ঘরে ঘরে সরকারি সুবিধা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
বিজেপি যে ফল করেছে তা বিজেপি নিজেও হয়তো কল্পনা করতে পারেনি
- Total Shares
আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে তিনি যে ঝাড়গ্রামে যাবেন, সে কথা একুশের মঞ্চ থেকেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জঙ্গলমহলে বিজেপির ভোট বৃদ্ধি যে এখন তাঁর মাথাব্যথা, তা তাঁর দলের নেতাদের দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পরেও জঙ্গলমহলে যেতে দেখা গেছে দলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
জঙ্গলমহলে গিয়ে রাজনৈতিক বক্তৃতা, বিজেপিকে চাঁছাছোলা আক্রমণ বা তাঁর স্বভাবসিদ্ধ বক্তৃতা ছিলই, সঙ্গে ছিল আকুতিও।
ঝাড়গ্রামে গিয়ে আদিবাসীদের মন জয়ের চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী
তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভা আসনে জয়ী হয়েছে এমন নয়। হারা আসনেও মুখ্যমন্ত্রী গিয়েছেন এবং এটা দিলাম, ওটা দিলাম, ভোট দিন ধরনের কথা বলেছেন। এখানে সেই মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা যায়নি। ‘পাহাড় হাসছে, জঙ্গলমহল হাসছে’ বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরে পাহাড় উত্তপ্ত হয়েছে। কিন্তু গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে কার্যত পকেটে পুরে তিনি পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন। এখন সেই পাহাড়ের লোকসভা আসনেও জয়ের পথ প্রশস্ত করেছেন। কিন্তু জঙ্গলমহলে তাঁর সেই কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। সেখানে লোকে জেনেছে রাস্তাঘাট হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থে, লোকে চালও পাচ্ছে সেখান থেকেই। সেখানে বিজেপির কার্যত কোনও সংগঠন না থাকলেও, তারা যে ফল করেছে তা বিজেপি নিজেও হয়তো কল্পনা করতে পারেনি।
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে গ্রামপঞ্চায়েত স্তরে যেখানে ৩৪ শতাংশ আসনে তৃণমূল বিরোধীদের প্রার্থী দিতে দেয়নি বলে অভিযোগ, সেখানে বিজেপির জয় তৃমণূলনেত্রীর চিন্তা বাড়িয়েছে। তাই তাঁর বক্তৃতায় দাপটের বদলে অনুনয়ই বেশি দেখা গেছে।
তবে বিজেপিকে একেবারে ছেড়ে দিয়েছেন এমন নয়। আগেও যে ভাবে ভিনরাজ্য থেকে লোক ঢোকানোর তত্ত্ব খাড়া করেছিলেন, এবারও সেই একই ভাবে ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদী ডেকে এনে উস্কানি দেওয়ার কথা বলেছেন। জঙ্গলমহলকে বিজেপি রক্তাক্ত করতে চাইছেন বলে উল্লেখ করে একমাত্র তাঁকেই বিশ্বাস করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুরস্কারও দিয়েছেন আদিবাসী জনজাতির কৃতীদের।
বলছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
জঙ্গলমহলে সত্যিই কি লোকে সরকারি সুযোগসুবিধা পাচ্ছে? এবার এটি দেখার দায়িত্ব তিনি সরাসরি পুলিশকে দিয়েছেন। আদিবাসী এলাকায় ঘরে ঘরে সরকারি সুযোগ পৌঁছানো নিশ্চিত করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
হাতে আছে সাত মাস। আদিবাসীদের সংখ্যা যেখানে বেশি, বিজেপি সেখানে মেরুকরণ ঘটিয়ে ভোটবাক্স আরও জোরদার করতে চাইবে সে কথা তৃণমূল জানে। ভোটের যে মেরুকরণ হয়েছে এবং এখানে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন যে সক্রিয় সে কথাও এখন মোটামুটি সকলেই জেনে গেছেন। উন্নয়নের কথা বলে এখানে চিঁড়ে ভিজবে না। তাই ব্যক্তিগত ভাবে যাতে প্রতিটি মানুষ সরকারি সুযোগ-সুবিধা পান, তকা নিশ্চিত করে ভোটের সময় নিজের পালে হাওয়া চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।