পুলওয়ামা এবং তার পরে: ভারতের কি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা উচিত?
রাজনীতির বশবর্তী হয়ে যুদ্ধ যেমন ঠিক নয়, আবার হাত গুটিয়ে বসেও তো থাকা যায় না
- Total Shares
সেই বিদেশনীতিকেই পরিণত বলব যেটি সক্রিয়, প্রতিক্রিয়া-নির্ভর নয়। কোনও ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কিছু করার অর্থ হল, শত্রুপক্ষকে তার লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তার হাতে বিষয়টি নির্ণয়ের ক্ষমতা তুলে দেওয়া। সক্রিয় নীতি থাকার ফলে বোঝা যায় যে তারা দুর্বৃত্তদের আমাদের দিকে লেলিয়ে দিয়ে ইচ্ছামতো আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে। ধর্ম যদি কারও পেশা হয় তা হলে বাস্তবধর্মী রাজনীতির বাঁধাধরা গতের বাইরে গিয়ে ও তাঁর বাধ্যবাধকতা ছাপিয়েই তা বিবেচনা করব।
পুলওয়ামার ঘটনায় প্রতিটি ভারতীয় ক্রোধ ও দুঃখে নিমজ্জিত হয়ে গেছেন। (ছবি: রয়টার্স)
ইতিহাস নিয়ে আমার স্বল্প জ্ঞান ও মানুষকে নিয়ে কাজ করার স্বল্প অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে হিংসার মাধ্যমে যে লাভ হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে তা একেবারেই অলীক – আজও পর্যন্ত হিংসার মাধ্যমে কোনও সমস্যার সমাধান হয়নি। যুদ্ধ, তা সে বড় মাপেরই হোক বা ছোট মাপের, তা করা হয় শান্তি স্থাপনের জন্য – কিন্তু শান্তি শুধুই পালিয়ে বেড়ায়, তাকে আর ধরা যায় না।
তবে কোনও ঘটনা, তা যেমনই হোক না কেন, তা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তার বশে কোনও কিছু করা একেবারেই শিশুসুলভ ব্যাপার।
পুলওয়ামায় বেঘোরে যে প্রাণ গেল একজন ভারতীয় হিসাবে আমি হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করি ও ব্যথিত হই। ভাবতেও কষ্ট হয় যে ৪০টি পরিবার তাদের পরিবারের রোজগেরে মানুষটিকে হারাল। পরিবারগুলি ভেঙে পড়ল, ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হল, হয়তো সেই ক্ষত কোনও দিনও পূরণ হবে না।
এই ধরণের হৃদয়বিদারী ঘটনা নিয়ে একটা কথা বলা যায় যে যাঁরা প্রাণ হারালেন এই দ্বন্দ্ব শুরু করার ব্যাপারে তাঁদের কোনও হাত নেই। যাঁরা এই সমস্যার মূল্যে তাঁদের কোনও দিনই কোনও আঘাত সইতে হয় না বা কোনও সমস্যায় পড়তে হয় না। যদি এ থেকে তাঁদের বিন্দুমাত্র কোনও ফয়দা হয়ে থাকে তা হলে সেটি হল রাজনৈতিক লাভ।
যুদ্ধে যারা উস্কানি দেয়, ভোটে তারা হল সোনার খনি। আমার কাছে এটা হল একেবারেই অনৈতিক ও অন্যায়।
যাঁরা যুদ্ধ যুদ্ধ করে লোকের মনে প্রভাব ফেলছেন এবং লোকজনকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করছেন, যদি যুদ্ধের প্রভাবটা তাঁদের উপরে পড়ত তা হলে শান্তি স্থাপন করা খুব সহজ হত। এই কথাটা একেবারেই ধ্রুবসত্য – যদিও এটি রাজনৈতিক ভাবে ঠিক বক্তব্য তো নয়ই এমনকি এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করাও ঠিক নয়।
যাঁরা আজ ছিন্নভিন্ন হয়েছেন, এই ভয়াবহ আতঙ্ক সৃষ্টিতে তাঁদের কোনও ভূমিকা নেই। (ছবি: পিটিআই)
হিংসা দিয়ে প্রতিকারের আমি বিরোধী, কারণ আমি মনে করি যে এটা খারাপের চেয়েও খারাপ। যদিও একটি কঠোর বাস্তবও রয়েছে, তা হল, আমাদের প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক এমনই যে সেরা সময়েও দেশটি সংঘাত করে এসেছে।
পাকিস্তান হল আদপে একটি সেনা-শাসিত রাষ্ট্র। আমরা গণতান্ত্রিক দেশ। ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাওয়ার সেই স্মৃতির বোঝা বাদ দিয়ে বলা যায় যে উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগত ভাবে রাজনীতির শিকড়ে থাকা দুর্দশা ও পদ্ধতিগত অসামঞ্জস্যটি পেয়েছি।
পাকিস্তান হল আমাদের কাছে একটা শিক্ষা। সেনা যা বলবে একমাত্র তার উপরে ভয়াবহ ভাবে নির্ভর করেই জাতীয়তাবাদ তৈরি হওয়া – এ ভাবেই সেই দেশটি পরিচালিত হয়ে আসছে। সেখানে হিংসাই হল প্রকৃত অর্থে জাতীয়তাবাদ, যেখানে কোনও দিন শেষ হবে না এমন রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে জনতা চিরকালই বোড়ের মতো ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার এটা নয় যে সে দেশের গণতন্ত্র একটা অলীক ব্যাপার, সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হল তারা শত্রুভাব ও দুর্নীতির বাতাবরণে দেশের নাগরিকদের অধঃপতন ও দারিদ্র্যের নাগপাশে জড়িয়ে রাখে – বারতের বিরুদ্ধে হিংসায় উজ্জীবিত করে।
তাদের নিজেদের দেখানোর মতো কিছু নেই। ভিন্নমুখীনতা এবং ভারতের বিরুদ্ধে ক্রমাগত ছায়াযুদ্ধে সক্রিয় ভাবে মদত দিয়ে যাওয়া হল পাকিস্তানের দায়বদ্ধতা – এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই।
পাকিস্তানে গিয়ে একবার সে দেশের মানুষের আতিথ্য গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাঁদের সঙ্গে একটা ঐকান্তিকতা অনুভব করেছিলাম। তাই আমার মনে হয় যে পুলওয়ামায় যা ঘটেছে বা আগে যা ঘটেছিল তাতে পাকিস্তানের আমজনতার ভারতের প্রতি মানসিকতা প্রতিফলিত হয়নি।
তাঁদের জীবনে সবচেয়ে বড় যে অভিশাপ নিয়ে চলতে হয় তা হল, রাষ্ট্রের কী নীতি হবে সে ব্যাপারে দেশের জনতার কোনও সম্পর্ক নেই। পাকিস্তান এমন একটি ‘গণতান্ত্রিক দেশ’ যে দেশের জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছা সবই নির্ভর করে সেনার নির্দেশর উপরে, তাঁরা জানেন যে এই মতবাদের বিরুদ্ধে কোনও শব্দ উচ্চারণ করার অর্থ হল সহস্র খণ্ডে খণ্ডিত হয়ে মৃত্যু।
আজকাল সহস্রখণ্ডে খণ্ডিত হয়ে আত্মঘাতী হওয়া হল এর সমার্থক ব্যাপার।
গণতন্ত্রের নামে ভণ্ডামি বাদ দিয়ে বলা যায়, সেনাই স্থির করে যে পাকিস্তানে কী হবে। (ছবি: টুইটার/@pid_gov)
আমি এ কথা বলছি না যে আমাদের উপরে ঘটে চলা সেই নৃশংস ঘটনার পরে আমরা হাত গুটিয়ে দাঁড়য়ে তা দেখতেই থাকব। তবে আমার বিচারে বলে, আমরা যে প্রতিবেশী দেশের উন্মত্ত সেনাপ্রধানদের ইচ্ছায় পরিচালিত হয়ে আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি যে আমরা অপরিণত।
আরও মজার কথা হল, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ব্যর্থতার মূল্য আমরা চোকাচ্ছি।
