মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন: কংগ্রেস ও বিজেপি কী ভাবে বিদ্রোহীদের সামলাচ্ছে
বিজেপির নরেন্দ্র সিং তোমর সামলাচ্ছেন বিদ্রোহীদের, কংগ্রেসে এই দায়িত্ব দিগ্বিজয় সিংয়ের
- Total Shares
আসন্ন নির্বাচনে বিজেপি ও কংগ্রেস – উভয়ের কাছেই সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে দলের বিদ্রোহীরা।
বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন, তার পরে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য ৫৩ জন সদস্যকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি।
একই পথে হেঁটে কংগ্রেসও তার দলের বেশ কয়েকজন সদস্যকে বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য শাস্তি দিয়েছে, এর মধ্যে রয়েছেন একজন বিদ্রোহী প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিধায়ক জেভিয়ার মেডাকে, যিনি ঝাবুয়া থেকে লড়ছেন।
এখনও যাঁরা বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী ও সাংসদ রামকৃষ্ণ কুশমারিয়া, জবলপুর থেকে প্রাক্তন বিজেওয়াইএম সভাপতি ধীরাজ পাটেরিয়া,প্রাক্তন মন্ত্রী কেএল আগরওয়াল, গোয়ালিয়রের প্রাক্তন মেয়র সমীক্ষা গুপ্ত, প্রাক্তন বিধায়ক ব্রহ্মানন্দ রত্নাকর ও প্রাক্তন বিধায়ক রাজকুমার মেব।
শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য এক সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে কংগ্রেস (ছবি: পিটিআই)
আরেক জন প্রাক্তন বিধায়ক শতরাজ সিং ইতিমধ্যেই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন এবং হোসাঙ্গাবাদ কেন্দ্র থেকে তিনি লড়ছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ সীতাসরণ শর্মা।
কংগ্রেসের দিকে আবার রাজনগর থেকে লড়ছেন প্রবীণ কংগ্রেসী সত্যব্রত চতুর্বেদীর ছেলে নীতিন চতুর্বেদী, জাতারা থেকে এবারেও প্রার্থী হচ্ছেন বিধায়ক দিনেশ আহিরওয়ার, প্রাক্তন মন্ত্রী প্রতাপ সিং উইকে লড়ছেন বেতুল থেকে
কংগ্রেস ও বিজেপি এখন চিৎকার করে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে যে তারা একে অন্যের চেয়ে আলাদা।
বিজেপি ও কংগ্রেস দুই দলই আলাদা আলাদা ভাবে নিজেদের দলের বিদ্রোহীদের দমন করার পরিকল্পনা করে রেখেছে।
শেষ উপায়টি হল কোতল করার ভয় দেখানো যাতে তারা মাথা তুলতে না পারে।
কয়েকটি ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া গেছে, তবে অনেক ক্ষেত্রে লাভ হয়ওনি।
দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য ৫৩ জন সদস্যকে দল থেকে তাড়িয়েছে বিজেপি। (ছবি: টুইটার)
বিদ্রোহীদের সামলানো ও তাঁদের সঙ্গে কথা বলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করানোর জন্য বিজেপিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমরকে।
লোককে বুঝিয়ে রাজি করানোর ক্ষমতা রয়েছে তোমরের, তিনি বিধায়ক জিতেন্দ্র দাগা এবং কয়েকজন স্থানীয় নেতাকে বুঝিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়েছেন, তবে সার্বিক ভাবে বলতে গেলে প্রত্যেকেই নিজের মতেই চলেছেন।
কংগ্রেসের দিকে বিদ্রোহীর বোঝানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দিগ্বিজয় সিংকে। তিনি সাজিদ আলি ও নাসির ইসলামকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করিয়েছিলেন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার ব্যাপারে, কিন্তু নীতিন চতুর্বেদীকে দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করাতে পারেননি।
তা হলে আগের নির্বাচনগুলির তুলনায় এবার বিদ্রোহীদের সমস্যা কেন অনেক বড় বলে মনে হচ্ছে?
এর একটা কারণ হল বিজেপির যে সব নেতা এবার বিদ্রোহী হয়েছেন তাঁদের অনেকেই বরিষ্ঠ নেতা।
কংগ্রেসে যোগ দেওয়া সরতাজ সিং এবং আরকে কুশমারিয়া – দু’জনেই একাধিক বার রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছেন এবং লোকসভার সাংসদও ছিলেন।
দ্বিতীয়ত, এই প্রথম বার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে যেখানে সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপ খুব বড় ব্যাপার।
শতরাজ সিংয়ের ভেঙে পড়ার সেই ভিডিয়ো কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়, যদি সোশ্যাল মিডিয়া না থাকত তা হলে হয়তো বিদ্রোহীদের এ ভাবে দেখা যেত না।
বিজেপি তার দলের বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণ না করতে পারার কারণ হিসাবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা অরবিন্দ মেননের মতো দক্ষ সংযোগরক্ষাকারী ব্যক্তির না থাকাকেই নির্দিষ্ট করছেন, মেনন আগে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
বিজেপি ক্যাডারনির্ভর দল হওয়ার জন্য এবং অনেক বেশি সুশৃঙ্খল হওয়ায় একদিন এ সব ব্যাপার শুধু কংগ্রেসের মধ্যেই দেখা যেত।
কংগ্রেসে যেমন প্রত্যাশীরা রয়েছেন বিজেপিতেও সেই একই ভাবে তাঁরা রয়েছেন, এখন তাদের স্পষ্ট ভাবে দেখা যাচ্ছে। ঘটনা হল রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীই হলেন একমাত্র নেতা যিনি বিজেপির হয়ে প্রচার করছেন আর সে জন্যই বিজেপি কতটা ক্যাডার-নির্ভর দল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
(সৌজন্য মেল টুডে)
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে