রাজ্য নির্বাচন কমিশনার যেন সরকারকে প্রভু জ্ঞান করে নির্দেশ পালন করছেন
অবিলম্বে এই নির্বাচন কমিশনারকে অপসারিত করতে হবে
- Total Shares
পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদল এবং নির্বাচন কমিশন যে ভূমিকা পালন করছেন, এটা প্রকৃতপক্ষে এই ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনকে একেবারে প্রহসনে পরিণত করছে। ভারতের যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি, যাকে ভারতের সংবিধানের মূল কাঠামো বলে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, তাকেই রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের নির্বাচন কমিশন একযোগে ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
মানুষ নির্বাচনে ভোট দান করবেন তাঁদের পছন্দমতো প্রার্থীকে বা তাঁদের পছন্দমতো রাজনৈতিক দলকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে জেতাবেন, এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম। কিন্তু রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এখন প্রার্থীপদ দাখিল করার ক্ষেত্রেই বাধা সৃষ্টি করছে। মনোনয়ন পত্রই দাখিল করতে দিচ্ছে না।
শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত ভোটের দাবিতে মিছিল কলকাতায়
প্রার্থীরা যদি কেউ মনোনয়ন পত্র দাখিলই না করতে পারেন তা হলে নির্বাচন কী ভাবে হবে? মানুষের মতামত কী ভাবে প্রতিফলিত হবে? একেবারে ফ্যাসিস্ত কায়দায় সরকার চলছে। পরিকল্পিত ভাবেই এ কাজ করছে রাজ্যের শাসকদল যাতে মানুষ সব সময়ই ভয়ে থাকেন, এবং ওঁরা মানুষকে ভয় পাইয়ে রেখে বাধ্য করছেন ওঁদের অপকর্মগুলোকে সহ্য করতে।
গত সাত বছরে যে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার পশ্চিমবঙ্গকে ঋণভারে জর্জরিত করেছে, কোনও ক্ষেত্রেই কোনও অগ্রগতির লক্ষণ নেই, শুধুমাত্র টাকা ধার করা এবং সরকারি টাকায় বিজ্ঞাপন করা ছাড়া। সব বিজ্ঞাপনই অসত্য।এই সব কথা যখনই প্রকাশিত হচ্ছে, তখনই রাজ্যের শাসকদল নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি বানচাল করার চেষ্টা করছে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন
আদালতের রায়ে এ কথা স্পষ্ট বলা হয়েছে, স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন সংগঠিত করতে নির্বাচন কমিশনকে উদ্যোগী হতে হবে। কিন্তু আমরা পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন কমিশনের যে ভূমিকা দেখছি, তা একেবারেই ন্যক্কারজনক। মনে হচ্ছে যেন প্রভু-ভৃত্যের সম্পর্ক। কে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার যেন ভৃত্যের মতো মুখ্যমন্ত্রী এবং সরকারকে প্রভু জ্ঞান করে তাদের নির্দেশ পালন করছেন, কমিশনার স্বাধীন সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছেন না। তাই অবিলম্বে এই নির্বাচন কমিশনারকে অপসারিত করে স্বাধীনচেতা কোনও আধিকারিককে এই পদে নিয়োগ করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের সাধারণ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা নেই। দিনের পর দিন চারিদিকে খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি হয়েই চলেছে। এই পুলিশবাহিনী দিয়ে আর যাই হোক, নির্বাচন করানো যাবে না। তার কারণ, এই পুলিশকে আমরা দেখেছি, তৃণমূল কংগ্রেস যখন থানায় গিয়ে হামলা করে, কথন তারা টেবিলের তলায়, বেঞ্চের তলায় গিয়ে আশ্রয় নেয়, সেখানে লুকিয়ে পড়ে।
এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে মানুষ যাতে স্বাধীন ভাবে ভোট দিতে পারে, সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যদি ভারতের সংবিধানকে রক্ষা করতে হয়, নতুবা আমাদের সামনে বড় ভয়াবহ দিন।