প্রথম থিম পুজো ভাল লাগেনি অনেকেরই, আপত্তি জানিয়েছিলেন ক্লাবের সদস্যরাই
প্রশ্ন জেগেছিল: থিম পুজোর কৌলিন্য নেই, মেট্রো রেল নেই, সন্তোষপুরে মানুষ আসবেন কী কারণে?
- Total Shares
২০১১ সালের সেই রাতটার কথা মনে আছে? টেলিভিশনে ভেসে আসছিল কমেন্ট্রি... ‘ধোনি ফিনিশেস ইন স্টাইল’। শূন্যে ব্যাট ঘুরিয়ে চোখ বুজে ফেলা ক্যাপ্টেনের সাথে চোখ বুজে ফেলেছিলাম আমরা সবাই। আঠাশ বছর পরে অবশেষে স্বপ্নউড়ান। বিশ্বজয়ী ভারত। বোকাবাক্সের সামনে তখন মুখে হাসি, আর চোখের জলের বন্যা।
ঠিক এইরকমই একটা রাতের কথা আমার মনে পড়ে। সালটা ২০০৮। টিভি নয়। খবরটা শুনেছিলাম নিজের কানে। বিশ্বকাপ ফাইনাল নয়। তবে কলকাতার দুর্গাপূজার ইতিহাসে সন্তোষপুরের কাছে এই দিনটা ছিল অতি গুরুত্বপূর্ন। দক্ষিণ, মধ্য আর উত্তর কলকাতার তাবড় তাবড় পুজো কে হারিয়ে সেদিন এশিয়ান পেন্টইস শারদ সন্মান জিতেছিল সন্তোষপুর লেকপল্লী। আর কে-ই বা না জানে পুজো পাগল বাঙালির কাছে এশিয়ান পেন্টস শারদ সন্মান, বিশ্বকাপের চেয়েও কম না। যেদিন এশিয়ান পেন্টসের গাড়ি এসে নামিয়ে দিয়ে গেল তাদের বড় কাটআউট (গাট্টু) আর গর্বিত বিজয়ী ব্যানার গুলো,সেদিন বাঁধ ভেঙেছিল সন্তোষপুরে। খুশির বাঁধ। খুশির আবেগ আনন্দ অশ্রুতে পরিনত হয়েছিল আর সেই আবেগ কাটতে না কাটতেই পরের বছর ২০০৯ সালে আবার এশিয়ান পেন্টস জয় লাভ করলাম পরপর দু বছর ! তবে এর আগে কিন্তু ভাঙতে হয়েছিল আরও বেশ কিছু বাঁধ। সেগুলো সহজ ছিল না। গল্পের শুরুটা ছিল অন্যরকম।
দক্ষিণ কলকাতার ইএম বাইপাস-যাদবপুর কানেক্টরে অবস্থিত সন্তোষপুরের দুই ক্লাব ত্রিকোন পার্ক ও লেকপল্লী কলকাতার দুর্গা পুজোর মানচিত্রে আজ এক সুপরিচিত নাম।
নব্বইয়ের দশকে, তখনও নাম-ডাক বিশেষ হয়নি [সৌজন্যে: পুজো কমিটি]
সালটা ২০০৩। সুকান্ত সেতু পেরিয়ে সেবার প্রথম এশিয়ান পেন্টসের ফাইনাল রাউন্ডের বড় গাড়ি ঢুকেছিল সন্তোষপুরে। সৌজন্যে সেতুর লাগোয়া একটি পুজো। সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্ক। দুর্গাপুজোর মেগাস্টার শিল্পী অমর সরকার ছিলো সেবার ছিল ত্রিকোণ পার্কের পুজোর কান্ডারী। চমক ছিল গালার পুতুল। গালা গলিয়ে তৈরি হয়েছিল মন্ডপ। সন্তোষপুরের মানুষের সেদিন তাক লেগেছিল। জুটেছিল এশিয়ান পেন্টসের চুড়ান্ত পর্বের সেরা বারো নির্বাচন। আট বছরের ব্যবধানে জন্ম নেওয়া দুটো পুজোরই ( ত্রিকোণ পার্ক- স্থাপিত ১৯৫০, লেকপল্লী- স্থাপিত ১৯৫৮, ) থিম পুজোতে একসসঙ্গে হাতেখড়ি হয়েছিল সেবার। পায়ে পা মিলিয়ে ২০০৩ সালে লেকপল্লী মন্ডপ সাজিয়েছিল পুরুলিয়ার ছৌ শিল্পের আঙ্গিকে। প্রখ্যাত ছৌ শিল্পী গম্ভীর সিং মুরার ছৌ দল লাইভ নাচ দেখিয়েছিল লেকপল্লীর মন্ডপে। কিন্তু লেকপল্লীর পুজো সেদিন ভাল লাগেনি অনেকেরই। আপত্তি জানিয়েছিলেন পাড়ার লোকেরাই, ক্লাবের সদস্যরাই। সাবেকিয়ানা ছেড়ে থিমের প্রতিপত্তিতে বিরক্ত হয়েছিলেন অনেকেই। লেকপল্লী প্রথমবারের থিমপুজো ছিল সুপার ফ্লপ। তাতে কী? ত্রিকোণ পার্ক তো সুপার হিট। কলকাতার মানুষ জেনে গিয়েছিল ততদিনে সন্তোষপুরেও পুজো হয়, সে পুজোতেও রোশনাই আছে।
২০০৪-এ শিল্পী সুশান্ত পালের থিম আলোকের এই ঝর্ণাধারায়- এর দ্যুতিতে ঝলমলিয়ে উঠেছিল ত্রিকোণ পার্ক। ২০০৫-এ শিল্পী রবীন রায়ের মাদুরের মন্ডপ। ২০০৬- এ অমর সরকারের প্রত্যাবর্তন। মাশান শিল্প। ২০০৭- এ অমর সরকারের চালচিত্রের পরিবর্তন সাড়া ফেলেছিল মহানগরীর বুকে। উত্তর কলকাতার এক সংগ্রহশালায় আজও সযত্নে রাখা আছে সেই চালচিত্র। সারা কলকাতা ততদিনে পুজোয় সন্তোষপুরমুখী। কলকাতার পুজোর মানচিত্রে ততদিনে জায়গা করে নিয়েছে ধ্যাড়ধেড়ে গোবিন্দপুর, থুড়ি সন্তোষপুর। আর এই লড়াই টা তখন একা হাতে করেছিল ত্রিকোণ পার্ক। লেকপল্লীর পালে তখনও হাওয়া লাগেনি।
২০০৩ সালে ছৌ নাচের পর ২০০৪- লেকপল্লী বানিয়েছিল মনসামঙ্গলের চাঁদ সদাগরের বজরা। তৈরি করা হয়েছিল হাতপাখা দিয়ে। ২০০৫ এ ছিলো ভ্যালী অফ ফ্লাওয়ার ২০০৬- এ পোড়ামাটির কাজ, নবগ্রহ দ্বাদশ রাশি। ২০০৭- এ সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে শিল্পী রূপচাঁদ কুন্ডুর শৈল্পিক জাদুতে সাজল লেকপল্লী। চমক থাকলেই কী হবে, তখনও কিন্তু থিমপুজোর আঁতুড়ঘর সুনীলনগর বা বেহালার ধারে কাছে পৌঁছতে পারেনি সন্তোষপুর। আপ্রাণ চেষ্টা চলছিল। আর আমার মনে পড়ে যাচ্ছিল টুকরো টুকরো স্মৃতি।
১৯৯২ সাল তখন। পুজোয় সারা কলকাতায় ঠাকুর দেখে বেড়াতাম তখন। পাড়ার সূত্রেই যুক্ত গাঁটছড়া বাঁধা হয়ে যাচ্ছে লেকপল্লীর সঙ্গে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়ছে একটা নেশা। আপনারা হয়তো বলবেন পাগলামি। সেই পাগলামির নাম পুজো। না, কোনো ধর্ম-টর্মের আবেগ জড়িয়ে নেই এখানে। আবেগ সবটাই মনের। আমি দেখেছি আমার বৃদ্ধ শহর, ত্রস্ত শহর, শীর্ণ শহর কীভাবে বুক বেঁধেছে শুধু একটা উৎসবের দিকে তাকিয়ে। সেই উৎসবকে কি ভালো না বেসে পারা যায়?
পুজোয় প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঘোরা দিয়েই আমার পুজো পাগলামির শুরু। পাল্টেছে সঙ্গী। কখনও বন্ধু, কখনো পরিবার, আজ মেয়ে।
২০০৯ এ পুষিয়ে গেল খামতিটা, জনস্রোতে ভেসে গেল সন্তোষপুর লেকপল্লী
২০০১ সাল। কলকাতার দুর্গাপুজোর মাইলস্টোন এই ২০০১। বলিউডে যখন শোলে রিলিজ করে সারা ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে ঠিক সেই রকমই একটা সাল ২০০১। ভাঁড়ের মন্ডপ, কসবা বোসপুকুর শীতলা মন্দির। ঠিক তার আগের বছরই ওরা করেছিল ‘এপার বাংলা, ওপার বাংলা’। অষ্টমীর রাতে আমি আর রনি পাগলা ঘুরছি প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে। রনি দা ঠিক আমার মতোই। দুজনের মাথাতেই ঘুরছে একটা চিন্তা। ওরা পারছে, আমরা কেন পারি না? কেন পারি না? পাড়ার বড়রা আমাদের পাত্তা দেননি। লেকপল্লী করবে থিমপুজো? আমরা বোঝাতে পারছিলাম না থিম মানে অবমাননা নয়, থিম মানে শিল্প। থিম মানে সূচনা।
তখন আমাদের লড়াই ছিল কসবা থানা সমন্বয় সমিতির মধ্যে। আমরা লড়তাম কসবা, গড়ফা আর সন্তোষপুরের ক্লাবগুলো। খোঁজ নিচ্ছি কলকাতা ঘুরে ঘুরে। কথা বলছি পুজো কমিটিগুলোর সাথে। প্রস্তুতি নিচ্ছি একটা বিপ্লবের। শুধু একটু বারুদের অপেক্ষা। আর সেই বারুদের স্তুপে দেশলাই ছুঁইয়ে ছিল সন্তোষপুর ত্রিকোণ পার্ক। আমরা হাত ধরাধরি করে মাঠে নেমেছিলাম ২০০৩ সালে। প্রশ্ন করতাম নিজেদেরই। কেন মানুষ আসবে সন্তোষপুরে? কী আছে এখানে? দুপুর তিনটে-চারটের সময় ট্যাক্সি পেরোতে চায় না সুকান্ত সেতু। অপ্রয়োজনীয় আগাছার মতো বেড়ে উঠেছিল যাদবপুরের গা ঘেঁষে। এখানে যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয় নেই, গড়িয়াহাটের মতো কেনাকাটার সাম্রাজ্য নেই, বেহালার থিম পুজোর কৌলিন্য নেই। মেট্রো রেল নেই। জংশন রেলষ্টেশন নেই। থাকার মধ্যে শুধু একখানা যাদবপুর রেল স্টেশন আর বাইপাসের কানেক্টর। বাবুবাগান, যোধপুর পার্ক, একডালিয়া দেখে কসবার পুজো দেখতে চলে যান যাঁরা, যাদবপুর পেরিয়ে সন্তোষপুরে আসাকে তারা বাহুল্য মনে করতেন। তা এ হেন সন্তোষপুরে দুর্গাপুজোতে মানুষ আসবেন কী কারণে?
২০০৩ এর পর আস্তে আস্তে মানুষের ঢল নেমেছে। ত্রিকোণ পার্ক অবধি যারা এসেছেন, ক্লাবের ছেলেরাই দর্শক দের চিনিয়ে দিয়েছেন কীভাবে যেতে হবে লেকপল্লী। আর বাইপাস ধরে কসবার পুজো দেখে যারা আগে লেকপল্লীতে আসতেন, আমরা তাদের বলে দিয়েছি প্রতিবেশী পুজো ত্রিকোণ পার্কের হদিশ। তবু লড়াই শেষ হয়নি। লড়াইয়ের আরও একটা বড় কারণ ছিল আনন্দবাজার পত্রিকার জনস্রোতের হিসাব। বিশিষ্ট সাংবাদিক দেবদূত ঘোষ ঠাকুরের ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে পুজো মন্ডপে ভিড়ের হিসাবের উপর অনেকটাই নির্ভর করত পুজো দেখা। আর এই গণনার সূত্র ছিল কলকাতা পুলিশ। ২০০৯এর আগে পর্যন্ত সন্তোষপুর ছিল পশিমবঙ্গ পুলিশের অধীনে। স্বভাবই, কলকাতার পুজোগুলোর দলে ভিড়তে পারত না সন্তোষপুরের পুজো। ২০০৩- থিমপুজোর সূচনা, ২০০৮- এশিয়ান পেন্টস শারদ সন্মান, তবুও সংবাদ মাধ্যমের প্রথম পাতার পরিচিতি পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল সন্তোষপুরকে।
তবে ২০০৯ এ পুষিয়ে গেল খামতিটা, সুরুচি সঙ্ঘ, বোসপুকুর শিতলা মন্দির, আহিরীটোলা, বড়িশা ক্লাবের মতো সেলিব্রিটি পুজোর দলে নাম লেখাল সন্তোষপুর লেকপল্লী। আনন্দবাজারের প্রথম পাতায় জ্বলজ্বল করল সন্তোষপুর লেকপল্লীর ভিড়ের হিসেব, ঘড়ির কাঁটা মিলিয়ে। ২০১০-এ একই সঙ্গে লেকপল্লী আর ত্রিকোণ পার্ক আনন্দবাজারের প্রথম পাতায় ঘড়ির কাঁটা তে জনস্রোতের হিসাব। এশিয়ান পেন্টস তো রয়েছেই, কলকাতার অগুনতি পুজো সম্মান, আর পুরষ্কারের পালক জুড়েছে সন্তোষপুরের মুকুটে।
কলকাতার পুজো-করিয়ে ক্লাবগুলোর সঙ্গে আমরা আজও লড়াই করে যাচ্ছি, সুস্থ সেই লড়াই
আমাদের আর ফিরে তাকাতে হয়নি। মহানগরীর প্রথম সারির অজস্র শিল্পীর শৈল্পিক মননের আদরে লাবণ্য পেয়েছে সন্তোষপুরের পুজো। সুশান্ত পাল, অমর সরকার, রূপচাঁদ কুন্ডু, প্রশান্ত পাল, পূর্ণেন্দু দে, অদিতি চক্রবর্তী, সুব্রত ব্যানার্জী, শিবশঙ্কর দাস, রিন্টু দাস , অনির্বাণ দাস , মোহনবাঁশি রুদ্র পাল, নব পাল, পরিমল পাল, বছর-বছর সাজিয়েছেন সন্তোষপুরের পুজো। আর আজ আমাদের নতুন প্রজন্মও তৈরি হয়েছে। সন্তোষপুর অ্যাভিনিউ সাউথ। অনেক বছর আগেই নাম লিখিয়েছিলো থিমের দলে। তবে কলকাতার মূল মানচিত্রে আসতে তাদের একটু সময় লেগেছে । প্রখ্যাত শিল্পী প্রশান্ত পাল ও শিল্পী অনির্বান দাস কে দিয়ে কাজ করিয়ে চেস্টা করে গেছেন বছরের পর বছর। তবে ২০১৫ সালে শিল্পী রিন্টু দাসের সেফ্টিপিণ এর মন্ডপের পর অ্যাভিনিউ সাউথ এর পুজো মানুষের মুখে মুখে। আজকে আপনি যদি সন্তোষপুরে পুজো দেখতে আসেন আপনাকে এই তিনটে পুজো দেখতেই হবে ।
ঠাকুর দেখার প্ল্যান করার সময় কসবা, বেহালা, রাসবিহারী জোনের সঙ্গে উৎসাহ ভরে আজ নাম চলে আসে সন্তোষপুরের।
কলকাতার পুজো-করিয়ে ক্লাবগুলোর সঙ্গে আমরা আজও লড়াই করে যাচ্ছি। সুস্থ লড়াই। সারা বছর আমরা একই রকম পুজো পাগল। আর বছরের পাঁচটা দিনে আমরা নিজেরাই নিজেদের সঙ্গে খেলতে নামি ময়দানে। হার জিত থাকে। আমরা এশিয়ান পেন্টস পেলে ত্রিকোণ পার্ক, অ্যাভিনিউ সাউথ কুর্ণিশ জানিয়ে যায়। আমাদের সবার মাথার উপরে তো ছাদ একটাই। সেই ছাদের নাম ফোরাম ফর দুর্গোৎসব।
লড়াই থামেনি। আজও আমরা লড়াই করে যাচ্ছি। তবে আজকের লড়াই অনেকটা স্বস্তির। আজ শিল্পের লড়াই। আজ মুগ্ধ করার লড়াই। দর্শককে রাস্তা চেনানোর লড়াই আজ আর নেই। কলকাতা দুর্গাপুজোর প্রথমসারির এমন কোনো পুরস্কার জেতা বাকি নেই আজ সন্তোষপুরের ঝুলিতে , আজ আর পুজোর সময় নিঝুম হয়ে থাকে না সন্তোষপুর। আর এই
সন্তোষপুরের পুজোকে ২০০৩ সাল থেকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো আগলে রেখেছে দুটি ক্লাব ত্রিকোণ পার্ক আর লেকপল্লী। ঠিক যেন বর্তমান ফুটবল মাঠের ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান। মাঠে খেলতে নামি দুজনেই। একে অন্যের বিরুদ্ধেও দাঁড়াই। আবার সেরার সেরা পুরস্কার হাতে ত্রিকোন পার্কের সদস্যরা যখন পুরস্কার মঞ্চে ওঠে দাঁড়ায় লেকপল্লীর সদস্যরা তখন দর্শকসনে বসে করতালি দিয়ে সন্তোষপুরকে গর্বিত করে তোলে, পুজোর সন্তোষপুর ঠিক এইভাবেই মহানগরীর সমাদর পাবে। আর আমরা, গলি থেকে রাজপথ, বড় স্বপ্ন দেখা পুজো-প্রেমিকরা, আমরা ঠিক এমন করেই ভালবেসে যাব আমাদের পাড়ার পুজোকে। আমাদের ভালবাসার উৎসব কে, আর ভালবাসার সন্তোষপুরকে।