বাড়ছে অস্বস্তি, কেন দেখা নেই বৃষ্টির?

ঘূর্ণাবর্তের কারণের মৌসুমি বৃষ্টিতে বাধা পড়ে গেল

 |  2-minute read |   19-06-2018
  • Total Shares

আকাশের মন মাঝেমধ্যে অল্পবিস্তর কালো হয়ে এলেও বৃষ্টির দেখা নেই। আকাশে মেঘের ও তেমন একটা উঁকিঝুঁকি মারছে না।

রাজ্যে কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টি সাধারণত ১৫ এপ্রিল থেকে ৩১ মের মধ্যে হয়। কিন্তু এ বছর কালবৈশাখীর সময়সীমাও পেরিয়ে গেছে।

এ মাসের প্রথম দিকে বৃষ্টি হয়েছিল বটে কিন্তু তারপর আর কোনও চিহ্নই নেই। শহর বৃষ্টিহীন হয়ে রয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে অস্বস্তি। এখানে একটা কথা বলে রাখি সেটা হল সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যে কয়েক পশলা বৃষ্টি উপভোগ করলেন সেটা কালবৈশাখীও নয় কিংবা মৌসুমি বায়ুর বৃষ্টিও নয়। 

body1_061918072108.jpg

তা হলে এখন প্রশ্ন হল এই যে বৃষ্টি হয়ে গেল তার কারণই বা কী আর কবেই বা আসবে মরসুমি বৃষ্টি?

আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালে যে মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে তার যাত্রা শুরু হয় বিষুব রেখার কাছাকাছি দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত দ্বীপপুঞ্জ ম্যাসকারেন (মাদাগাস্কারের উপকণ্ঠে) থেকে। খুব সহজ ভাবে বোঝাতে হলে বলা যেতে পারে এই দ্বীপপুঞ্জ ভারতের মৌসুমি বায়ুর উৎসস্থল।

body4_061918072129.jpg

এ বছর ঠিক সময়মতো কেরলে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করেছিল। তবে বিপত্তির সূত্রপাত হল যখন কেরল হয়ে মৌসুমি বায়ু গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগিয়ে আসছিল, কারণ তখন দেখা গেল ম্যাসকারিন হাইয়ের উপরে যে অ্যান্টি সাইক্লোন অবস্থান করছে তা বেশ দুর্বল। তাই সেটি খুব শক্তিশালী নয় বলে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুকে বিষুবরেখা পার করে নিয়ে আসে তা গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের দিকে মৌসুমী বায়ুকে পৌঁছে দেয় ততটা ক্ষমতা ছিল না।

বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এসে এখানকার বায়ু ধীরে ধীরে শক্তিশালী হতে থাকে। ভারতে কোন বছর ঠিক কতখানি বৃষ্টি হবে সেটা নির্ভর করে এখানকার বায়ু যতটা শক্তিশালী হয়ে উঠেছে তার উপর। তাই এই মাসকারিনে যত দেরি করে এই উচ্চ বায়ুচাপ সৃষ্টি হবে ততটাই দেরি করে ভারতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টি হবে। তাই বলা যেতেই পারে যে এই গরম থেকে রেহাই যে বৃষ্টি দেয়, সেই বৃষ্টির প্রধান বন্ধু হল এই মাসকারিন হাই। কিন্তু এবার সেটা হল না। তাই বোঝাই যাচ্ছে আমাদের এখানে বৃষ্টি না হওয়ার কারণটা।

body5_061918072214.jpg

দ্বিতীয়ত, বিষুবরেখার কাছে মাদানজুলিয়ান অসিলেশন নামে ঘূর্ণাবর্ত অবস্থান করে।  মৌসুমী বৃষ্টি নিয়ে আসতে সহায়তা করে মাদানজুলিয়ান অসিলেশন। দেখা যাচ্ছে এ বছরে এই অসিলেশনটিও খুব দুর্বল।

তৃতীয়ত, মৌসুমি বায়ু ঠিক যখন কেরল অতিক্রম করে গাঙ্গেও পশ্চিমবঙ্গের দিকে নিজের পথে এগোচ্ছিল ঠিক তখনই বঙ্গোপসাগরের উপরে একটা নিম্নচাপের সৃষ্টি হল। এর ফলে ওখানে একটা ঘূর্ণাবর্ত দেখা দিল। এর ফলে এই ঘূর্ণাবর্ত মনসুনের পুরো শক্তিটা টেনে নিল। এই ঘূর্ণাবর্তের কারণের মৌসুমি বৃষ্টিতে বাধা পড়ে গেল।

body3_061918072232.jpg

আর সম্প্রতি যে বৃষ্টি হল তার কারণ ছিল বঙ্গোপসাগরের উপরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপ।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

PROF. DR. SUTAPA CHAUDHURI PROF. DR. SUTAPA CHAUDHURI

Professor, Department of Atmospheric Sciences | University of Calcutta

Comment