ওয়াটসনের ইনিংসটা অসাধারণ, তবে চেন্নাইকে চ্যাম্পিয়ন করার প্রধান কারিগর ধোনি
একমাত্র মিস্টার কুলই পারেন আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও শান্ত স্বাভাবিক থাকতে
- Total Shares
অমিতাভ বচ্চনের সেই বিখ্যাত সংলাপটা একটু পাল্টে দিয়ে দেখুন। দেখবেন, মহেন্দ্র সিং ধোনির ক্ষেত্রে হুবুহু মিলে যাচ্ছে - ধোনি-কো হারানা মুশকিল-ই নেহি, নামুমকিন হ্যায়।
রবিবার সন্ধ্যাবেলায় খেললেন শ্যেন ওয়াটসন। অনবদ্য একটি শতরান এল তাঁর ব্যাট থেকে। এ বারের আইপিএলের সেরা ইনিংস বলা যেতেই পারে। কিন্তু, শতরানের পর ওয়াটসনের ব্যাট তোলার ছবিটা কোনও মতেই আইপিএলের সেরা ছবি নয়। এ বছরের আইপিএলের সেরা ছবি ম্যাচের পরে ধোনির মুখের ছবিটা। টিভির পর্দায় ধোনির সেই মুখ দেখে আমি যারপরনাই অভিভূত।
এ বছরের আইপিএলের সেরা ছবি
সেই ছবি দেখে মনে হল বুঝি, বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক কোনও একটি পাড়ার টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। ভাবলেশহীন মুখে কোনও অভিব্যক্তি নেই। যেন কিছুই ঘটেনি। এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তার দিক থেকে ক্রিকেট বিশ্বকাপের থেকে কোনও অংশে কম নয় আইপিএল। সেই আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই তিনি কী ভাবে এতটা শান্ত থাকতে পারেন? আসলে একমাত্র ধোনিই তা পারেন। তাই তো বিশ্বের তাবড় তাবড় অধিনায়কদের মাঝে শুধু তিনিই 'মিস্টার কুলের' আখ্যা পেয়েছেন।
এই আইপিএলে আবার অধিনায়ক হিসেবে নিজের জাত চিনিয়েছেন ধোনি। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অনেকে বিশেষজ্ঞই চেন্নাইয়ের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কারণ দলটির ক্রিকেটারদের গড় বয়স তিরিশের বেশি। আইপিএলে যে পর্যায়ের ক্রিকেট হয় তাতে এত ক্রিকেটারদের এত বেশি গড় বয়স একেবারেই কাম্য নয়। অথচ সেই দল নিয়েই অবলীলাক্রমে কেল্লা ফতে করে গেলেন ধোনি। আর, চেন্নাইয়ের এই জয়ে অধিনায়ক ধোনির অবদান অনস্বীকার্য।আমি সৌরভকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। সৌরভের সঙ্গে খেলেছি। তাঁর মতো বড় মাপের অধিনায়ক কখনও দেখিনি। কিন্তু একটা কথা স্বীকার করে নিতেই হচ্ছে - একদিনের ক্রিকেট ও টি-২০ ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে ধোনিই সেরা।
কার্য, ৪৭ বলে ১১৭ রান করলেন ওয়াটসন, কারণ প্রথম ১০ বলে কোনও রান করেননি
এবার আসা যাক শেন ওয়াটসনের ইনিংসটির কথায়। এক কথায় অনবদ্য একটি ইনিংস খেললেন ওয়াটসন। আগের দিন কেকেআর যে ভুলটা করেছিল তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন ওয়াটসন। রশিদ খানকে আক্রমণের রাস্তায় গেলেন না। তাঁকে যোগ্য সম্মান দিয়ে হায়দারাবাদের বাকি বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন তিনি। ৫৭ বলে ১১৭ রান করলেন তিনি। এর মধ্যে প্রথম ১০ বলে একটিও রান করেননি। অর্থাৎ, কার্যত ৪৭ বলে ১১৭ রান করলেন তিনি। কী ভাবে ব্যাখ্যা করবেন এই ইনিংসটাকে? অভাবনীয়, না কি,অতিমানবিক?
টিম কম্পোজিশন যদি দেখা যায় তাহলে এই বছরের সেরা দলটা কিন্তু হায়দরাবাদ গড়েছিল। শাকিব আল হাসানরা শুরুও করেছিলেন চ্যাম্পিয়নদের মত। কিন্তু লীগ পর্যায়ের একেবারে শেষের দিকে এসে হটাৎই খেই হারিয়ে ফেললেন রশিদ খানরা। শেষ পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতে হারল হায়দরাবাদ। জয় বলতে শুধু শুক্রবার কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচটি।
উল্টোদিকে চেন্নাই ঠিক ওই সময়টাই নিজেদের সেরা খেলাটা প্রদর্শন করল। আসলে অধিনায়কত্বই এ ক্ষেত্রে দুটি দলের ফারাক গড়ে দিল। তাই বলতেই হচ্ছে 'সাবাশ! মিস্টার কুল'।