একটি যুগের অবসান: ইস্টবেঙ্গল ছাড়লো ইউবি গ্রুপ
দেখা যাক, কত তাড়াতাড়ি কলকাতা ফুটবলে নতুন বিজয় মালিয়ার আবির্ভাব ঘটে
- Total Shares
একটি যুগের অবসান।
ইউবি গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করবার সিদ্ধান্ত নিল ইস্টবেঙ্গল। সোমবার সন্ধ্যাবেলা ক্লাবের তরফ থেকে সরকারি ভাবে এই খবর ঘোষণা করা হয়েছে। তার মানে ইস্টবেঙ্গল আর কিংফিশার ইস্টবেঙ্গল নয়। আবার নতুন করে টাইটেল স্পনসর খুঁজতে হবে ক্লাব কর্মকর্তাদের।
এর আগে, অনেকটা একই কারণে মোহনবাগানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল ইউবি গ্রুপ। এবার ইস্টবেঙ্গল থেকে ইউবির সরে যাওয়া মানে বিজয় মালিয়ার অস্তিত্ব পাকাপাকি ভাবে কলকাতা ফুটবল থেকে মুছে গেল।
সেই ১৯৯৮ সালে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় ইউবি গ্রুপ। যদিও সরকারি ভাবে দুটি ক্লাবের টাইটেল স্পনসর হয়ে ইউবি গ্রুপের দুটি ভিন্ন ব্র্যান্ড - মোহনবাগানের টাইটেল স্পনসর হয় ম্যাকডোয়েল আর ইস্টবেঙ্গলের কিংফিশার। দু'টি ভিন্ন কোম্পানিও প্রবর্তন করা হয়েছিল সেই সময়। বলতে গেলে নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে কলকাতা ফুটবলে টাকা আসে মূলত এই স্পন্সরশিপের জোরেই। প্রকৃত অর্থেই কলকাতা ফুটবল কর্পোরেট হয়ে ওঠে। এর আগে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত উদ্যোগে ডোনেশন জোগাড় করে ক্লাব চালাতেন কর্মকর্তারা।
ইউবি গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হল ইস্টবেঙ্গলের
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের মূল কারণ ইউবির স্পনসরশিপের অঙ্ক কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্পনসরশিপ বাবদ বছরে প্রায় সাড়ে তিন কোটি ইস্টবেঙ্গলকে দিত ইউবি গ্রুপ। কিন্তু এ বছর সংস্থার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় যে তারা ইস্টবেঙ্গলকে দেড় কোটি টাকার বেশি দিতে অপারগ। সোমবার এক বৈঠকের পর ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেন, ইউবির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে আরও বেশি দামের স্পসনরের খোঁজ করবেন তাঁরা।
বর্তমানে ইউবি গ্রুপের মোটা শেয়ার কিনেছে হাইনেকেন নামক বিয়ার সংস্থা। বিদেশের ফুটবলের পিছনে মোটা টাকা খরচ করে এই সংস্থাটি। তাই ইস্টবেঙ্গল কর্তারা আশা করেছিলেন এই সংস্থার তরফ থেকে স্পনসরশিপ অর্থ বাড়ান হবে। কিন্তু শেষ অবধি তা না হওয়ায় এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা।
বিজয় মালিয়ার অস্তিত্ব পাকাপাকি ভাবে কলকাতা ফুটবল থেকে মুছে গেল
ক্লাবের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে খুব দ্রুত নতুন স্পনসর খুঁজে বের করে নতুন কোম্পানি গঠন করে ফেলবার বিষয় তাঁরা আশাবাদী।
মোহনবাগানের সঙ্গে ২০১৬ সালে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল ইউবি গ্রুপ। এখনও অবধি নতুন টাইটেল স্পনসর খুঁজে পায়নি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত মোহনবাগান। এখনও কয়েকজন ফুটবলারের বকেয়া বাকি। নতুন মরসুমের জন্য যে দল গঠনের তালিকা তৈরি করা হয়েছে সেই তালিকার অনেক ফুটবলারকে এখনও অগ্রিম দিয়ে সই করতে পারেননি মোহনবাগান কর্তারা। ভয়, ইউবির বিদায়ের পর ইস্টবেঙ্গলেরও একই পরিণতি হবে না তো?
বিশ বছর বাদে ফের আশা-আশঙ্কায় দুলছে কলকাতা ফুটবল। দেখা যাক, কত দ্রুত কলকাতা ফুটবল নতুন একজন বিজয় মালিয়ার সন্ধান পায়।