লিঙ্গায়েতের পর এ বার পৃথক ধর্মের স্বীকৃতি চান ‘সারনা’রা
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা ও অসমে এই জনজাতির বাস
- Total Shares
কর্নাটকে লিঙ্গায়েতকে আলাদা ধর্মের স্বীকৃতি দেওয়ার পরে এ বার ঝাড়খণ্ড দেশম পার্টির (জেডিপি) পক্ষ থেকেও দাবি উঠল ‘সারনা’কে আলাদা ধর্ম হিসাবে ঘোষণা করার। তাঁরা আর তফসিলি জাতি-উপজাতির তকমা নিয়ে সন্তুষ্ট তো ননই, উপরন্তু যাঁরা আদৌ আদিবাসী নন, তাঁদের তফসিলি উপজাতির তকমা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে জেডিপি। ধর্মের পাশাপাশি তাঁদের ভাষার আলাদা স্বীকৃতির দাবিতেও সরব হয়েছে ঝাড়খণ্ড দেশম পার্টি। দলের রাজ্য সভাপতি পানমণি বেসরা তাঁদের দাবি আদায়ে ভারত বন্.ধের ডাক দিয়েছিলেন।
#Lingyayat is separated from #Hindu now #Pandora box opened. listen to #JDP #bharatbandh pic.twitter.com/3BG2bgdse6
— SumitroBandyopadhyay (@sumitrob) May 21, 2018
লিঙ্গায়তরা শিবের পূজারি হলেও তাঁদের আলাদা স্বীকৃতির পিছনে যে প্রকৃতিপূজার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল, এখানেও সেই প্রকৃতিপূজাকেই হাতিয়ার করে সারনা-কে আলাদা ধর্ম হিসাবে মান্যতা দেওয়ার দাবি তাঁরা তুলছেন। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা ও অসমে এই জনজাতির বাস, তাই রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি এই পরাঁচ রাজ্যের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের ১০ দফা দাবি সংবলিত চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে সংগঠনটি।
নতুন ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলন এ বার এ রাজ্যেও
সাঁওতালি ভাষা অষ্টম তফসিলভুক্ত হলেও কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্যগুলির সরকার এই ভাষার বিকাশে কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। এই ভাষায় পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিই সার বলে তাঁরা মনে করেন। ভোটের মুখে আদিবাসী নয় এমন অনেক জনগোষ্ঠীকে তপসিলি উপজাতির তালিকায় বিজেপি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ও এ রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস ঢুকিয়ে দিচ্ছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। তা ছাড়া ঝাড়খণ্ডে ২০১৭ সালে প্রণয়ন হওয়া জমি অধিগ্রহণ আইনের বিরোধিতাও তারা করেছে।
রেল অবরোধ করে আন্দোলন
মুখে উন্নয়নের কথা বললেও ভোটের মুখে জাতপাতের রাজনীতি এ দেশে নতুন কিছু নয়। কখনও প্যাটেল তো কখনও লিঙ্গায়েত, বারে বারেই রাজনৈতিক দলগুলি প্যান্ডোরার বাক্সটি খুলে দেয় তার পরিণামের কথা জেনেও। দেশে যতদিন না জাতপাতের ও পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি বন্ধ হবে, ততদিন এই ধরনের একের পর এক দাবি উঠতেই থাকবে।
আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের ব্যানারে সোমবার তাঁরা বেশ কয়েক জায়গায় রেল অবরোধও করেন।
আদিবাসীদের অভিযোগ, ভোটের মুখে স্থানীয় স্তরে তাঁদের নানারকম প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, কিন্তু কোনও দলের নেতাই খোলাখুলি ভাবে তাঁদের দাবিকে কখনও সমর্থন করেননি। প্রতিটি ভোটের আগেই তাঁরা প্রতিশ্রুতি পান, কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ আর হয় না। তাই এ রাজ্যের বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার মতো জেলাগুলো যেমন দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জেলার তালিকায় ছিল, সেই তালিকাতেই রয়ে যায়। উন্নয়নের মুখ আর দেখা হয় না এই সব জেলার আদিবাসী মানুষজনের।