কেকেআর নিয়ে আমি অনেকটাই আশাবাদী, আমাকে ভরসা জাগাচ্ছেন সুনীল নারিন
এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারকে পেতে মরিয়া ছিল কেকেআর, কারণ তিনি দলের সম্পদ
- Total Shares
ছিয়ানব্বইয়ের বিশ্বকাপের সনৎ জয়সূর্যকে মনে পড়ে? ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার। বিশ্বকাপ শুরুর কয়েকমাস আগে দুম করে বনে গেলেন ব্যাটসম্যান। মূলত, প্রথম পনেরো ওভারে ১৫ গজের বাইরে মাত্র দু'জন ফিল্ডারের সুবিধা কাজে লাগানোর জন্য জয়সূর্যকে ওপেন করতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কাজেও দিয়েছিল। উইকেটরক্ষক রমেশ কালুবিথরানার সঙ্গে জুটি বেঁধে শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করে দিলেন তিনি। একজন বোলার পুরদস্তুর অলরাউন্ডার হয়ে উঠলেন, একই সঙ্গে বিশ্বক্রিকেটে এক নতুন পরিভাষার আবির্ভাব ঘটল- পিঞ্চহিটার।
এর পর জয়সূর্যের সরণি অনুসরণ করে বিশ্বক্রিকেটের আরও অনেক তারকাকেই পিঞ্চহিটারের ভূমিকায় ব্যবহার করবার চেষ্টা করা হয়েছে। ভারত যেমন একটা সময় বাঁহাতি পেসার ইরফান পাঠানকে দিয়েও চেষ্টা চালিয়েছিল। এদের মধ্যে কেউ সফল হয়েছেন, আবার কেউ কেউ ব্যর্থও হয়েছেন। এই তালিকার নবতম সংযোজন ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার আমাদের কেকেআরের সুনীল নারিন। সকাল যদি সত্যি সত্যি ঠিক করে দেয় আপনার গোটা দিনটা কেমন যাবে, তাহলে বলতেই হচ্ছে পিঞ্চহিটারের ভূমিকায় নারিন লম্বা রেসের ঘোড়া।
পিঞ্চহিটারের ভূমিকায় নারিন লম্বা রেসের ঘোড়া
রবিবারের ইনিংসটার কথায় আসি। এ রকম অনবদ্য একটি ইনিংস টি-২০ ফরম্যাটে খেলা খুবই কঠিন। তাও আবার একজন পিঞ্চহিটারের পক্ষে। 'লাগে তুক না লাগে তাক' গোছের কোনও শট নেই। একেবারে নিখাদ ক্রিকেটীয় শট খেলেই হাফ সেঞ্চুরি করলেন লারার দেশের স্পিনার। একটা সুযোগ দিয়েছিলেন অবশ্য। তবে সেও তো চল্লিশের পরে। ততক্ষণে তো ব্যাটসম্যান হিসেবে তার দক্ষতা প্রমাণ করা হয়ে গেছে।
এ বছর আইপিএলের নিলাম হয়েছিল। প্রতিটি দলই সেরা ক্রিকেটারদের পাওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল। কেকেআর যে কেন নারিনকে পেতে মরিয়া ছিল তা প্রথম ম্যাচের পরেই পরিষ্কার। অলরাউন্ডার নারিন এখন যে কোনও দলের সম্পদ।
কাল ইডেনে বসে খেলা দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কী ভাবে আটকানো সম্ভব এই ক্যারিবিয়ান ঝড়কে। স্পিনারদের বিরুদ্ধে বরাবরই তিনি অনবদ্য। পেসারদের বিরুদ্ধেও কাল ঝলসে উঠছিল তাঁর ব্যাট। তাহলে উপায়? জোরে বোলার দিয়ে শরীর লক্ষ করে বল করতে হবে যাতে নারিন হাত না খুলতে পারেন। মুশকিল একটাই। এই সারভাইভাল অফ ফিটেস্টের যুগে নারিনও নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাই তিনিও যে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠবার চেষ্টা করবেন তাই স্বাভাবিক।
তবে একটা দুঃখ হয়ত থেকেই যাবে। আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাটসম্যান নারিন কতটা সফল হবেন তা দেখবার সম্ভাবনা খুবই কম। ওয়েস্টইন্ডিজ ক্রিকেটে এমনিতেই অনেক হার্ড হিটার আছেন। সেখানে ব্যাটসম্যান নারিনকে কতটা ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
যাই হোক, ফিরে আইপিএলে ফিরে আসা যাক।
এবারের আইপিএলে শেষ চারে কোন চারটি দল জায়গা করে নেবে তা বলবার সময় এখনও আসেনি। তবে প্রথম ম্যাচের পর কেকেআর নিয়ে আমি অনেকটাই আশাবাদী। আর, আমাকে ভরসা জোগাচ্ছেন নারিন।