মধ্যপ্রদেশ নির্বাচন ২০১৮: রাহুল রাজ্যে না থাকলে কেন প্রচার করছে না কংগ্রেস

রাহুলের গোয়ালিয়র ও ইন্দোর সফরের মাঝের সময়ে ঝিমিয়ে ছিল কংগ্রেস

 |  3-minute read |   03-11-2018
  • Total Shares

বেশ কয়েক মাস ধরে দেখা যাচ্ছিল যে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস ও বিজেপির লড়াইটা হয়ে চলেছে মোটের উপরে সমানে সমানে, পরের দিকে দেখা যাচ্ছে কংগ্রেস সেখানে এগোচ্ছে শম্বুকগতিতে, এখন তারা প্রচার থেকে দূরে সরে যাওয়ায় সেই সুযোগ পুরোমাত্রায় কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি।

উল্টোদিকে দেখা যাচ্ছে বিজেপি যে ফাঁকা ময়দান পেয়েছে তা পুরো মাত্রায় উসুল করতে উঠেপড়ে প্রচার করছেন দলের নেতানেত্রীরা।

গত তিন সপ্তাহে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো শীর্ষ কংগ্রেস নেতারা নিজেরা না কোনও জনসভায় উপস্থিত থাকছেন, না কোনও মিছিলে প্রচার করছেন।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী যখন রাজ্যে আসছেন শুধুমাত্র তখনই পথসভা-মিছিল হচ্ছে।

যেই কংগ্রেস সভাপতি চলে যাচ্ছেন অমনি তাঁর দলও ঝিমিয়ে পড়ছে।

উল্টোদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান রাজ্য জুড়ে টানা জনসভা ও প্রচার করে চলেছেন।

congress-inside_1102_110318060508.jpgপ্রচার থেকে কংগ্রেস নেতাদের সরে যাওয়া বিজেপিকে বিশাল সুবিধা করে দিয়েছে (ছবি: মেল টুডে)

সম্ভবত দলের প্রার্থী তালিকা (টিকিট বণ্টন) নিয়ে ব্যস্ত থাকাতেই প্রচারে দেখা যাচ্ছে না কংগ্রেস নেতাদের, সাধারণত দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে দিল্লিতেই প্রার্থী বাছাই সংক্রান্ত বৈঠক হয়ে থাকে।

এ বার দেখা যাচ্ছে অন্য বারের চেয়ে প্রার্থী বাছাই করতে অনেকটাই বেশি সময় লেগে যাচ্ছে, কারণ দল চাইছে প্রার্থী বাছাই নিয়ে দুশো শতাংশ নিশ্চিত হয়ে নিতে – এ কথা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় যে নির্বাচনের আগে এটাই কোনও রাজনৈতিক দলের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।

প্রচারের ময়দান থেকে কংগ্রেস নেতারা নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার ফলে বিজেপির কাছে খেলাটা এখন ফাঁকা ময়দানে, বিজেপি নেতারা সেই সুযোগটাকেই পুরোমাত্রায় কাজে লাগাচ্ছেন।

প্রচারের ময়দানে কর্তৃত্ব করতে পারলে ভোটদাতাদের মনের উপরেও অনেকটা প্রভাব বিস্তার করা যায় – এমনও দেখা যায় যে, যে সব ভোটদাতা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেননি খুব ভালো ভাবে গুছিয়ে প্রচার করার ফলে তাঁদের মন গলিয়ে সেই ভোট পাওয়া গেল।

shivraj_110218125815_110318060551.jpgমুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহ্বান রাজ্যের সর্বত্র প্রচার করে চলেছেন (ছবি: টুইটার)

জোরদার প্রচারের ফলে দলের কর্মীরাও উজ্জীবিত হন আর বিজেপির মতো ক্যাডার-নির্ভর দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে কর্মীদের উজ্জীবিত করা ও রাখা কংগ্রেসের বিশেষ ভাবে দরকার।

কংগ্রেসের সে ভাবে প্রচারে না থাকা বা উল্টো কথায় বিজেপি নেতাদের উপস্থিতির প্রতিফলন বোঝা যাচ্ছে রাজনৈতিক সমীক্ষাগুলিতে।

জুন মাসে যে নির্বাচনী সমীক্ষা হয়েছিল তাতে বিজেপির থেকে অনেকটা এগিয়ে রাখা হয়েছিল কংগ্রেসকে।

জয়ের এই সম্ভাবনা দেখে কংগ্রেস নেতারা যে ভাবে উজ্জীবিত হয়েছিলেন তার যথেষ্ট কারণ ছিল – পনেরো বছর ধরে তারা রাজনৈতিক ভাবে বনবাসে ছিল – তার চেয়েও যে গুরুত্বপূর্ণ তা হল এই সমীক্ষা মুখ্যমন্ত্রী শিববার সিং চৌহানকে কাজে নেমে পড়তে বাধ্য করে।

জুলাই মাসেই তিনি জন-আশীর্বাদ যাত্রা শুরু করে দিলেন – এটা ছিল আসলে বিপুল ভাবে জনসংযোগের একটা প্রক্রিয়া।

মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে পছন্দের হলেও, পরের সমীক্ষায় দেখা গেল কংগ্রেসের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই চলছে বিজেপির।

তাঁর জায়গা যাতে কংগ্রেস দখল করে না নিতে পারে সে জন্য তার পর থেকেই ব্যাপক ভাবে পরিশ্রম শুরু করে দিলেন শিবরাজ সিং চৌহান।

দলের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ার পরেও দলের অন্য তাবড় নেতারা তো বটেই, শিবরাজ সিং চৌহান নিজেও বেশ কয়েকটি জনসভা করেছেন। আর কংগ্রেসের অবস্থা হল দলের সভাপতি যখন রাজ্যে থাকেন শুধুমাত্র তখনই তাঁরা প্রচারের মেজাজে থাকেন।

রাহুল গান্ধীর গোয়ালিয়র ও ইন্দোর সফরের মাঝের সময়টুকুতে কংগ্রেসের কর্মীরা কার্যত ঘুমিয়ে ছিলেন, তাঁর রেওয়া সফরের মাঝের সময়টুকুর ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা গিয়েছে।

প্রচারের ক্ষেত্রে দলীয় কর্মীদের এই ঝিমুনি ভাব নিয়ে অবশ্য কোনও মাথাব্যথা নেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথের।

কমল নাথ বলেন, “আমরা যে এখন প্রচার করছি না তার কারণ হল গুজরাট ও কর্নাটকের ক্ষেত্রে দেখেছি যে আমরা ভুল সময়ে প্রচার করেছি। সেটা থেকে শিক্ষা নিয়েই আমরা প্রচারের পরিকল্পনা করেছি।” হয়তো টিকিট বণ্টনের পরেই পুরোদমে প্রচার শুরু হবে কংগ্রেসের, তবে ভোটাররা যদি এখন থেকে মনস্থির করে ফেলে থাকেন তা হলে কংগ্রেসের কাছে সেটা হবে বড়সড় ক্ষতি।

(সৌজন্য: মেল টুডে)

 লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

RAHUL NORONHA RAHUL NORONHA

The writer is Associate Editor, India Today.

Comment