আমরা পুলওয়ামা দেখলাম – এমন ঘটনা আবার ঘটতে পারে
এমন কাপুরুষোচিত ঘটনা কাশ্মীর তো বটেই, অন্যত্রও ঘটবে। এবার নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে
- Total Shares
শুধুমাত্র নির্বোধ – অথবা তাদের মতো লোকজন – এরাই পুলওয়ামায় হামলায় ভয়াবহতা দেখতে পাবে না, যে হামলায় বহু সিআপপিএফ জওয়ানের জীবন বলি হয়ে গেল।
পুলওয়ামায় হামলা: এটা কি শুধুমাত্র শুরু? (উৎস: রয়টার্স)
ঘটনা হল ওই দিনের হামলার প্রস্তুতি – যা বিগত দুই দশকের মধ্যে কাশ্মীরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা – আসলে শুরু হয়েছিল ১৭ জানুয়ারি, যখন রাজ্যের রাজধানী শ্রীনগরের কেন্দ্রস্থল, ঘরবাড়ি, অফিস ও মিডিয়ায় ভরা রাজবাগ এলাকায় গ্রেনেড হামলা হয়েছিল তাতেও বেশ কয়েকজন পুলিশ আধিকারিক আহত হয়েছিলেন।
এই কাপুরুষতার লজ্জাজনক দায়ভার গ্রহণ করেছিল জঈশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)। তারপরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শ্রীনগরের শোপিয়ানে আরও দু’টি গ্রেনেড হামলা হয়েছিল এবং তার জের ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো অঞ্চল জুড়ে।
১০ ফেব্রুয়ারি – এর চার দিন আগে – শ্রীনগরের লালচকে একটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়েছিল এবং তাতে ১১ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিলেন।
লক্ষ্য একেবারে নিখুঁত ছিল, তাদের উদ্দেশ্যও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
শ্রীনগরের গ্রেনেড হামলা ছিল সূচনা, একে সেই ভাবেই ব্যাখ্যা করা উচিত। (উৎস: এএনআই)
এগুলির কোনওটাই আচমকা ঘটে যাওয়া ঘটনা নয়, এগুলোও ঘটিয়েছিল সেই দুর্বলচিত্ত কাশ্মীরি জঙ্গিরা যারা মনে করে আনন্দের সময় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দাও তাতে যেটুকু যা পাওয়া যায়। এটা হল তাদের একটি সুস্পষ্ট অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত – কয়েকটি ছোটখাট প্রচেষ্টা, ভয়ঙ্কর ধরনের একটা প্রচেষ্টা – সব কিছুর পিছনে একই উদ্দেশ্য।
- ভয়ঙ্কর হামলা
-
ভয়ঙ্কর আক্রমণ
-
ভয়ঙ্কর নারকীয়তা
সে দিনের পুলওয়ামায় আচমকা জঙ্গি হামলা একেবারেই তাই-ই ছিল।
এবং এটি প্রথমবার।
মনে করা হচ্ছে যে আফগানিস্তানের পরিস্থিতির জট পুরোটাই খুলে গিয়েছে, এবং পাকিস্তান তাদের মাটিতে লালিত উন্মত্ত লোকজনকে নিয়ে ভয়ঙ্কর খেলা খেলতে চাইছে, সারাক্ষণই তারা সীমান্ত পেরিয়ে আমাদের কাশ্মীরে প্রবেশ করার জন্য নিশপিশ করতে থাকে এবং আমাদের জীবন নিয়ে খেলার জন্য উদগ্র হয়ে থাকে, এই অবস্থায় ভারত এই ধরনের আরও হামলার আশঙ্কা করতে পারে। ওরা জানে যে পরিপূর্ণ ভাবে যুদ্ধ হলে আমাদের শক্তির সঙ্গে ওরা এঁটে উঠতে পারবে না, জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি পুরোপুরি সাফ হয়ে যাবে, মগজধোলাই হয়ে যাওয়া জড়বুদ্ধিসম্পন্ন লোকগুলো – তারা সীমান্তের ওপারের হোক বা ভারতের ভিতরের হোক – যারা মাঝেমধ্যে গ্রেনেড ছুড়ে পালিয়ে যায়, আইইডি সেট করে এবং দ্রুত পালিয়ে যায় এবং মাঝেমধ্যে নিজেদের অকিঞ্চিৎকর জীবনটাকে উড়িয়ে দেয় (যেমন পুলওয়ামার আত্মঘাতী বোমারু, প্রতিবেদন অনুয়ায়ী আফগানিস্তানে তার প্রশিক্ষণ হয়েছিল, ২০০ কেজি বিস্ফোরক বোঝাই একটি এসইউভি চালিয়ে এসেছিল) শুধুমাত্র বেদনাদায়ক ‘ফিদায়েঁ’ তকমা পাওয়ার জন্য।
পুলওয়ামায় এই কাপুরুষোচিত ঘটনার দায় দাবি করেছে জঈশ-ই-মহম্মদ (সূত্র: টুইটার)
এখন ভারতের সময় সব ধরনের কৌশল ও অন্তরাত্মা একত্রিত করা, অত্যন্ত দ্রুততা ও উপযুক্ত বিবেচনার মাধ্যমে – বলাই বাহুল্য, সেনাগোয়েন্দা ও সম্পদ এর অন্তর্ভুক্ত।
এখন নিত্যনৈমিত্তিক রাজনৈতিক কূটকচালি ও স্বার্থের সঙ্ঘাত ছেড়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়, প্রতিবেশী ও তাদের সহযোগীর বদবুদ্ধির বিরুদ্ধে একটি জাতি হিসাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।
আর আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে যাতে সর্বতো ভাবে শক্তিশালী করা যায় সে জন্য আমাদের যা করার তাই-ই করতে হবে, এর জন্য সেরা সম্পদ, তীক্ষ্ণতম জ্ঞান, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সমরাস্ত্র, এবং এই সুযোগ না হারানো – হয়তো ইচ্ছাকৃত ভাবেই – রাজনৈতিক গরম বাতাস নিজের অনুকূলে টানার জন্য।
- এবং সেই হারানো জীবন।
-
ভারতীয়দের জীবন।
-
যা অমূল্য।
-
যা রক্ষা করতেই হবে।
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে