নিউজিল্যান্ড সফর কেন ভারতের বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য গুরত্বপূর্ন
৫ জুন সাউথাম্পটনে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলবে ভারত
- Total Shares
এ বছরের ৫ জুন ইংল্যান্ডের সাউথাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলবে বিরাট কোহলির ভারত। তার আগে ভারত আর মোট ন'টি একদিনের ম্যাচ ও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে।
এই ন'টি একদিনের ম্যাচের চারটি নিউজিল্যান্ডে, চলতি একদিনের সিরিজের শেষ চারটি ম্যাচ। বাকি পাঁচটি একদিনের ম্যাচ ও দুটি টি-২০ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতে খেলবেন বিরাট কোহলিরা।
সব মিলিয়ে, এই নিউজিল্যান্ড সফরের বাকি চারটি ম্যাচ ভারতীয় দলের বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেন? কারণগুলোর উপর একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।
বিদেশের পরিবেশ
বিশ্বকাপের আসর বসছে ইংল্যান্ডে। সেখানকার পিচের অবস্থা, আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ভারতের তুলনায় অনেকটাই ভিন্ন। বরঞ্চ, তার তুলনায় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে কিছুটা হলেও তুলনা চলে। তাই, পরিবেশ পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এই সিরিজেই শেষ সুযোগ পাচ্ছেন বিরাটরা।
ফেব্রুয়ারীর শেষ লগ্নে অস্ট্রেলিয়া ভারতে আসছে। পাঁচটি একদিনের ম্যাচ ও দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলতে। সেই সিরিজের শেষ ম্যাচ ১৩ মার্চ। অর্থাৎ, বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচের আগে প্রায় মাস তিনেক প্রস্তুতির সুযোগ পাবে ভারত। প্রস্তুতি পর্বের কিছুটা সময় ভারত অবশ্য ইংল্যান্ডে কাটাবে। সেখানে বেশ কিছু প্রস্তুতি ম্যাচও খেলবে। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচ আর একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে তফাৎ অনেক, প্রত্বিদ্বন্ধিতাও অনেক বেশি।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা নিউজিল্যান্ডে সেরে ফেলুক বিরাটরা [ছবি: এপি]
তাই এই সিরিজই যাবতীয় হিসেবে নিকেশটা করে ফেলতে হবে বিরাটদের।
ধোনি কি প্রস্তুত?
মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্য এই দুটি সিরিজের গুরুত্ব অপরিসীম। একটা কথা হলফ করেই বলা যায় যে বিশ্বকাপের পর একদিনের দলে ধোনির সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা নিতান্তই কম। ইতিমধ্যেই কিন্তু বিশ্বকাপ দলে ধোনির ঠাঁই পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়ে গিয়েছে।
সমালোচকদের অভিযোগ ধোনির আর সেই রিফ্লেক্স নেই। স্লগওভারে আট কী নয় রান তারা করে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা নেই। ধোনির অনুগামীদের দাবি, ধোনির এখনও ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রয়েছে। তার চাইতেও বড় ফ্যাক্টর, ধোনি দলে থাকলে বিরাট কোহলি বাড়তি বল পান। বিপদের সময় গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শটা তো এই দলে একমাত্র তিনিই দিতে পারেন।
শেষ বিশ্বকাপ খেলতে চলেছেন ধোনি। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বিলক্ষন জানেন, শেষ বিশ্বকাপ তিনি শুধুমাত্র 'পরামর্শদাতা' হিসেবে প্রথম একাদশে সুযোগ পেলে অপমানের আর শেষ থাকবে না। উইকেটরক্ষার পাশাপাশি, তাঁকেও রান করতে হবে। তাঁকেও ম্যাচ জেতানোর ইনিংস খেলতে হবে।
সদ্য শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজে সিরিজ সেরা হয়েছেন তিনি। আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরে পেয়েছেন। এই সিরিজে পরীক্ষা নিরীক্ষাগুলো সেরে ফেলতে হবে তাঁকে। বিশ্বকাপে যেন তাঁকে দলের অপরিহার্য সদস্য হিসেবে মনে হয়। বিপক্ষে যখন নিউজিল্যান্ড
এই বিশ্বকাপের ফরম্যাটটা একটু অন্যরকম। অনেকটা ৯২ সালের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের ধাঁচের। কোনও গ্রূপের বালাই নেই। মোট দশটি দেশ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করছে। লিগ পর্যায়ে প্রতিটি দেশ একে ওপরের বিরুদ্ধে ন'টি করে ম্যাচ খেলবে। এই পর্যায়ের সেরা চারটি দল সেমিফাইনাল খেলবে। আর, সেমিফাইনালের দুই বিজয়ী দল ফাইনালে মুখোমুখি হবে।
এই দশটি দেশের মধ্যে অপেক্ষাকৃত নতুন দুটি দল হল বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। এই দুটি দেশ যে কোনও সময় যে কোনও দেশকে হারাতে পারে। সুতারং আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। এই বিশ্বকাপে প্রতিটি দলের কাছে প্রতিটি ম্যাচই খুব গুরুত্বপূর্ণ।
সুতারং, নিউজিল্যান্ডের মতো প্রতিপক্ষের শক্তি ও দুর্বলতাগুলো পরখ করে নেওয়ার এটাই সেরা সুযোগ ভারতের কাছে। পেসারদের পরীক্ষা
ইংল্যান্ডের মাঠে একেবারে গ্রীষ্মের শুরুতেই বিশ্বকাপের আসর বসছে। সুতারং, ওই পরিস্থিতিতে পেসার ও সুইং বোলারররা বাড়তি সুবিধা পাবেন।
এই ধরণের পিচের সঙ্গে পেসারদেরও একটা মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার থাকে। সেই সুবিধা ভারতীয় পেসাররা ভারতের মাটিতে পাবেন না। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিছুটা হলেও পাবেন।
সুতারং, ভারতীয় পেসারদের কাছে বিশ্বকাপের শেষ সুযোগ হতে চলেছে এই সিরিজ।