মমতা - চন্দ্রশেখরের ফেডারেল ফ্রন্ট কী অভাবনীয় কিছু ঘটাতে পারবে?
আঞ্চলিক দলগুলো মিলে নবম ও একাদশ লোকসভায় সরকার গঠন করলেও, অল্প দিনের মধ্যেই সরকার পড়ে যায়
- Total Shares
১৮ই মার্চ তামিল নববর্ষ ছিল। নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে নতুন লড়াইয়ে নামলেন তেলাঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও। পরের দিন একটি চাটার্ড বিমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সফরে গেলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জাতীয় ফেডারেল ফ্রন্ট নিয়ে প্রয়োজনীয় আলোচনা সেরে ফেলতে।
যা আশা করা হয়েছিল ঠিক তাই ঘটল। কে চন্দ্রশেখর রাওকে পুরোপুরি সমর্থন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় রাজ্য সরকারের সদর দফতরে দু-ঘণ্টা ধরে বৈঠক করলেন দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। শুরুটা ভালো হলেও, তাদের এখন অনেকটা পথ পেরোতে হবে। ভারতের রাজনীতিতে আঞ্চলিক দলগুলোর এই ধরণের জোট কিন্তু কোনও দিনই সফল হয়নি।
এই ধরণের জোট নবম ও একাদশ লোকসভায় সরকার গঠন করেছিল। কিন্তু এই দুটি সরকারের মেয়াদ অত্যন্ত ক্ষণস্থায়ী ছিল কারণ তারা বিজেপি বা কংগ্রেসের দয়াদাক্ষিণ্যে সরকার গঠন করতে পেরেছিল। তবে এই জোটগুলো নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরে হয়েছিল, নির্বাচনের আগে ক্ষমতায় থাকা দলকে গদিচ্যুত করবার জন্যে নয়। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কংগ্রেস বা বিজেপি যে এই ধরণের জোটকে নেতৃত্ব দেবে এমন কোনও সম্ভাবনা নেই।
কে চন্দ্রশেখর রাওকে পুরোপুরি সমর্থন জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
চন্দ্রশেখর অবশ্য নিশ্চিত যে তাঁর এই ফর্মুলা পথপ্রদর্শক হতে চলেছে। একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে প্রায় দেড় দশক লড়াই করে অবশেষে ক্ষমতা দখল করেছেন চন্দ্রশেখর। তিনি ভালোই জানেন যে আঞ্চলিক দলগুলো, যাদের শক্তি বড়জোর একটি বা দুটি রাজ্যে সীমিত, একে অপরের ভোট ব্যাঙ্ক বাড়াতে পারবে না। নিজের রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে তিনি নিজে প্রভূত চাপের মধ্যে রয়েছেন। এর পর অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলাঙ্গনার বিধানসভা নির্বাচন যদি লোকসভা নির্বাচনের সময়ই হয়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা।
তবে চন্দ্রশেখর হাল ছাড়ছেন না। চন্দ্রশেখর বললেন, "ফেডারেল ফ্রন্ট খুব শক্তিশালী হবে। আমরা এত বছর ধরে শুধুমাত্র কংগ্রেস আর বিজেপিকে সরকার চালাতে দেখেছি। তারা কী করতে পারে তা গত ৭১ বছরে আমরা বুঝে গেছি। আমরা কিন্তু ওদের কর্মকান্ডের পুনরাবৃত্তি করব না। আমাদের আরও বড় পরিকল্পনা রয়েছে"। মমতাও বা কম যান কিসে, "রাজ্যগুলো শক্তিশালী হলে, দেশও শক্তিশালী হবে।"
কংগ্রেস সাংসদ এস জয়পাল রেড্ডি অবশ্য মনে করছেন যে এই ফ্রন্ট কোনওদিনও দিনের আলো দেখবে না। "পুরোটাই নাটক।" তাঁর সাফ জবাব। রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন সরকারের ব্যর্থতার থেকে সাধারণ মানুষের দৃষ্টি সরাতেই চন্দ্রশেখর এই খেলাটা খেলছেন।
চন্দ্রশেখর রাও অবশ্য সমালোচনায় কান দিচ্ছেন না। তিনি স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, "অলৌকিক কিছু একটা অপেক্ষা করে আছে ভারতের রাজনীতিতে।" তবে তিনি যে এই অভাবনীয় কিছু একটা থেকে থেকে অনেকটা দূরে আছেন সে কথা তিনি বিলক্ষণ জানেন।
(সৌজন্য: মেল টুডে)