মঙ্গলবারের ইডেনে রাজস্থানের সঙ্গে মরণ-বাঁচন ম্যাচ দীনেশ কার্তিকদের
মনে পড়ছে না শেষ কবে লিগের শেষ পর্বের আইপিএল এতটা জমে উঠেছিল
- Total Shares
শেষ দৃশ্যে নাটক জমে উঠেছে। বরং, বলা ভাল নাটকের শেষ দৃশ্যে আবার নতুন নাটকের সূচনা হল। রাউন্ড রবিন লিগ প্রায় শেষ পর্যায়। অথচ এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না যে কোন চারটি দল শেষ পর্যন্ত শেষ চারে জায়গা করে নেবে।
মোট আটটি দল এবছর আইপিএলে অংশগ্রহণ করেছে। হোম-অ্যান্ড-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। অর্থাৎ, এক একটি দল রাউন্ড রবিন লিগে ১৪টি করে ম্যাচ খেলবে। প্রতিটি দলের ১১টি করে ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। কেকেআর ও দিল্লি তো ইতিমধ্যেই ১২টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। অথচ, এই পরিস্থিতিতেও হায়দরাবাদ ও দিল্লি ছাড়া বাকি সকলের ভাগ্য ঝুলে রয়েছে। কাগজে কলমে ১১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট পেয়ে হায়দরাবাদ শেষ চারে জায়গা করে ফেলেছে আর ১২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পেয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে দিল্লি। কিন্তু বাকি ছ'টি দলের মধ্যে এখন জোর লড়াই চলছে। এদের মধ্যে তিনটি দল হায়দরাবাদের সঙ্গে শেষ চারে উঠবে।
মঙ্গলবার রাজস্থানের সঙ্গে মরণ-বাঁচন ম্যাচ সুনীল নারিনদের
অনেকেই বলছেন দু'নম্বরে থাকা চেন্নাইয়ের শেষ চারে পৌঁছানো নিশ্চিত। ক্রিকেটীয় যুক্তিতে চেন্নাইয়ের শেষ চারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। কিন্তু, পয়েন্ট তালিকায় দু'নম্বরে থাকা চেন্নাই ১১ ম্যাচ খেলে মাত্র ১৪ পয়েন্ট পেয়েছে। অঙ্ক কষতে বসলে এখনই চেন্নাইকে নিশ্চিত বলে ধরে নেওয়া যাবে না। চেন্নাইয়ের ঘাড়ের উপর জোর নিশ্বাস ফেলছে পঞ্জাব ও কেকেআর। পঞ্জাব ১১ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট পেয়েছে। কেকেআর ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট। ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করে মুম্বাই ও রাজস্থানও কিন্তু খুব একটা পিছিয়ে নেই।
হাজার ভেবেও আমি মনে করতে পারছি না যে শেষ কবে লিগের শেষ পর্বের আইপিএল এতটা লোমহর্ষক হয়ে উঠেছিল।
এবার আসি কেকেআরের কথায়। গ্রুপ লিগে দীনেশ কার্তিকদের এখনও দুটি ম্যাচ খেলতে হবে। এই দুটি ম্যাচেই জয় পেলে কেকেআর অনেকটাই স্বস্তিতে থাকবে। দুটি ম্যাচেই হেরে গেলে শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ হারাবে। আর যদি একটিতে জেতে তা হলে অন্য দলের জয়-পরাজয় ও রানরেটের উপর নির্ভর করবে কেকেআরের শেষ চারের ভাগ্য।
দুরন্ত ছন্দে রয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা - সাকিব আল হাসানরা
এই দুটি ম্যাচের প্রথমটি আগামী মঙ্গলবার রাজস্থানের বিরুদ্ধে ইডেনে। পরেরটি শনিবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে হায়দরাবাদে। এই মুহূর্তে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে রয়েছে হায়দরাবাদ। তার উপর আবার ইডেনে এসে কেকেআরকে পরাজিত করে গেছেন ঋদ্ধিমান সাহা-সাকিব আল হাসানরা। ম্যাচটি যে কেকেআরের কাছে আদৌ সহজ হবে না তা বলাই বাহুল্য। উল্টোদিকে রাজস্থান অপেক্ষাকৃত দুর্বল। রাজস্থানে গিয়ে রাজস্থানকে হারিয়ে এসেছে কার্তিকরা। তাই বলে দেওয়াই যায় মঙ্গলবারের ইডেনে রাজস্থানের সঙ্গে মরণ-বাচন ম্যাচ খেলতে নামছেন কার্তিকরা। ম্যাচ জিতলে লড়াইয়ে টিকে থাকবে। কে বলতে পারে এই ম্যাচ জিতেই হয়ত হায়দরাবাদে হায়দরাবাদকে হারাবার রসদও জোগাড় করে ফেলবে সুনীল নারিন ও আন্দ্রে রাসেলরা।
শনিবারের কেকেআর তো এক কথায় অসাধারণ। মুম্বাইয়ের কাছে দু'দুটি ম্যাচ কুৎসিত ভাবে হেরে যাওয়ার পর দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করল কেকেআর। পিঞ্চ হিটারের ভূমিকায় সফল নারিন। লোয়ার মিডল অর্ডারে অনবদ্য খেলে স্কোর ২৪০ এর ঘরে পৌঁছিয়ে দিলেন রাসেল, কার্তিক ও শুভম গিল। ছোট, অথচ কার্যকরী, ইনিংস খেললেন নীতীশ রাণা।
কেকেআর নিয়ে আমি কিন্তু এখনও আশাবাদী
কেকেআর নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তার কারণও রয়েছে। কুলদীপ, পীযূষ ও নারিনের পারফরম্যান্সের উপর অনেকটাই নির্ভর করে রয়েছে কেকেআর। শনিবার এরা প্রত্যেকেই মার খেয়েছেন। অনেকেই বলবেন যে ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়াম একেবারে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট - তাই এই পরিণতি। কিন্তু ক্রিকেটে ছন্দ বলে একটা বিষয় রয়েছে। মঙ্গলবার দ্রুত সেই ছন্দ ফিরে পেতে হবে কেকেআরকে।
দেখা যাক কী হয়। তবে, আমি কিন্তু এখনও আশা ছাড়িনি।