ব্যাটসম্যানরা সম্মানজনক জায়গায় দলকে টেনে নিয়ে যাক, টেস্ট জেতানোর বোলিং আক্রমণ ভারতের রয়েছে
বর্তমান ভারতীয় পেস অ্যাটাক সর্বকালের সেরা, একসাথে পাঁচ জন প্রতিভাবান বোলার কোনও কালে ছিল না
- Total Shares
কিছু দিন আগে, প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক, মাইকেল ভনের একটি টুইট বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। অনেকে সেটা সোশ্যাল মিডিয়া সাইট গুলোতে আনন্দ সহকারে শেয়ারও করেছেন। অ্যাডিলেড থেকে পার্থগামী বিমানে বিরাট কোহলি ও তার স্ত্রী অনুষ্কা শর্মা তাদের বিজনেস ক্লাস সিট ছেড়ে ইকোনমি ক্লাসে গিয়ে বসে যাতে ওই জায়গায় ভারতীয় দলের দুই পেস বোলার আরাম করে পা ছড়িয়ে বসতে পারে। এটা দেখে ভন টুইট করেন যে বিরাট তার টিমের ফাস্ট বোলারদের এমন ভাবে খেয়াল রাখছে যে আগামী টেস্ট গুলোতে অস্ট্রেলিয়ার কপালে দুঃখ আছে।
অ্যাডিলেড থেকে পার্থ, তিন ঘন্টার একটু বেশি সময়ের বিমান সফর। তাই এটা ঠিক যে তিন ঘন্টার বিমান সফরে কোনো আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় ইকোনমি ক্লাসে বসে গেলে তার ফিটনেসে তেমন কোনো হেরফের হওয়া উচিত না, আর তেমনটা হয়ও না। তবে এখানে ভন যতই মজার ছলে কথাটা বলে থাকুক না কেন, এটা একদম সত্যি যে ভারতকে যদি বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি জিততে হয়, তাহলে বোলারদের অবদানই হবে প্রধান। কারণ, দিনের শেষে ২০টা উইকেট তাদেরকেই নিতে হবে। একথা অধিনায়ক কোহলি ভালো করেই জানেন।
Witnessed @imVkohli & his wife give up their Business class seats to allow the Quicks more comfort & space on the trip from Adelaide - Perth !! Danger Australia .. Not only are the quicks more relaxed .. The Skipper is managing his troops with great human touches #AUSvIND
— Michael Vaughan (@MichaelVaughan) December 11, 2018
প্রথম টেস্ট থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার। ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডার যদি একটা সম্মানজনক জায়গায় দলকে টেনে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়, তাহলে আমাদের বর্তমানে সেই বোলিং অ্যাটাক আছে যা বিপক্ষকে দুবার আউট করে ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখে। অবশ্য, এটা এই সিরিজে প্রথম দেখছি এমন নয়। ভারতীয় বোলিং ইউনিট ধারাবাহিকভাবে ভালো বল করছে। গত এক বছরে ভালো ছন্দে দেখা গিয়েছে। সেটা আমরা প্রথমে দক্ষিন আফ্রিকা ও পরে ইংল্যান্ড সফরেও দেখেছি।
এটা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে বর্তমান ভারতীয় পেস অ্যাটাক দেশের মধ্যে সর্বকালের সেরা। একসাথে পাঁচ জন (ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ সামি, জসপ্রীত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমার, উমেশ যাদব) প্রতিভাবান বোলার ভারতের কাছে কোনও কালে ছিল না। এবং কেউ এক রকম নয়, সবাই সবার থেকে আলাদা, আর এটাই এই বোলিং আউটফিটের আসল অস্ত্র।
তবে অ্যাডিলেড টেস্ট, পেস বোলার ছাড়াও, দুটি বিশেষ কারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আগামী দিনে যা এই সিরিজের গতিপথ নির্ধারণের দিকে সাহায্য করবে।
প্রথম হলো বিরাট কোহলির অধিনায়কত্ব। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টেস্টে বেশ আক্রমণাত্মক মনে হয়ে বিরাটকে। ম্যাচের রাশ এই মুহূর্তের জন্য হাত ছাড়া করেননি ভারত অধিনায়ক। বরং, গত দুই বিদেশ সফর থেকে শিক্ষা নিয়ে অনেকটাই অন্য মেজাজে দেখা গিয়েছে কোহলিকে ― সেটা ফিল্ডিং সেট করাই হোক বা বোলিং চেঞ্জ, সবটাই করেছেন বেশ কৌশলের সঙ্গে, বিপক্ষকে প্রতিনিয়ত চাপের মুখে রেখে। পরের ম্যাচ গুলো এমন ভঙ্গিতেই টিমকে নেতৃত্ব দিন সেটাই আপামর ভারতবাসীর ওনার থেকে প্রত্যাশা।
সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে বিরাট বাহিনী [সৌজন্যে: ইন্ডিয়া টুডে]
দ্বিতীয় হলো ভারতের ব্যাটিং অর্ডার। গত দুই বিদেশ সফরে তেমন কিছু সুবিধে করে উঠতে পারেনি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। বিরাট কোহলি ছাড়া কেউ তেমন সফল হয়নি। কিন্তু সুখের কথা এই যে, এডিলেড ওভালে কোহলি রান না পাওয়ার সত্ত্বেও বাকিরা দায়িত্ব নিয়ে টিমকে ব্যাটিং ভরাডুবির হাত থেকে বাঁচায়। অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে চেতেশ্বর পুজারার নাম। প্রথম ইনিংসে ওনার গুরুত্বপূর্ণ শতরান ও দ্বিতীয় ইনিংসেও ৭১ ও সহঅধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানের ৭০ রান টিমকে একটা শক্তিশালী জায়গায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে।
এই সব কারণের জন্য পার্থ টেস্টের আগে ভারতীয় শিবিরের মনোবল অনেকটাই উঁচুতে থাকবে। আর তাছাড়া, এটাও ঠিক এই প্রথম ভারত অস্ট্রেলিয়া গিয়ে প্রথম টেস্ট জিতে সিরিজে লিড নিয়েছে। এটা থেকেও অনেকটাই অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত হবে গোটা দল।