হেভিওয়েটদের প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দিয়ে হিন্দুত্ব থেকে দূরে থাকতে চাইল বিজেপি
দুই মুসলমান-বিরোধী বর্ষীয়ান বিধায়ককে নির্বাচনের টিকিট দেওয়া হল না
- Total Shares
রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনের জন্য দ্বিতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল বিজেপি।
দুটি প্রার্থী তালিকাতেই কোনও মুসলমান প্রার্থীকে মনোনীত করা হয়নি। উল্টে দলের দুই সামনের সারির নেতাকে প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আলোয়ার জেলার দুই দোর্দণ্ডপ্রতাপ বিধায়ক জ্ঞানদেব আহুজা ও বনওয়ারী লাল সিংহল। কিন্তু প্রথম দু'টি তালিকাতেই তাঁদের নাম রাখা হয়নি। দু'জই অবশ্য বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বেশ পরিচিত।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ধর্মীয় রাজনীতির থেকে এ বার কিছুটা দূরত্ব বজায় করবার চেষ্টা করে চলেছে বিজেপি।
জ্ঞানদেব আহুজা আলোয়ারের রামগড়ের বিদায়ী বিধায়ক। এই আসনে এবার বিজেপি সুখবন্ত সিংকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন। উল্টোদিকে, আলোয়ার শহরাঞ্চল আসনটির থেকে বনওয়ারী লাল সিংহলের জায়গায় সঞ্জয় শর্মাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছেন।
সম্প্রতি আহুজার সঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বিতর্ক চরমে পৌছেছিল। বছরের শুরুতে উপনির্বাচনগুলোতে বিজেপির শোচনীয় হারের পর তিনি বসুন্ধরা রাজের পদত্যাগ দাবি করেছিলেন। একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে যে রাজ্য নেতৃত্ব বদল না হলে রাজস্থানে বিজেপির অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠবে।
আলোয়ার ও আজমের লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দু'টি কেন্দ্রে অন্তর্ভুক্ত ১৭টি বিধানসভা আসনেই বিজেপি পিছিয়ে ছিল। এমনকি, মণ্ডলগড় আসনের উপনির্বাচনেও জিততে পারেনি বিজেপি।
তবে আহুজার বিতর্কে জড়িয়ে পড়া এই প্রথম নয়। এর আগে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তিনি। আহুজা বলেছিলেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্ত্বরে প্রতিদিন হাজার হাজার কন্ডোম পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর আগে আলোয়ারে গো-রক্ষকের ভূমিকা পালন করতে গিয়েও বিতর্কের সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি।
রাজস্থানের দুই হেভিওয়েট প্রার্থীকে টিকিট দেয়নি বিজেপি
প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়ার পরে তিনি ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছেন, "এই বিষয়ে আমি এখন কোনও মন্তব্য করছি না।"
আলোয়ার শহরাঞ্চলের বিধায়ক বনওয়ারী লাল সিংহল বহুবার মুসলমানদের আক্রমণ করেছেন। সিংহল একবার দাবি করেছিলেন, "দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি করে চলেছে মুসলমানরা যাতে তারা ২০৩০ সাল থেকে দেশ শাসন করতে পারে।"
"এক হিন্দু দম্পতি যখন এক কী বড়জোর দুটি শিশুর জন্মদান করে, তখন মুসলমানদের ঘরে আট থেকে ১০ কখনও কখনও আবার ১৪টি শিশুও জনগ্রহণ করে। অনেক সময় মুসলমান দম্পতি মহিলা কিনে এনে তার গর্ভে শিশুর জন্ম নিশ্চিত করে। এর ফলে দেশের মুসলমান জনসংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে দেশের রাজ্যগুলোতে মুসলমান মুখ্যমন্ত্রীর সংখ্যা বাড়বে, এমনকি একদিন মুসলমান সম্প্রদায়ের কেউ দেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি হবেন। এর পরে এমন আইন প্রবর্তন করা হবে যে এ দেশে হিন্দুদের টেকা দায় হয়ে পড়বে," সিংহল একবার বলেছিলেন।
সিংহল অবশ্য টিকিট না পাওয়ার পর মুখ খুলেছেন।
তিনি বলেছেন, "আমি শুধু একটা কথা বলতে চাই। আমি হিন্দু ঘরে জন্মগ্রহণ করেছি এবং আজীবন হিন্দু থাকব। হিন্দুত্বে বিশ্বাস করি বলে যদি আমাকে বঞ্চিত করা হল তা হলে শুধু একবার নয় বারবার আমি বঞ্চনার শিকার হতে রাজি আছি। শুধু ভোটের টিকিট নয়, এদেশে হিন্দুত্ব রক্ষা করতে আমি আমার জীবনও দিয়ে দিতে পারি। হিন্দুরা যদি ভারতেই নিরাপদে না থাকতে পারে তাহলে পৃথিবীর আর কোন দেশে থাকবে?"
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে