মায়াঙ্ক ও পৃথ্বী লম্বা রেসের ঘোড়া, তাঁদের অন্তর্ভুক্তিতে ভারতের ওপেনার সমস্যা মিটবে
স্টেন- ফিঞ্চ-ব্রডদের নতুন বলের বিরুদ্ধে দুই ভারতীয় তরুণের লড়াই দেখার অপেক্ষায় রইলাম
- Total Shares
মায়াঙ্ক আগারওয়াল অসাধারণ। ওপেনার হিসাবে অভিষেক ম্যাচেই নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন তিনি। কর্নাটকের এই ডানহাতি ওপেনার কে দেখে যারপরনাই মুগ্ধ সানি গাভাস্কার। সানিভাই বলেছেন, "ওকে আরও বেশি করে ব্যবহার করা উচিত ভারতীয় দলের।"
নিঃসন্দেহে, মায়াঙ্ক লম্বা রেসের ঘোড়া। ভারতীয় দলকে তিনি যে লম্বা সার্ভিস দিতে এসেছেন সে কথা এখনই হলফ করে বলা যায়। সোজা ব্যাটে খেলেন। বল ছাড়তে পারেন। অসাধারণ সব শট নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। একজন ওপেনারের সমস্ত গুণই রয়েছে মায়াঙ্কের মধ্যে।
সবচেয়ে বড় কথা, হঠাৎ করে পরে পাওয়া সুযোগ পাননি তিনি। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট চুটিয়ে খেলেছেন। ৪৬টি ম্যাচে ৩৫৯৯ রান করেছেন। গড় ৪৯.৯৮। আটটি শতরান ও ২০টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ভারতের এ দলের হয়েও রাহুল দ্রাবিড়ের প্রশিক্ষণের বেশ সফল মায়াঙ্ক। সুতরাং, কঠিন লড়াইয়ের মানসিকতা রয়েছে তাঁর মধ্যে।
ভারতের প্রয়োজন ছিল একজন ওপেনারের। আর, মায়াঙ্কের মধ্যে দিয়ে সেই অভাব পূর্ণ হল বিরাটদের।
পৃথ্বী মায়াঙ্কের আগমনে ওপেনার সমস্যা মিটতে চলেছে ভারতের [ছবি: পিটিআই]
একজন ভালো ওপেনারের জন্য একটি দল কী ভাবে ম্যাচের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করতে পারে তার স্পষ্ট উদাহরণ তো এই টেস্টেই পাওয়া গিয়েছে। প্রথম টেস্টে প্রথম ইনিংসে দুই ওপেনারই ব্যর্থ। কোনও রকমে হাল ধরলেন চেতেশ্বর পূজারা ও বিরাট কোহলি। দ্বিতীয় টেস্টেও ওপেনাররা ব্যর্থ আর মিডল অর্ডার চাপে পড়ে গেল। রোজ রোজ ওপেনাররা ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডারের উপর চাপ বাড়তে বাধ্য।
ওপেনার ভালো খেললে মিডল অর্ডার ভালো খেলবে সে তো এই টেস্টেই প্রমাণিত। প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৪৩ রান তুলে ডিক্লেয়ার করে দিয়েছে ভারত। পূজারা, কোহলি, রোহিত শর্মা - প্রায় প্রত্যেকটি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান রান পেয়েছেন। প্রথম ইনিংসে বড় রান তুলে নেওয়ার ফলে এই টেস্টে মানসিকতার দিক থেকে অনেকটা ভালো জায়গায় থাকবে ভারত।
শেষ বছর দু'য়েক ধরেই ভারতীয় পেস আক্রমণ বেশ শক্তিশালী। শুধু পেস কেন ভারতের বোলিং বিভাগটাই শক্তিশালী। ২০টি উইকেট তুলে নেওয়ার মতো ক্ষমতা এই আক্রমণের রয়েছে। তা সত্ত্বেও, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। তার প্রধান কারণ ওপেনেরারদের ব্যর্থতা। তাই তো বলছি মায়াঙ্কের আগমনের ফলে ভারতের টেস্ট জয়ের সম্ভাবনা অনেকটা বেড়েছে।
আপনারা হয়তো ভাবছেন ওপেন তো দু'জন করবেন। আর একজন ওপেনার কোথা থেকে আসবে। পৃথ্বী সাউয়ের জন্য জায়গাটি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। চোট সারিয়ে ফিরলেই পৃথ্বী মায়াঙ্কের সঙ্গে ওপেন করতে যাবেন।
এর চেয়ে ভালো বিজ্ঞাপন আর ভারতের ক্রিকেটের পক্ষে কী-ই বা হতে পারে? ডেল স্টেন, ফিঞ্চ বা ব্রডদের নতুন বলের মুখে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে লড়ছেন দুই ভারতীয় তরুণ।