বলিউডের শিক্ষা: মে ভি চৌকিদার টাট্টু কেন বিপজ্জনক?
নিরাপদে থাকুন, প্রয়োজনে এসআরকে টাট্টু করিয়ে ফেলুন
- Total Shares
বলিউড আমাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছে - একটি ছেলে কখনই একটি মেয়ের বন্ধু হতে পারে না। আর, এই ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে মনীশ বেহল কিন্তু বেশ পারদর্শী। এছাড়া, আরও একটি শিক্ষা আমরা বলিউড থেকে পেয়ে থাকি - টাট্টুর উপকারিতা ও অপকারিতা।
বিভিন্ন ফ্যাশনের টাট্টুর মধ্যে এবার "মে ভি চৌকিদার" টাট্টু বেশ সাড়া ফেলেছে। টাট্টু শিল্পীদের রোজগারও বৃদ্ধি হয়েছে। খুব সম্ভবত, বহুদিন বাদে দেশে একটি কর্মসংস্থানের সুযোগ এসেছে। এই পরিস্থিতিতে, টাট্টু নিয়ে বলিউড আমাদের কী শিক্ষা দিয়ে থাকে তার উপর একবার মনোনিবেশ করা যাক।
টাট্টু না করে লকেট পড়ুন [সৌজন্যে: ডেইলি ও]
প্রথমে উপকারিতার কথা আলোচনা করে নেওয়া যাক।
ঐতিহাসিক কাল থেকে একই ধরণের টাট্টু মূলত একটি কাজেই সাহায্য করে এসেছে - বছর কুড়ি বাদে হারিয়ে যাওয়া দুই ভাইয়ের মিলন ঘটিয়েছে। কুম্ভমেলার মতো কোনও সামাজিক অনুষ্ঠানে দুই ভাই হয়ত হারিয়ে গিয়েছিল। ক্লাইম্যাক্স দৃশ্যের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তারা আবার টাট্টুর সাহায্যে নিজেদের খুঁজে পাবে। এবং, অতি অবশ্যই, একে অপরকে জড়িয়ে ধরবে।
তবে, লকেটের সাহায্যেও তো দুই ভাইয়ের পুনর্মিলন ঘটে!
অতএব, খামোকা এত যন্ত্রনা সহ্য করে টাট্টু করাবার প্রয়োজনটা কী?
এবার অপকারিতায় আসা যাক (আপাতত, এর চাইতে বেশি উপকারিতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না)।
সিনেমার পর্দায় "মেরে বাপ চোর হ্যায়" তো টাট্টু সংক্রান্ত গুবলেটগুলোর মধ্যে সেরা। এই টাট্টু নিয়ে বিজয়ের কিছুই করার ছিলনা। কিন্তু গোটা জীবন ধরে তাকে এই টাট্টুকে সঙ্গী করেই বাঁচতে হয়েছিল।
আর, এই সব কিছুর মাঝেই, তার সেই সর্বদা শক্ত চোয়াল মুখটা অসহ্য হয়ে উঠেছিল।
"মেরে বাপ চোর হ্যায়" টাট্টুর মতো "মে ভি চৌকিদার" টাট্টুও তো আপদমস্তক মিথ্যে।
একবার চিন্তা করে দেখুন:
বিজয়ের বাবা চোর ছিল না।
যিনি আপনাকে এই টাট্টু করতে উৎসাহিত করেছেন তিনিও কিন্তু চৌকিদার নন।
কিন্তু আপনি নিজে নিজেকে একজন চৌকিদার ভাবছেন।
বিজয়ের বাবার কথা ভুলে যান। দেখবেন, বিজয়কে কিন্তু এই টাট্টুকে সঙ্গী করে সারা জীবন কাটাতে হয়েছিল। আপনার উৎসাহের কথা বাদ দিলে, আপনাকেও কিন্তু একই ভাবে এই টাট্টুকে সঙ্গী করে সারাজীবন কাটাতে হবে।
তার কি কোনও প্রয়োজন রয়েছে? মনে তো হয়না।
বাস্তবে কিন্তু, ভুলভাল কারণের জন্য টাট্টু বেশ কয়েকবার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে।
প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড রণবীর কাপুরের জন্য "আরকে" নামাঙ্কিত টাট্টু করিয়েছিলেন দীপিকা পাডুকোন। আর, তা নিয়ে, জাতীয় স্তরে ঠাট্টা-তামাশা কম হয়নি। টাট্টুটির আগে একটি "এস" লাগিয়ে "এসআরকে" করে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছিল খোদ শাহরুখ খানের কাছ থেকে।
সত্যিই, প্রস্তাবটি কিন্তু বেশ পছন্দসই।
কারণ, এ দেশে যদি 'কনস্ট্যান্ট' কোনও কিছু থেকে থাকে তাহলে তা শাহরুখ খানই, তাঁর সেই 'এদিকে আসুন' মার্কা চাহনি ও গালের মিষ্টি টোল সম্বল করে।
গন্ডগোলের সূত্রপাত এই টাট্টুকে কেন্দ্র করে [সৌজন্যে: ইনস্টাগ্রাম]
এখন দীপিকা রণবীর সিংয়ের সঙ্গে শুভ পরিণয়ে আবদ্ধ হয়েছেন - অনেকটা রাজনীতির ময়দানের মতো, দল পরিবর্তন করে। তিনি হয়ত টাট্টুটি মুছে ফেলবেন কিন্তু টুইটারে ভাইরাল হওয়া মেমসগুলোর কী হবে?
টাট্টুর মূল্য কী তোমার জানা রয়েছে, দীপিকা!
এর পর ঋত্বিক রোশন ও সুসান খানের জোড়া-টাট্টুর গল্প রয়েছে। কব্জির পিছন দিকে দুটি তারা আকৃতির টাট্টু করিয়েছিলেন তাঁরা। এর পরে অবশ্য দু'জনের বিবাহ বিচ্ছেদ হল। কিন্তু টাট্টুগুলো রয়ে গিয়েছিল। তাঁরা হয়ত একাধিক মধুচন্দ্রিমায় যেতে গিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাঁদের মহাজোট ধোপে টেকেনি।
তাই তো বলি, চামড়ায় কালি লাগানোর আগে ভালো করে চিন্তাভাবনা করে নিন। মনে রাখবেন, টুইট সহজেই মুছে ফেলা যায়। কিন্তু টাট্টু সহজে মোছা যায়না।
এই নির্বাচনে উতরে গেলেও ভবিষ্যতে চৌকিদারের আবার চাওয়ালা হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
তাই নিরাপদে থাকার চেষ্টা করুন (প্রয়োজন পড়লে, এসআরকে-র টাট্টু করিয়ে নিন)।
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে