সিরিজ হারলেও আগামী বিশ্বকাপে অন্যতম ফেভারিট হিসেবে শুরু করবে ভারত
আগামী বিশ্বকাপে আমার সেরা তিন বাজি - ভারত ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান
- Total Shares
আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে চলা ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে এটাই ইংল্যান্ডে বিরাট কোহলিদের শেষ একদিনের ম্যাচ ছিল। এই মুহূর্তে বিশ্বক্রিকেটের শক্তিশালী দলগুলোর মধ্যে অন্যতম ভারত। তাই ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের আবহাওয়ায় ভারত কতদূর অগ্রসর হতে পারবে তা নিয়ে কাটাছেঁড়া, ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের জন্য মঙ্গলবারের ম্যাচটা ছিল আদর্শ। কিন্তু হতাশ করল ভারত। তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচে হেরে সিরিজ তো হাতছাড়া হলই , সঙ্গে বিশ্বকাপের জন্য বিরাটরা ঠিক কতটা তৈরি সে বিষয় বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জন্ম হল।
আমার মতে কেএল রাহুলকে না খেলাবার খেসারত দিতে হল ভারতকে। অনবদ্য ব্যাটসম্যান, ছন্দেও রয়েছেন - এমন একজন ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে বসিয়ে রেখে প্রথম একাদশ তৈরি করার পিছনে যুক্তিটা ঠিক কী তা বোধগম্য হল না। রোহিতের সঙ্গে
রাহুলকে ওপেনার হিসেবে দলে নেওয়া উচিত ছিল। শিখর ধাওয়ান ফর্মে নেই। শেষ বেশ কয়েকটি ম্যাচে রান পাননি। কিন্তু তাঁকে পরের পর সুযোগ দেওয়ায় হচ্ছে। এর ফলে ভারত শুরুটা ভালো করতে পারছে না। বাড়তি চাপের মধ্যে খেলতে হচ্ছে রোহিতকেও।
দলের মিডল অর্ডার এখনও স্টেবল নয়। রায়না প্রত্যাবর্তন করছেন। তাঁর উপর বাড়তি চাপ রয়েছে। উপরের দিকে দ্রুত উইকেট পড়ে গেলে চার বা পাঁচ নম্বরকে আঙ্করের ভূমিকা পালন করতে হয়। কিন্তু ভারতীয় দলের চার আর পাঁচ নম্বর অনেকদিন ধরেই রানের মধ্যে নেই। যার প্রভাব পড়ছে ছয় নম্বরে নাম মহেন্দ্র সিং ধোনির উপরে। যোগ্য সঙ্গীর অভাবে ধোনিও নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না।
যোগ্য সঙ্গীর অভাবে ধোনিও নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না
অনেকেই প্রশ্ন করছেন বিশ্বকাপ অবধি ধোনিকে সুযোগ দেওয়া ঠিক হচ্ছে কি না? ইচ্ছে থাকলেও ধোনিকে বিশ্বকাপের আগে সরান যাবে না। বিশ্বকাপের আগে মেরেকেটে সাত আটটা একদিনের আন্তর্জাতিক খেলবার সুযোগ পাবে ভারত। মানছি, ভারতে এখন বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান উইকেটরক্ষক আছে। কিন্তু উপযুক্ত ম্যাচ প্র্যাক্টিস না করিয়ে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে নামিয়ে দেওয়াটা মোটেই কাজের কাজ হবে না। ম্যাচ প্র্যাক্টিস দেওয়ার সময়টা পেরিয়ে গিয়েছে।
ধোনির নিন্দুকদের বুজতে হবে যে সম্প্রতি শেষ হওয়া আইপিএলও দুরন্ত ছন্দে ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক দলে থাকা মানেই তা বিপক্ষের কাছে বাড়তি চাপ। ধোনি এখনও বেশ ভয়ঙ্কর। শুধু নিজ ছন্দে ফিরতে তাঁর যোগ্য সঙ্গীর প্রয়োজন।
ভারতর ইনিংস শেষে মনে হয়েছিল ২৫-৩০ রান কম উঠেছে। অর্থাৎ, আরও ২৫-৩০ রান বেশি করতে পারলে কোহলিরা হয়ত অনায়াস জয় পেতে পারত। কিন্তু আমার এই ধারণাটা ভেঙ্গে গেল ইংল্যান্ড ইনিংস শুরু হতেই।
প্রথম ম্যাচের উলট-পুরাণ দেখলাম আমরা এই ম্যাচে। সেই ম্যাচে ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে বড় জয় এসেছিল। আর, মঙ্গলবার ইংরেজ স্পিনারদের দাপটে ভরতকে খড়কুটোর মতো উড়িয়ে ডেইলি ইংল্যান্ড। কিন্তু শুধু স্পিনারদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। হতাশ করেছে ভারতীয় পেসাররা। ভূবিদের দেখে মনে হল একেবারেই ছন্দে নেই।
আগামী বিশ্বকাপে ফেভরিট তালিকায় থাকবে ভারত ও ইংল্যান্ড
শুরুতে ব্রেকথ্রু পাওয়া না গেলেও কুলদীপরা সামলে নেবেন - এই ফর্মুলা রোজ রোজ খাটে না। মঙ্গলবারও খাটল না। কুলদীপরা যাতে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে পারেন তার জন্য শুরুতেই উইকেট তুলতে হবে ভারতকে।
এখানে আমি একটা কথা বলতে চাই। মঙ্গলবারের পারফর্মেন্স দেখে কেউ যদি মনে করে থাকে আগামী বিশ্বকাপে ভারতের কোনও সুযোগ নেই তাহলে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।
আগামী বিশ্বকাপে ১০ টি দল প্রথমে রাউন্ড রবিন লিগে একে ওপরের বিরুদ্ধে ৯টি করে ম্যাচ খেলবে। ১৯৯২ সালের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের মতো। এর পর সেরা চারটি দল সেমিফাইনাল খেলবে। অর্থাৎ, ছোট ছোট দলগুলো একটা বা দুটি ম্যাচে অঘটন ঘটিয়ে পরবর্তী পর্যায় চলে যাবে এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। সেরা চারটি দলই পরবর্তী পর্যায় যাবে।
আর আগামী বিশ্বকাপে এখনও আমার সেরা বাজি যথাক্রমে ভারত, ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান।