গঙ্গাদূষণ রোধে বিধিসম্মত সতর্কীকরণে কতটা কাজ হবে
কারখানার চেয়ে অনেক বেশি দায় পুরসভাগুলোর
- Total Shares
শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয় উত্তর ভারত জুড়েই গঙ্গা দূষণ একটা বড় সমস্যা। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে এই সমস্যার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী নদী লাগোয়া পুর সংস্থাগুলো। হিসেবে বলছে, গঙ্গা দূষণের জন্য কলকারখানাগুলো যদি ৪০ ভাগ দায়ী হয় তাহলে পুর সংস্থাগুলো ৬০ ভাগ দায়ী। গঙ্গা দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ বিভিন্ন পুর সংস্থা নিকাশি নালা দিয়ে বাহিত জল গঙ্গায় ফেলে।
গঙ্গাদূষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন গ্রিন ট্রাইবুনাল
এই সমস্যার সুরাহা করতে আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছিলাম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০০৬ সালের নির্মল গঙ্গা অভিযান। এই প্রকল্প শুরুর দুই বছরের মধ্যেই অবশ্য প্রকল্পের নাম পরিবর্তন হয় এবং প্রকল্পটির পরিধি বৃদ্ধি হয়। সেই সময় আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে শুধু গঙ্গা দূষণ রোধ নয় আমাদের রাজ্যের বাকি নদনদীগুলোকেও দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। তাই প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছিল নির্মল নদি অভিযান। সেই সময় পুর সংস্থা ও পঞ্চায়েতগুলোর সঙ্গে যুগ্ম ভাবে বিভিন্ন ধরণের সচেতনতা প্রচার অনুষ্ঠিত করা হত।
দৈনন্দিন ভাবে হয়ত আমরা খুব একটা সফল হয়নি। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা সাফল্যের মুখও দেখেছিলাম। যেমন বিভিন্ন পুজোর ভাসানের সময় লোকে ঠাকুরের কাঠামো ও ফুল-বেলপাতা সমস্ত কিছুই নদীতে ফেলে দিত। সেই প্রবণতা কিন্তু অনেকটাই কমেছে। দূষণ রোধের সবচেয়ে ভালো উপায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
গঙ্গাকে দূষণ মুক্ত করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরণের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর সিংহভাগই যে ব্যর্থ হয়েছে, তা বলাইবাহুল্য। যেমন গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান প্রকল্প। ১৯৮৬ সালে এই প্রকল্পের সূচনা হয়। এই প্রকল্পের পিছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হলেও লাভের লাভ কিছুই হয়নি।
তাই ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি যে সচেতনতা সৃষ্টিই দূষণ রোধের সেরা উপায়। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গঙ্গা দূষণ স্কুলে অবশ্য পাঠ্য করা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাও বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যালয়গুলোতেও পরিবেশ পাঠ আবার শুরু করতে হবে।
গ্রিন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ একদম ঠিক। হ্যান্ডবিল বিতরণ করে বা বিভিন্ন ধরণের দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
গঙ্গা হচ্ছে ভারতের জীবনস্রোত। গঙ্গাকে না বাঁচালে আমাদের সভ্যতাকে আর রক্ষা করা যাবে না।