আই-লিগ: খেতাবি লড়াইয়ে এখন ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে কলকাতার দু'প্রধান
শেষ সাতটির মধ্যে চারটি হোম ম্যাচ, বাড়তি সুবিধা পাবে ইস্টবেঙ্গল
- Total Shares
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই জোড়া সু-খবর ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। একটি খেলে অন্যটি না খেলে। রবিবার চির-প্রতিদ্বন্ধি মোহনবাগানকে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচটি জিতে আই-লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে রয়ে গিয়েছিল জাস্টিনরা। আর, সোমবার লিগ শীর্ষে থাকা চেন্নাই সিটি-এফসি হেরে যাওয়ায় আবার উচ্চ্বসিত লাল হলুদ শিবির। বর্তমান লিগ টেবিলে এক নম্বর দলের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্টের ব্যবধান অনেকটাই কমে গেল।
আসুন দেখে নেওয়া যাক এই মুহূর্তে কলকাতার দুটি দল - ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান - এ বছরের আই-লিগে ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।
প্রথমে আসা যাক মোহনবাগানের কথায়। ১৪ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট পেয়ে এখন লিগ তালিকায় ছ'নম্বর স্থানে রয়েছে মোহনবাগান। ১১ দলের আই-লিগে আরও চারটি ম্যাচ খেলবে মোহন বাগান। অর্থাৎ, সবকটি ম্যাচ জিতলেও মোহনবাগানের পয়েন্ট দাঁড়াবে ৩২। এই মূহুর্তে শীর্ষে থাকা চেন্নাই এফসির পয়েন্ট ৩০ আর দু'নম্বরে থাকা চার্চিলের পয়েন্ট ২৮। সুতারং, কাগজে কলমে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার একটা সুযোগ থাকলেও, এ বছর আই লিগে মোহনবাগানের চ্যাম্পিয়ন হওয়া যে প্রায় অসম্ভব তা স্বচ্ছন্দেই বলা চলে।
বরঞ্চ কলকাতার আরও একটি দল ইস্টবেঙ্গল কিন্তু প্রথমবার আই-লিগ খেতাব পাওয়ার দাবিদার এখনও। বলা ভালো, বেশ জোরালো দাবিদার।
সোমবার বিকেলে লিগ শীর্ষে থাকা চেন্নাই সিটি এফসি-কে হারিয়ে দিল রিয়াল কাশ্মীর। ১৩ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট ইস্টবেঙ্গলের। চেন্নাই এফসি থেকে মাত্র পাঁচ পয়েন্ট কম। অর্থাৎ, পরের ম্যাচ জিতলেই চেন্নাইয়ের ঘাড়ের উপর নিঃস্বাশ ফেলবে ইস্টবেঙ্গল।
লিগ টেবলের যা অবস্থা তাতে চেন্নাইয়ের পয়েন্ট এখন ১৪ ম্যাচে ৩০। এর পরেই রয়েছে চার্চিল ব্রাদার্স ও রিয়াল কাশ্মীর। দু’দলেরই পয়েন্ট ২৮। তবে এই দুটি দলও ১৪টি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। সেখানে ইস্টবেঙ্গল একটি ম্যাচ কম খেলেছে। এই তথ্যটি নিঃসন্দেহে আলোসান্দ্রোদের খানিকটা হলেও স্বস্তি দেবে।
আই লিগ: খেতাব জয়ের লড়াইয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল [সৌজন্যে: কোয়েস ইস্টবেঙ্গল]
ইস্টবেঙ্গলের শেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে চারটি ঘরের মাঠে খেলবে - নেরোকা, শিলং, চার্চিল ব্রাদার্স ও আইজওয়াল এফসির বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে লিগ তালিকায় শেষতিনটি দলের মধ্যে রয়েছে শিলং ও আইজওয়াল। এই দুটি ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের জেতা উচিত। অর্থাৎ, শেষ সাতটি ম্যাচে ঘরের মাঠের থেকে এই ছ'পয়েন্ট নিশ্চিত করতেই হবে ইস্টবেঙ্গলকে।
তবে ইস্টবেঙ্গলের পরবর্তী ম্যাচ লিগ তালিকায় চার নম্বরে থাকা নেরোকার বিরুদ্ধে। প্রথম রাউন্ডে নেরোকার ঘরের মাঠে নেরোকাকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এই ম্যাচেটি জিততে পারলে ইস্টবেঙ্গল যে খেতাবের অনেকটাই কাছাকাছি চলে যাবে তা ইস্টবেঙ্গল সমর্থক মাত্রেই জানে।
শেষ সত্যি ম্যাচে আরও একটি সুবিধা পাবে ইস্টবেঙ্গল। লিগ তালিকায় দু'নম্বরে থাকা চার্চিল ব্রাদার্সকে ঘরের মাঠে খেলতে হবে তাদের। প্রথম রাউন্ডে গোয়াতে ইস্টবেঙ্গলের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল চার্চিল।
ইস্টবেঙ্গলের তিনটি অ্যাওয়ে ম্যাচ কাশ্মীর, মিনার্ভা ও গোকুলমের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১৪ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট পাওয়া কাশ্মীরের বিরুদ্ধে খেলাটা নিঃসন্দেহে কঠিন। সেই তুলনায়, লিগ তালিকায় সাত নম্বরে থাকা মিনার্ভার বিরুদ্ধে খেলাটা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে।
তবে, এই মুহূর্তে, লাল হলুদের শিবির আরও একটি বড় সুবিধা দেখতে পাচ্ছে। শেষ কয়েক বছর ধরেই শেষ দিনের ম্যাচগুলোতেই আই-লিগ চ্যাম্পিয়ন ঠিক হচ্ছে। ইস্টবেঙ্গলের শেষ ম্যাচ অ্যাওয়ে হলেও তা অপেক্ষাকৃত দুর্বল, দশ নম্বরে থাকা গোকুলমের বিরুদ্ধে।
তবে শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হতে পারে কিনা তা জানতে হলে আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।