ভবনের কর্মীরা
শহরের মহানাগরিক হওয়ার যোগ্যতা তাঁর নেই, কোনও দিনও ছিল না। অথচ তিনিই শহরের মেয়র হয়ে গেলেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর দল আবার সারদা থেকে নারদ - সব ধরণের কেলেঙ্কারিতে ফেঁসে রয়েছে। নারদ কাণ্ডে খোদ মেয়রকে স্ট্রিং অপরেশনে ঘুষের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। একজন মানুষ নিজেই যদি দুর্নীতি পরায়ণ হন তাহলে তিনি আর অন্যদের কোন মুখে কী বলবেন? তাই তিনি কিছুই বলতে পারেন না।
বর্তমানে শোভন চট্টোপাধ্যায় আবার ব্যক্তিগত সমস্যায় জর্জরিত। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই তাঁর পরিবার সংক্রান্ত নানান ধরণের খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মনোসংযোগ করা অতীব কঠিন।
বিষয়টা কী দাঁড়াল তাহলে? একজন অযোগ্য ব্যক্তি, যিনি ব্যক্তিগত সমস্যায় জর্জরিত তিনিই এখন একাধিক দপ্তরের মন্ত্রী এবং একই সঙ্গে শহরের মহানাগরিক। ফলে, শহরের বা শহরের পুরসভার যা ভবিতব্য তাই হচ্ছে।
আমি সর্বদাই মনে করি যে কোনও শহর একটি দেশের মুখ। অন্য ভাবে বলতে গেলে, একটি দেশ গোটা বিশ্বে কী ভাবে সমাদৃত হবে তা নির্ভর করছে দেশটির শহরগুলোর পরিস্থিতির উপর। ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর কলকাতা আর এই শহর ও শহরের পুরসভার হালহকিকত দেখে সত্যিই আমার কষ্ট হয়।
নিজের জন্য না হোক, অন্তত আমার আপনার প্রিয় কলকাতার প্রতি দায়বদ্ধতা দেখিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় এ বার পদত্যাগ করুন।