অস্ট্রেলিয়া সিরিজ এখন ১:১, ‘ছোড়না মত্’ – কাকে বলছেন কোচ শাস্ত্রী?
সমস্যা হল ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট সাহসী, কিন্তু সাবধানী নয়
- Total Shares
প্রথম টেস্ট কোহলিবাহিনী জেতার পর এটাই লিখেছিলাম: সাবাশ, কিন্তু সাবধান। দ্বিতীয় টেস্টের পর লিখতে হচ্ছে: "ছোড়না নেহি"। ছেড়ে কথা বলা যাবে না। বিপক্ষ অস্ট্রেলিয়াকে তো নয়ই, টিম ইন্ডিয়ার নন পারফর্মারদেরও নয়। চার ম্যাচের সিরিজ এখন ১-১। প্রথমটায় ফয়শালা ৩১ রানে। পরেরটায় ১৪৬ রানে। ভারতের জয়ের চেয়ে অজিদের জয়টা তুলনায় সহজতর মনে হওয়া স্বাভাবিক।
IT'S OVER!!! Australia wins by 146 runs to level the series at 1-1 https://t.co/WLvCW2lqiH #AUSvIND pic.twitter.com/tVyorg7xfd
— Telegraph Sport (@telegraph_sport) 18 December 2018
সাবধান কেন হলেন না শাস্ত্রীরা? আসলে পার্থের উইকেট নিয়ে কোনও হোমওয়ার্ক ছিল না শাস্ত্রীয় ভাবনায়। না হলে পার্ট টাইম বোলার হনুমান বিহারীর বাহাদুরির উপর কেউ ভরসা করে! মিডল অর্ডার মজবুত করার নাকি প্ল্যান ছিল। তাই রোহিতের বদলে বিহারী। আর গতির গোলায় অজিদের উড়িয়ে দেবে বলে উমেশ যাদব। কী ভাবনা!
আসলে কোহলির ‘বড়ে ভাইয়া’ রবিজি আজকাল স্ট্রাটেজি নিয়ে ভাবেন না। তিনি অন্তত জন রাইট নন, গ্যারি কার্স্টেনও নন। দলের নেতা চলেন জোশে, কোচের সেই হাল। "মেরে ফাটিয়ে দেওয়ার মেজাজে নিজেদেরই তো...।”
অশ্বিন ব্যাটিং করতে পারেন না – এ কথা পরিসংখ্যান বলছে না। অশ্বিন ভালো স্পিনার নন – এটাও মানা যায় না। সফল দলে কোনও অধিনায়ক চান না। ধোনি তো উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতেই চাইতেন না। কোহলি আবেগে চলেন (তাঁর রবি ভাইয়ার মতো?)। তর্কের খাতিরে মেনে নিচ্ছি, অশ্বিন নয়। কিন্তু জাদেজাও নন? জাদেজা ব্যাটিংটা কিন্তু ইশান্ত-যাদব-সামি-বুমরাদের থেকে ভালো করেন, ফিল্ডিংটাও। আসলে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট বড্ড বেশি সাহসী, সাবধানী নয়। উইকেট বোঝার ক্ষমতা রবির থাকা উচিত।
টিভি এক্সপার্ট হিসাবে বহুবার পিচ রিপোর্ট দিয়েছেন। টিভি টিমে থাকলে এই উইকেটের পিচ রিপোর্ট কী দিতেন, জানা গেল না। তিনি কী বলতে পারতেন সে কথা সে কথা তাঁর দল গঠন বলে দিয়েছে। তবে পাঁচ দিনের টেস্টে একজন প্রকৃত স্পিনার থাকবে না! অজিরা অবশ্য একজন স্পিনার ( অফ স্পিনার) নিয়ে খেলেই চলেছে। নাথান লিয়ন। প্রথম টেস্টে ৮ ( ৫, ৩) এবং দ্বিতীয় টেস্টে ৮ ( ২, ৬), মোট ১৬। তা কাদের বিরুদ্ধে? ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের – স্পিন খেলায় যাদের দাপট বিশ্ববন্দিত। অজি বাহিনী, যাদের নেটে প্র্যাকটিসই চলে ১৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে তাদের জন্য দাওয়াই -- ম্যাচে ৪ জন পেসার।
ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা- ছোড়না মত্।
Series level at 1-1. Off to Melbourne next #TeamIndia #AUSvIND pic.twitter.com/fP41utwpML
— BCCI (@BCCI) 18 December 2018
প্রথম টেস্টে অজি ওপেনারদের সংগ্রহ মোট ১৬৫। ভারতীয় জুটির অবদান ২২। দ্বিতীয় টেস্টে সফল অজি ওপেনারদের সংগ্রহ ১৫৩ রান। আর আমাদের? মাত্র ২!
জয়ের পরে টিম অস্ট্রেলিয়া (ছবি: এএফপি)
আরও তথ্য দিই। দ্বিতীয় টেস্ট হেরেছি ১৪৬ রানে। ১৫৩-২= ১৫১ রান। ওপেনাররা চূড়ান্ত ব্যর্থ। রবি শাস্ত্রী তো ওপেনার ব্যাটসম্যান ছিলেন। ৪ ইনিংসে রোগ ধরতে ব্যর্থ। ওপেনারদের ‘ছোড়না মত্’। আরও দুটো ম্যাচ বাকি। এখনও রান তাড়া করে জিততে পারেনি কোনও দলই। টক্কর কিন্তু চলছে। রোহিত-পৃথ্বী ফিরছেন। মায়াঙ্ক যাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে করা রানের ঝোলা নিয়ে। হার্দিক পাণ্ডিয়া যাচ্ছেন। প্লিজ, ইন্ডিয়া টিম ম্যানেজমেন্ট যেন এখনই মায়াঙ্ককে নামিয়ে না দেয়। হার্দিককে দেখলেই কোহলি মাঠে নামিয়ে দেন। অজিদের দেখে কিছুতো শিখুন আমাদের টেল এন্ডাররা। যদিও সকলে বোলার, তাঁরাও তো ২০ টা করে উইকেট নিয়েছেন। তাঁরাই আবার ব্যাট হাতে জেতাতে নামবেন? বলিহারি আব্দার। তবুও ওঁরা অজিরা পারে। দ্বিতীয় টেস্টে ওই দলের ৭ থেকে ১১ পর্যন্ত টেল এন্ডাররা ১৪৬ রান তুলেছে। দলও জিতেছে ১৪৬ রানে। ওঁরা পারে, আমরা নই কেন?
‘ছোড়না মত্’ ...মুখে বলে নয়, ( কোচ শাস্ত্রী সানি ভাইয়ের কথায় সায় দিয়ে প্রথম টেস্ট জেতার পর গলার শির ফুলিয়ে বলেছিলেন, বিলকুল ছোড়েঙ্গে নেহি) কাজে করা দরকার।