কর্নাটক ভোট: জয়ী বিজেপি, সরকার কংগ্রেসের, মুখ্যমন্ত্রী জেডিএসের

গোয়া-মণিপুরে কংগ্রেসের গ্রাস ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি, এবার তারা জিতেও বিরোধী আসনে

 |  3-minute read |   15-05-2018
  • Total Shares

গোয়া-মণিপুরের সঙ্গে তুলনা হয় না ঠিকই, তবে এ বার সর্বশক্তি দিয়ে বিজেপিকে আটকে দিল কংগ্রেস আর যৎসামান্য আসন নিয়ে রাজ্যপালকে সরকার গঠনের চিঠি পাঠিয়ে দিলেন জনতা দল (সেকুলার)বা জেডিএসের এইচডি কুমারস্বামী।

কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী

২২৪ আসনের কর্নাটক বিধানসভায় ভোটের গতিপ্রকৃতি যখন স্পষ্ট হতে শুরু করেছে, তখনই একটি টিভি চ্যানেলে ডেডিএসের মুখপাত্র প্রসাদ গৌড়া জানিয়ে দেন, কুমারস্বামীকে প্রধানমন্ত্রী পদে যে দল সমর্থন করবে, তারই সমর্থন নেবে জেডিএস। বিজেপি তখন ক্রমেই সরকার গড়ার জন্য দরকারি ১১২টি আসনের (ভোট হয়েছে ২২২টি আসনে) দিকে এগোচ্ছে। তারপরে সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে অনেকটা এগিয়েও গেল।

কিন্তু থামল ১০৪-এ, একক বৃহত্তম দল হিসাবে বাকিদের অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়ে দৌড় শেষ করল বিজেপি। বিজেপি যখন ১১২ আসনে জয়ের আশা থেকে ক্রমেই পিছিয়ে যাচ্ছে, তখনই মোক্ষম চাল চেলে দিল কংগ্রেস। তারা জানিয়ে দিল, বিজেপিকে কর্নাটকে আটকাতে এইচডি দেবগৌড়ার জেডিএসকে সমর্থন করছে। সমর্থন পেয়ে দেরি করেননি দেবগৌড়ার ছেলে কুমারস্বামী, দলের জনভিত্তি না থাক, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে চান। 

কংগ্রেসের পরাজয়

পিছিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত বাদামি আসনে জিতে মুখরক্ষা করছেন কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, যদিও হেরেছেন আগেরবার জেতা আসন চামুণ্ডেশ্বরীতে। তবে দল ৭৮টি আসনে দৌড় শেষ করায় নিয়মমাফিক পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে দেন তিনি। কর্নাটকে বিজেপি জয়ী হলেও সরকার গড়ছে কংগ্রেস। গোয়া ও মণিপুরে কংগ্রেস জয়ী হলেও বিজেপি সরকার গড়েছে এবং পরে সংখ্যাগরিষ্ঠতাও অর্জন করে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য সেই সুযোগ বিজেপি আর পায়নি। নির্দল প্রার্থীরা জেডিএসকে সমর্থনের কথা বলায়, রাজভবনের দিকে এগনোর রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায় বিজেপির। ১১৩ আসন থেকে বিজেপি অনেকটা দূরে থাকায়, এখনও যে দুটি আসনে নির্বাচন বাকি রয়েছে, সই আসনে ফলাফল আপাতত গুরুত্বহীন হয়ে গেল।

জয়ী মোদী, রাহুলও

কর্নাটকে প্রথম দিকে বড় জনসভা করছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ নিজে। সংগঠন যেমন দক্ষ ভাবে তিনি সামলাতে পারেন, তেমন ভাবে বক্তৃতা তিনি করতে পারেন না। তাই বারে বারে তাঁর ভুল বিড়ম্বনায় ফেলেছে বিজেপিকে। তাই দলের পালে হাওয়া টানতে শেষ পর্যন্ত ভোটের প্রচারে আসেন বিজেপির তুরুপের তাস নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি মনে করছে, বিজেপি যে সরকার গড়ার কাছাকাছি পৌঁছেছে, সেই কৃতিত্ব মোদীরই। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির যোগী আদিত্যনাথের কৃতিত্বও অবশ্য কম নয়, যে ২১টি আসনে তিনি প্রচার করেছেন, সেই সব আসনেই বিজেপি ভালো ফল করেছে। তবে সর্বশেষ লোকসভা ভোটের কথা ধরলে, বিজেপি আরও বেশি আসন পেতে পারত, অন্তত দেড় ডজন বেশি।

result_051518084355.jpg

আসনসংখ্যার নিরিখে বিজেপি এগিয়ে থাকলেও, প্রাপ্ত ভোটের বিচারে এ বার বিজেপিকে পিছনে ফেলে দিয়েছে কংগ্রেস। ব্যবধান প্রায় ২ শতাংশ। আসন সংখ্যার বিচারে বিজেপির কাছে গো-হারা হারলেও, ভোটের শতাংশের হিসাবে এগিয়ে থাকাটা নিশ্চয়ই রাহুল গান্ধীর জয় হিসাবেই দেখতে চাইবে কংগ্রেস। দিনের মাস্টারস্ট্রোক যদি কিছু থাকে, তা হল সনিয়া গান্ধীর চাল, জেডিএস-কে সমর্থন করে দেওয়া। এর পরেও অবশ্য রাজ্যপালের কাছে সময় চেয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা।

দিনের শেষে একটাই প্রশ্ন, কতদিন টিঁকবে এই সংখ্যালঘু সরকার।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SUMITRO BANDYOPADHYAY
Comment