মিতালিকে সেমি ফাইনালে খেলানো উচিত ছিল, তাতে ফল অন্যরকম হতে পারত
বিশ্বকাপের পারফর্ম্যান্স নিয়ে কাটাছেঁড়া করার অবকাশ নেই, অনবদ্য খেলেছে ভারতের মহিলা দল
- Total Shares
টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছে ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দল।
এই পরিস্থিতিতে সেই টুর্নামেন্টের সাফল্য বা ব্যর্থতা নিয়ে কাটাছেঁড়া হওয়ার কথা। কিন্তু এই মুহূর্তে,দলের কোচ রমেশ পওয়ারের সঙ্গে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার তথা প্রাক্তন অধিনায়ক মিতালি রাজের দ্বন্দ্ব নিয়ে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে চিঠি পাঠিয়ে মিতালি কোচের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে রমেশ নাকি তাঁকে তাঁর প্রাপ্য সম্মানটুকু দেননি। সেই চিঠির পাল্টা দিয়েছেন কোচ রমেশ পওয়ারও।
মিতালি রাজ ও রমেশ পওয়ারের দ্বন্দ্বের কারণ নিয়ে বিশ্লেষণ না করাই শ্রেয় [সৌজন্যে: টুইটার]
কে ঠিক কে ভুল আমি সেই প্রসঙ্গে যাব না। বিশেষ করে বিষয়টি ভারতীয় দলের ড্রেসিং রুমের অন্দরমহলের ঘটনা। কয়েক হাজার মাইল দূরে ভারতের উত্তরপূর্ব প্রান্তের রাজ্য অসমে বসে এই বিষয়টির ভিতর প্রবেশ না করাই শ্রেয়।
তবে একটা কথা বলতে বোধহয় বাধা নেই, একজন প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা একজন ক্রিকেট প্রশিক্ষক হিসেবে আমার বারংবার মনে হয়েছে যে সেমিফাইনালে মিতালিকে খেলানো উচিত ছিল। অন্তত আমি যদি এই দলটির কোচ বা অধিনায়ক হতাম তা হলে মিতালিকে বাদ দিয়ে সেমিফাইনালের দল গঠন করতে পারতাম না। একান্ত যদি না মিতালির কোনও চোট-আঘাতের সমস্যা থাকত।
কেন? সেই প্রসঙ্গে এবার আসি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই অনবদ্য ছন্দে ছিলেন মিতালি। পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে হাফ সেঞ্চুরিও করেছেন তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৫১ ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৫৬। টি-২০ ক্রিকেট ২০ ওভারের খেলা। এই ফরম্যাটে মাত্র দু'তিনটে ওভারের মধ্যেই সমস্ত হিসেবে নিকেশ উল্টে যেতে পারে। নিয়মিত যাচ্ছেও। তাই এই ফরম্যাটে 'ইন ফর্ম' ব্যাটসম্যানকে খেলানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সেমিফাইনালে মিতালিকে খেলানো উচিত ছিল [ছবি: এএফপি]
আর, মিতালি যে ছন্দে ছিলেন তা তো স্কোরবুকই জানান দিচ্ছে। টিভির পর্দায়ও আমরা তা প্রত্যক্ষ করেছি। সুতরাং সেমিফাইনালে মিতালিকে খেলানো উচিত ছিল।
আরও একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। গত ২০ বছর ধরে ক্রিকেট খেলেছেন মিতালি। তাঁর নেতৃত্বে আমরা ইংল্যান্ডে একদিনের বিশ্বকাপ ফাইনালেও খেলেছি। মহিলা ক্রিকেট বিশ্বের তাবড় তাবড় বোলাররা এখনও তাঁকে ভয় পান। মিতালিকে দলে রাখা মানে মনস্তাত্বিক দিক থেকেও অনেকটা এগিয়ে থাকা। আর, সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ঠিক সেই কাজটাই করল না ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
এমনিতে এই বিশ্বকাপে ভারতীয় মেয়েদের পারফর্ম্যান্স কাটাছেঁড়া করার খুব একটা অবকাশ নেই। টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছেন তাঁরা। যদি চ্যাম্পিয়ন হত, তাহলে যোগ্য দল হিসেবেই চ্যাম্পিয়ন হত ভারত। ফ্লুকে নয়। দুর্ভাগ্য, নক আউট পর্যায়ে ইংল্যান্ডের কাছে আট উইকেটে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলাম আমরা।
ব্যক্তিগত ভাবে আমি অনেক ক্রিকেট বিশেযজ্ঞদের সঙ্গে এক মত। মিতালি খেললে সেমিফাইনালের ফলাফল অন্যরকম হত পারত।