দীর্ঘমেয়াদে আমাদের এই শাপমোচন তখনই হতে পারে যখন পাকিস্তানের জনতা সে দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
যে দেশকে কঠোর হাতে দমন করে সে দেশের সেনা, সেখানে এটা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। তবে আমরা নিজেরা গণতন্ত্রকামী হওয়ায় এ কথা বিশ্বাস করতেই পারি যে একদিন না একদিন সাধারণ মানুষের ক্ষমতার জয় হবেই। পাকিস্তানে সেনাদের শাসনে হাতের পুতুল হয়ে থাকা পাকিস্তানের জনগণের ক্ষমতা একেবারেই নগণ্য। রক্তাপ্লুত সীমান্ত, এটাই চলতে থাকবে, এটাই স্থায়ী হয়ে তাকবে, কোনও দিন এর অবসান ঘটবে ঘটবে না।
তবে আপাতত ভাবে, পাকিস্তানের সেই সব লক্ষ্যভ্রষ্ট লোকজনকে বার্তা দেওয়া দরকার। জীবন সবচেয়ে মূল্যবান। কিছুদিন অন্তর তাঁর দেশ থেকে কয়েকজন সেনা ও আধাসেনা-সহ কয়েকজনকে নাগরিককে মুছে ফেলা হবে, নির্বিকার ভাবে দাঁড়িয়ে থেকে এই অবস্থা দেখে যেতে পারে না কোনও দেশই।
একই সঙ্গে কোনও দেশই দীর্ঘ দিন ধরে অভ্যন্তরীণ মতানৈক্য ও কাঠিন্য দেখে যেতে পারে না যা আমরা জম্মু-কাশ্মীরের ক্ষেত্রে দেখে আসছি। দুর্ভাগ্যজনক হল, বর্তমানে যে পরিস্থিতি তার জেরে কাশ্মীর পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক খারাপ হয়েছে। মোদী সরকার যে কঠোর ভাব পোষণ করেছিল, তাতে স্পষ্টতই হিত করতে গিয়ে বিপরীত হয়েছে। সর্বকালের বিচারে উপত্যকার মানুষের হৃদয় ও মনের উন্মত্ততা সবচেয়ে বেশি হয়েছে এই সময়েই।
আমার মনে হয় যে, এই সত্যতাকে উহ্য রেখে পুলওয়ামা-পরবর্তী পরিস্থিতি বিচার করা ঠিক নয়।
কাশ্মীর শুধুই হিংসা ও শোক চায়, এমন কথা ভাবা অযৌক্তিকই নয়, অন্যায়ও। (ছবি: রয়টার্স/ফাইল)
জঙ্গি ও সেনার গুলির লড়াইয়ের মাঝে কাশ্মীরী ও কাশ্মীরী পণ্ডিতদের সঙ্কট নিয়ে আমরা যৎসামান্য ভাবিত।
- দীর্ঘস্থায়ী বা আপাতদৃষ্টিতে কোনও দিনও শেষ না হওয়া সন্ত্রাস, শত্রুতা ও আশাহীন পরিস্থিতির মধ্যে মানুষজনকে বন্দি করে রেখে দেওয়া এবং তরুণদের ওই সব শেয়ালের মুখে ফেলে দেওয়া হতে থাকলে তারা তো বিচ্ছিন্নতার দিকেই এগিয়ে যাবে।
বন্দুক কখনও এই সমস্যার সমাধান নয়। এই বিষয়টি আমরা কী ভাবে মোকাবিলা করছি সেটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসাবে আমাদের সদ্বিবেচনা ও পরিণতমনস্কতার একটা পরীক্ষা, যা একদিন মানবিকতার বিচারে বিসদৃশই ছিল। আরও ভালোভাবে বলতে গেলে এ কথা বলতেই হবে যে, কাশ্মীরের দিকে এখন আন্তর্জাতিক মহলের চোক রয়েছে।
হিংসা বন্ধ করতেই হবে। এই অঞ্চলের নাগরিকরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। এটা মনে করার করার কোনও কারণ নেই যে কাশ্মীরীরা শান্তি চান না; তাঁদের সন্তানরা সুদিন দেখুক, তা তাঁরা চান না, পরের দিন সকালটা তাঁরা শুরু করবেন বেঁচে থেকে এবং তরতাজা ভাবে তাও তাঁরা চান না। তাঁরাও আমার-আপনার মতোই মানুষ। পরিতাপের কথা হল, কাশ্মীর নিয়ে যে জটিল পরিস্থিতির কথা আমরা আমি শুনছি, তাতে আমার মনে হচ্ছে না যে এ বিষয়ে কারও বিন্দুমাত্র তাপ-উত্তাপ রয়েছে। এটা সব সময়ই যেন ‘আমরা’ বনাম ‘ওরা’। এভাবে চলতে পারে না।
২০১৪ সাল থেকে কাশ্মীর পরিস্থিতি কেন খারাপ হয়েছে তার একটা কারণ রয়েছে। আমি দুঃখের সঙ্গেই জানাচ্ছি যে, বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক নীতি পুরো দেশ জুড়েই মুসললমান-বিরোধী মানসিকতাকে ইন্ধন জুগিয়েছে।
জর্জ বুশ (সিনিযর) যে ভাবে মুসলমান-বিরোধী ঘৃণাকে তাঁর বিদেশনীতির মূল বলে স্থাপন করেছিলেন এটা তেমনই একটি ব্যাপার। পক্ষপাতদুষ্ট এই নীতির জেরেই জর্জ বুশ (সিনিয়র) ও জর্জ বুশ (জুনিয়র)-এর সময়ে আমরা সারা বিশ্বে দাঙ্গাহাঙ্গামা-পূর্ণ একটি পরিস্থিতি দেখেছি।
বুশদের সময়ে আমরা সারা বিশ্বে দাঙ্গাহাঙ্গামা-পূর্ণ একটি পরিস্থিতি দেখেছি। (ছবি: এপি/ফাইল)
বর্তমান পরিস্থিতিতেও, সৎ ভাবে ও সাহসিকতার সঙ্গে আমাদের বিচার করে দেখতে হবে নীতিগত কৌশল ও উপত্যকায় ক্রমাগত বেড়ে চলা হিংসার মধ্যে কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা।
- অতএব আমাদের এমন একটা নীতি গ্রহণ করতে হবে যেখানে যেখানে একই সঙ্গে দুটি ব্যাপার স্পষ্ট করতে হবে, কখন যুদ্ধ করব এবং কখন নিষ্ক্রীয় থাকব।
আমরা যদি আদৌ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, এবং আমরা যদি মনে করি যে গণতন্ত্রের মধ্যেই পছন্দ করে নেওয়ার অধিকার রয়েছে, আমরা যদি আমাদের সহনাগরিক হিসাবে কাশ্মীরীদেরও ব্যাপারেও সচেতন হই তা হলে আমাদের এই পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যেখানে কাশ্মীরিরা ভারতের প্রতি দায়বদ্ধ থাকবেন।
অসূয়া এমন পর্যায়ে গিয়েছে যেখানে আমরা কাশ্মীরের মানুষজন ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এক করে ফেলছি – এটা মস্ত বড় ভুল। এ কথা সত্যি যে আমরা যে পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি, সেখানে কাশ্মীরীদের মধ্যে ভারত-বিরোধী মানসিকতা রয়েছে এবং বেশ ভালো ভাবেই রয়েছে। তাই মনের সেই কাঠিন্য ভেদ করে আবেগতাড়িত হয়ে তাঁরা ভারতীয় গণতন্ত্রের দিকে ঝুঁকে পড়বেন এটা সত্যিই অদ্ভুত এক স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়। তবে ইতিহাসে অনেক আশ্চর্য ঘটনাই ঘটেছে, যেমন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সমাপ্তি, যার সম্বন্ধে বলা হত যে সূর্য কখনও অস্ত যায় না।
না, তাঁরা পুরো কাশ্মীরের প্রতিনিধিত্ব করেন না। (ছবি: পিটিআই/ ফাইল)
একটা ব্যাপার আমার কাছে জলের মতো পরিষ্কার। পুলওয়ামায় যা ঘটেছে তাতে রাজনৈতিক স্বর্ণখনিতে পর্যবসিত করার চেষ্টা করা হলে তা হবে অত্যন্ত অনৈতিক ও জঘন্য ব্যাপার।
কোনও মানুষের সমস্যা বা দুর্দশাকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক সুবিধা যদি কেউ আদায় করতে চান তা হলে তা হবে অমানুষিক কাজ। সেনারা যে ভাবে কাজ করছেন তাঁদের সেই ভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত এবং রাজনৈতিক মুষ্টিযুদ্ধের জন্য কাউকে আবেগতাড়িত করাও উচিত নয়, কাউকে অকারণ উত্তেজিত করারও দরকার নেই।
যে কোনও মূল্যে এ সব আমাদের রুখতেই হবে।
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে