বায়ুসেনার এয়ার স্ট্রাইক: মোদী কেন রাফেল নিয়ে কংগ্রেসের উপর দোষারোপ করতে পারেনা
রাফেল যুদ্ধবিমান ক্রয়ের সংখ্যা কেন ১২৬ থেকে মাত্র ৩৬ হয়ে গেল, জবাব দিক মোদী
- Total Shares
পাকিস্তানের সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে এ মুহূর্তে জোর তর্ক চলছে। আসমুদ্রহিমাচল যখন পাকিস্তানে অবস্থিত জঙ্গি ঘাঁটিগুলো গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য উৎসবে মেতেছে তখন বেশ কয়েকটি ইস্যু প্রকাশ্যে এসেছে।
তার মধ্যে সবচাইতে বড় প্রশ্ন ভারতীয় বায়ুসেনা কতটা সুসজ্জিত।
ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ২০১৯-এ উপস্থিত হয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ইস্যুটি তুলে ধরেছেন। মোদী জানিয়েছেন, "ভারত রাফেলের অভাব বোধ করছে। গোটা দেশ এখন একটাই কথা বলছে - আমাদের কাছে রাফেল থাকলে ফলাফল অন্যরকম হতে পারত। রাফেল নিয়ে রাজনীতি আর আগের সরকারের স্বার্থপরতার জন্য দেশকে প্রচুর ভুগতে হয়েছে।"
Speaking at the India Today Conclave on a wide range of issues. Watch! https://t.co/9v2U0dQfH3
— Narendra Modi (@narendramodi) March 2, 2019
আমার মতে, এই ধরণের মন্তব্য না করাই ভালো। অভ্যন্তরীণ রাজনীতি কোনও মতেই দেশের প্রতিরক্ষা কৌশলের উর্দ্ধে না উঠে যায়, এই বিষয়টি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
সকলেই জানেন যে ২০১৪-১৫ সালে কংগ্রেস সরকার ফ্রান্স থেকে ১২৬ রাফেল যুদ্ধবিমান ক্রয় করার সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা করে ফেলেছিল। মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধবিমান ক্রয়ের সংখ্যা এক লাফে ৩৬টি করে দেওয়া হয়েছিল।
তাই, এখন সকলের একটি প্রশ্নই করা উচিত - কোন কারণে যুদ্ধবিমান ক্রয়ের সংখ্যা ১২৬ থেকে নামিয়ে ছত্রিশ করে ফেলা হল?
বালাকোটের এয়ার স্ট্রাইক নিয়েও বেশ কয়েকটি প্রশ্ন চিহ্ন রয়েছে। বায়ুসেনা কিংবা আর কোনও বিশেষজ্ঞই এখনও পর্যন্ত এয়ার স্ট্রাইকের প্রভাব নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। এয়ার স্ট্রাইকে হতাহতের সংখ্যা নিয়েও বায়ুসেনার তরফ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
ভারতের উচিত সেনাবাহিনীর প্রযুক্তি উন্নয়ন করা [ছবি: রয়টার্স]
কিন্তু বায়ুসেনার পারফরমেন্স সমস্ত রকম প্রত্যাশাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে, উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান মিগ ২১ বাইসন দিয়ে পাকিস্তানের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানকে পরাস্ত করার পর।
কিন্তু একটা বিষয়ে এখান থেকে পরিষ্কার - বায়ুসেনার এখন আরও উন্নত প্রযুক্তির যুদ্ধবিমানের প্রয়োজন রয়েছে।
প্রযুক্তির উন্নয়নের পাশাপাশি, পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদীদের মদত দেয় তার সমস্ত তথ্য প্রমান নিয়ে ভারতের গোটা বিশ্বের কাছে দরবার করা উচিত।
ইন্ডিয়া টুডের কনক্লেভে নরেন্দ্র মোদী [ছবি: ইন্ডিয়া টুডে]
কাশ্মীরিকে ৩৫এ ধারাটির মতো আর যা যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তাও আমাদের পূরণ করা উচিত।
পরিশেষে মোদীর আরও একটি মন্তব্য খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে, "এতদিন ধরে যারা দেশকে শাসন করে এসেছে তাদের শুধুমাত্র দুটি জিনিসের উপরই আগ্রহ ছিল - দান ও লেনদেন। এই সংস্কৃতি কিন্তু দেশের প্রচুর ক্ষতি করেছে।"
দোল বলতে মোদী দেশের প্রত্যন্ত মানুষদের সাহায্যের কথা বোঝাতে চেয়েছেন। ইউপিএ আমলে চালু হওয়া এনআরইজিএ-এর মতো প্রকল্পগুলো এর মধ্যে পড়ে। মোদী সরকার অবশ্য এই প্রকল্পটি নিয়ে কোনও দিনও উৎসাহ দেখায়নি। যদিও, অনেকেই মনে করে এটা কোনও অনুদান বা দান নয়, বরঞ্চ দেশের দরিদ্র জনগণের প্রাপ্য।
আর লেনদেনের যে অভিযোগ মোদী তুলেছেন তার পাল্টা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে - মোদীর দলও কি একই অভিযোগে দোষী নয়? রাজনৈতিক নেতারা যখন পয়সা দিয়ে বিধায়ক কেনা বেচা করে তখন কি তাকে অসাধু লেনদেন বলা চলে না?
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে