লোকসভা নির্বাচন ২০১৯: জটিল রাজনৈতিক অঙ্ক গুলিয়ে ফেলছেন ভোটদাতারা

কে যে কোন মুহূর্তে কাকে কখন তুলছেন এবং পরমুহূর্তেই ফেলছেন...!

 |  2-minute read |   14-02-2019
  • Total Shares

নির্বাচনপূর্ব জোট এবং যে যেখানে শক্তিশালী তার সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই। একই দিনে এই দু-ধরনের বক্তব্যের কী অর্থ হয়, একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে অন্তত আমার মাথায় ঢুকেছে না।

এটা ঠিক যে ভারতের রাজনীতিতে এরকম বহু উদাহরণ আছে যেখানে কেন্দ্রে জোট আর রাজ্যে ঘোঁট। কিন্তু এবারের লড়াইটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ১৯৭৭ সালের পরে এই প্রথম ২০১৯ সালে একের বিরুদ্ধে সবার লড়াই।

এই রকম এক অবস্থায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়াধেরা জানিয়ে দিলেন, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস একক ভাবে লড়াই করবে। এই রকম একটা অবস্থায় লড়াইয়ের অভিমুখটা স্পষ্ট নয়। আমি বার বার যেটা বলার চেষ্টা করছি যে লড়াইটা আদর্শগত নাকি সংখ্যাগত?

priyanka-rahul1-copy_021419061236.jpgকংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী ও দলের সাধারণ সম্পাদক তথা তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়াধেরা (ছবি: পিটিআই)

আদর্শগত যে নয় তাতে কোনও দ্বিমত থাকার কথা নয়। লড়াইটা সম্পূর্ণ সংখ্যাগত এবং সেই কারণেই বিভ্রান্তিমূলক বিবৃতি বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন নেতৃত্বের মুখ থেকে।

যদি পশ্চিমবঙ্গের নিরিখে বিচার করা যায় তা হলে বহরমপুর বা রায়গঞ্জের মতো আসনে একের বিরুদ্ধে এক লড়াই হবে কি? আর উত্তরপ্রদেশেই বা কী হবে? শোনা যাচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগু দেশম পার্টির (টিডিপি) হাত ছেড়েছে কংগ্রেস আবার কলকাতার ধর্নামঞ্চ থেকে উঠে গিয়ে রাজধানী দিল্লিতে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ভূয়সী প্রসংসা করেছেন টিডিপি নেতা তথা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। কে যে কোন মুহূর্তে কাকে কখন তুলছেন এবং পরমুহূর্তেই ফেলছেন, তার মাথামুণ্ডু কিছুই দেশবাসী বুঝে উঠতে পারছে না।

চন্দ্রবাবু নাইডুর ধরনায় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী গেলেন, পরের দিন কেজরিওয়ালের ধর্নায় আর গেলেন না। তবে সন্ধ্যাবেলা ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) প্রধান শরদ পওয়ারের বাড়ির বৈঠকে রাজি হয়ে সংবাদমাধ্যমের যাবতীয় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ালেন।

main_naidu1_021419061423.jpg অন্ধ্রপ্রদেশের বিশেষ মর্যাদার দাবিতে ধর্নায় চন্দ্রবাবু নাইডু, পাশে রাহুল গান্ধী। (ছবি: পিটিআই)

কে কোথায় কোন অঙ্ক কষছেন এবং শেষ পর্যন্ত দেশের ভোটদাতারা কোন অঙ্কের ভিত্তিতে ভোটদান করবেন তা নিয়ে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি। সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধে ভোটদান করবেন নাকি মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে ভোটদান করবেন নাকি সম্ভাব্য জয়ী প্রার্থীর সমর্থনে ভোট দান করবেন নাকি অস্তিত্বহীন মহাজোটের পক্ষে ভোট দান করবেন!

শোনা যাচ্ছে ইউপিএ ১-এর আমলের মতো নাকি একটা অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি বা কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম তৈরি হবে। এই কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম ভোটের প্রচারে কাজে লাগবে নাকি ভোটের পরে কোনো এক সম্ভাব্য সরকারের পরিচালনায় কাজে লাগবে, সেটাও ঠিক স্পষ্ট নয়।

এর মধ্যেই সিপিএমের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারা এই অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির ধারনার মধ্যে নেই, যদিও অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচির প্রবক্তা ছিল তারাই।

এই রকম একটি পরিস্থিতিতে আবার এ মাসের শেষের দিকেই দিল্লিতে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে – তার অ্যাজেন্ডা কী অথবা নেতৃত্বের প্রশ্নে সেখানে কোনও সমাধানসূত্র পাওয়া যাবে কিনা এর কোনওটাই এখন স্পষ্ট নয়।

শোনা যাচ্ছে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের দিল্লির বৈঠকে বিরোধীপক্ষ তাদের কর্মসূচির একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরির চেষ্টা করবে নিশ্চয়ই, কারণ তারপর আর সময় নেই ঘর গুছনোর পালার।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

PRASENJIT BAKSI PRASENJIT BAKSI @baksister

The writer is a veteran journalist.

Comment