তৃণমূল যদি কিছুই না করে তাহলে শাসক দলের নেতারা ভয় পাচ্ছেন কেন?
ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে চতুস্তরীয় সন্ত্রাস ছড়াল তৃণমূল
- Total Shares
ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে চারটি ধাপে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল শাসক তৃণমূল। কী কী সেই চারটি ধাপ? এক নম্বর, মনোনয়ন পেশ করতে না দেওয়া। দুই, যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছিলেন তাঁদের নানা ভাবে হুমকি দিয়ে ও হেনস্তা করে প্রচার করতে না দেওয়া। তিন নম্বর, ভোটের দিন জোর করে বুথে ঢুকে রিগিং করা। আর, সব শেষে, বিরোধী শিবির থেকে যাঁরা জয়ী হয়েছেন তাঁদের দিবারাত্র উত্তক্ত্য করা।
বস্তুত পক্ষে তৃণমূল কংগ্রেস ভয় পেয়েছে। দলীয় নেতারা আশঙ্কায় ভুগছেন যে মানুষ যদি নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তাহলে তাঁদের দিন শেষ। বাংলার মসনদ থেকে সরে যেতে হবে তৃণমূলকে। তাই হার অবশ্যম্ভাবী বুঝতে পেরে আতঙ্কের বাতাবরণ সৃষ্টি করে চলেছে তৃণমূল।
হার অবশ্যম্ভাবী বুঝতে পেরে আতঙ্কের বাতাবরণ সৃষ্টি করে চলেছে তৃণমূল
এই একই খেলা বাংলাতে খেলতে গিয়েছিল সিপিএম। ছোট আঙ্গারিয়া থেকে শুরু করে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম থেকে শুরু করে গড়বেতা সিপিএমের নৃশংসতার নজির তো কম নেই। কিন্তু লাভের লাভ কী হল? যেদিন মানুষ ভোট দিতে পারল সেদিনই এই বাংলায় শেষ হয়ে গেল ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসন। একই সঙ্গে রাজ্য থেকে ধুয়ে-মুছে গেল সিপিএম দলটির অস্তিত্ব। ত্রিপুরাতেও সিপিএমের একই পরিণতি হয়েছে।
এবার তৃণমূলের পালা। মানুষ যেদিন ভোট দিতে পারবে সেদিন এই বাংলা থেকে তৃণমূলের নামও মুছে যাবে। নিজেদের পরাজয় রোধ করতে যে পথ অবলম্বন করেছে তৃণমূল তা আরও মারাত্মক। তৃণমূলের এই ভীতি প্রদর্শনের স্ট্রাটেজি কিন্তু বুমেরাং হয়ে তাঁদেরই বিরুদ্ধে যাবে।
ফলাফলের পরে কর্নাটকে বিস্তর নাটক হল। সবচেয়ে বেশি আসনে জিতে সরকার গড়েছিল বিজেপি। কিন্তু জেডিএসের সঙ্গে জোট বেঁধে পিছনের দরজা দিয়ে সরকার গঠন করল কংগ্রেস। কিন্তু, এত কিছুর পরেও সেখানে তো কোনও সন্ত্রাস হয়নি।
উত্তরপ্রদেশে একটি বিধানসভা আসন একটি লোকসভা আসন জিততে মরিয়া ছিল সেই রাজ্যের শাসক দল বিজেপি। কিন্তু দু'টি আসনেই পরাজিত হয়েছে বিজেপি। সেখানেও তো কোনও সন্ত্রাসের খবর শোনা যায়নি। পুলিশ তো কাউকে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করেনি।
যত সমস্যা পশ্চিমবঙ্গে। এখানে আদিবাসী কিশোর খুন হলে সরকার প্রথমে সিআইডিকে তদন্তভার গ্রহণ করতে বলে। তারপর জেলার এসপি বিবৃতি দেন যে কিশোরটি আত্মহত্যা করেছে। অর্থাৎ, সিআইডি কোন পথে তদন্ত করবে তাও ঠিক করে দেওয়া হল।
এভাবে চললে তৃণমূলের বিদায় ঘণ্টা বাজে সময়ের অপেক্ষা
তদন্তভার সিআইডিকে দেওয়ার পর এই ধরণের বিবৃতি দেওয়ার কোনও অধিকার নেই জেলার এসপির।
সমস্যা অন্য জায়গায়ও রয়েছে। এসপি যখন আত্মহত্যার কথা বলছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তদন্তের অভিমুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন। তাঁদের দাবি, ঝাড়খন্ড থেকে বহিরাগতরা এসে যুবককে হত্যা করেছেন। কখনও তাঁরা বলছেন এই বহিরাগতরা বিজেপি সমর্থক আবার কখনও তাঁদের দাবি বহিরাগতরা আরএসএস করে। কীসে এত ভয় পাচ্ছেন শাসক দলের নেতারা। তাঁরা যদি কিছু নাই করে থাকেন তাহলে ভয় পাওয়ার কী আছে।
বাংলার মানুষ কিন্তু মূর্খ নন। সিপিএমের অত্যাচারে জর্জরিত ছিল বাংলার জনগণ। কিন্তু যেদিন নির্ভয় ভোট দিতে পেরেছিল সেদিন সিপিএমকে সরিয়ে গণতন্ত্রকে জিতিয়েছিল এই বাংলার জনগণ। এবার তৃণমূলের বিদায় ঘণ্টা বাজার পালা।