নভজ্যোৎ সিং সিধু: পাকিস্তান তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ, নিজের দেশে তিনি ক্ষোভের মুখে
অনেক বিশেষজ্ঞই সিধুর পাকিস্তান সফরকে ইতিবাচক বলে আখ্যা দিয়েছেন
- Total Shares
প্রাক্তন পাকিস্তান ক্রিকেট অধিনায়ক ইমরান খানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার নভজ্যোৎ সিং সিধু।
ক্রিকেট মহলে, সিধু ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেই পরিচিত। তাই বোধহয় ইমরানের আমন্ত্রণপত্র হাতে আসা ইস্তক সিধু পাক প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বিক্রম সিং মেহতার সঙ্গে পাকিস্তানে গিয়েছিলেন সিধু। তাঁর এই পাকিস্তান সফর আগাগোড়াই জল্পনার তুঙ্গে ছিল। এরই মধ্যে সিধু আবার নিজেকে 'শান্তির দূত' রূপে ঘোষণা করে ফেলেছিলেন।
পাকিস্তান সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলিঙ্গনরত নভজ্যোৎ সিং সিধু [ছবি: এএনআই]
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন বিতর্ক দানা বাঁধে কারণ সিধুকে একেবারে মাসুদ খানের পাশের আসনটিতে বসতে দেখা যায়। আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর তথা পাক নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রেসিডেন্ট এই মাসুদ খান। বিতর্কের এখানেই শেষ নয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া সিধুর দিকে এগিয়ে আসেন। সেই সময় সিধু পাক সেনাপ্রধানকে আলিঙ্গন করেন।
এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পরে গোটা ভারত। উল্টোদিকে, সিধুর ব্যবহারে বা দুই দেশের সম্পর্ক উন্নতির কথা সিধু যে ভাবে প্রচার করে গেছেন তাতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র কিন্তু প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
পাকিস্তানে সিধু বলেছেন যে তিনি নিশ্চিত যে ইমরান পাকিস্তানকে সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করবেন এবং গোটা দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে সফল হবেন। ইসলামাবাদে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে সিধু জানান যে ইমরান তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আদতে পাক জনগণের তরফ থেকে ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও শান্তির বার্তাটাই দিতে চেয়েছেন।
সিধুকে এখন আলিঙ্গনেরও কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে [ছবি:পিটিআই]
সিধু বলেছেন, "ইমরান বলেছেন যে ভারত যদি এক পা এগোয় তাহলে পাকিস্তান দু'পা এগোবে। এর অন্তর্নিহিত অর্থটা কিন্তু বিশাল তাৎপর্যপূর্ণ।" প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার জ্যানিয়েছেন যে ভারত পাক সম্পর্ক মধুর করে তুলতে তিনি এই 'অর্থটাকেই' সঙ্গে করে ভারতে নিয়ে যাচ্ছেন।
সিধুর এই পাকিস্তান সফরকে কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞই ইতিবাচক বলে আখ্যা দিয়েছেন। বর্ষীয়ান রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাভেদ সিদ্দিক্কী জানিয়েছেন, "সিধু পাকিস্তান থেকে যে সম্মান ও ভালোবাসা পেয়েছেন তা যদি ভারত সরকারকে বোঝাতে সফল হন তাহলে দুই চির প্রতিদ্বন্ধি দেশের সম্পর্ক অনেকটাই জোড়া লাগবে।"
সিধুর সফরের কথা মাথায় রেখেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ইঙ্গিত দিয়েছেন যে গুরু নানকের ৫৫০তম জন্মশতবার্ষিকীতে শিখ তীর্থযাত্রীরা যাতে ভারতের ডেরা বাবা নানক থেকে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক গুরুদ্বার কার্টারপুর সাহিব অবধি যেতে পারে তার জন্যে কার্টারপুর সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে। এর উত্তরে সিধু জানিয়েছেন, "শিখরা বহুদিন ধরেই কার্টারপুর করিডরের কথা দাবি করে আসছিল।"
পাকিস্তানে সিধু কী পরিমান ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছে তা খোদ সিধুর মুখেই শুনে নেওয়া যাক, "আমি পাকিস্তানে প্রচুর ভালোবাসা ও সম্মান পেয়েছি। আমিও ভারত থেকে পাকিস্তানের জন্যে শান্তি ও বন্ধুত্বের বার্তা বহন করে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু, এর প্ৰতিদানে, ভারতে যে যার স্বার্থে মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় ব্যক্ত করেছেন।"
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে