ফিল্মসিটিকে কেন্দ্র করে কেন গোল বেঁধেছে সিদ্দারামাইয়া ও কুমারস্বামীর মধ্যে?
সিদ্দারামাইয়া চান ফিল্মসিটি মহীশুরে হোক কিন্তু কুমারস্বামী চান ফিল্মসিটি হোক রামনগরে
- Total Shares
কর্ণাটকের প্রাক্তন ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং এই চডি কুমারস্বামীর মধ্যে নতুন একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের নতুন ফিল্ম সিটিটি ঠিক কোথায় তৈরি করা হবে এবার তা নিয়ে গোল বেঁধেছে।
হায়দ্রাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটির ধাঁচে কর্ণাটক সরকার নতুন এই ফিল্ম সিটি বানাতে চাইছে। সিদ্ধারামাইয়া চাইছেন ফিল্মসিটিটি মাইসুরে বানানো হোক এবং কুমারস্বামী রামনগর জেলায় ফিল্ম সিটি বানাতে চান।
সিদ্দারামাইয়ার আদিবাড়ি মহীশুরে এবং কুমারস্বামী আজ বহু বছর রামনগরের এমএলএ। দুজনেই এই প্রকল্পটি নিয়ে খুবই উৎসাহী কারণ এই প্রকল্পটি কর্ণাটিকে নিঃসন্দেহে একটি বিরাট সংখক পর্যটক টানবে।
ঐতিহাসিক দিক থেকে দেখতে গেলে কর্ণাটকের অন্যান্য রাজ্যগুলির মধ্যে মহীশুর শহরটির একটি বিরাট ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। দীঘ সময় এখানে ওয়াদিয়াররা রাজ্যত্ব করেছিল। বিখ্যাত মহীশুর রাজবাড়ী দেখায় অবস্থিত। রাজবাড়ীটিতে বহু সিনেমা ও সিনেমার গানের শুটিং হয়েছে।
আর কী আছে মহীশুরে?
মহীশুর রাজবাড়ী ছাড়াও ওখানে ওখানে এমন বহু রাজবাড়ী আছে যেগুলোর সম্বন্ধে বেশিরভাগ মানুষ জানে না। কেআরএস বাঁধটিও মহীশুর থেকে খুব একটা দূরে নয়। জেলাটি একটি জঙ্গলের পাদদেশে অবস্থিত বলে জঙ্গলের কিছুটা অংশ শহরের মধ্যে এসে পড়েছে। জঙ্গলের দৃষ্টটি ভারী মনোরম। বহু কন্নড় চিত্রতারকারা সিনেমার শুটিং করতে মহিশুরে যান।
আবার রামনগরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের বহু সিনেমার শুটিং হয়েছে।
হিন্দি ছবি 'শোলে'-তে যেখানে আমরা গব্বর সিংহকে পাহাড়ের মধ্যে বড় বড় পাথরের উপর দাঁড়িয়ে গর্জন করার মতো করে সেই জনপ্রিয় হাঁসি হাঁসতে হাঁসতে নিজের সংলাপ বলতেন সেই সব দৃশ্য এই রামনগর বা রামগড়ে শুটিং হয়েছে।
হিন্দি ছবি শোলের অভাবনীয় জনপ্রিয়তার পর এই রামগড় জায়গাটিও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সিনেমাটি হিট হওয়ার পর সিনেমাটি কোথায় শুটিং করা হয়েছিল তা দেখতেই ওখানে পর্যটকের ভিড় হতে শুরু করে।
এই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই কুমারস্বামী মনে করেন যে রামগড়ে ফিল্ম সিটিটি হলে এই জায়গাটির আরও উন্নতি করা সম্ভব হবে।
রামগড় যেহেতু ব্যাঙ্গালুরুর একেবারে সীমান্তে অবস্থিত তাই এই জায়গাটি ফিল্ম সিটি হওয়ার জন্য একদম উপযুক্ত।
তাছাড়া ব্যাঙ্গালুরু শহর থেকে রামনগর পৌঁছতে মোটে দেড় ঘন্টা সময় লাগে।
তাছাড়াব রামগড় মহীশুরের মতো উন্নত জেলা নয়। প্রকল্পটি হলে রামগড় জেলার অনেক উন্নতি হওয়া সম্ভব। মহীশুর একটি ২ টিয়ার শহর তাই জায়গাটি পরিখাঠামো দিক দিয়ে ও জীবিকার দিক থেকে বেশ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। পাশাপাশি রামনগরের তরুণরা জীবিকার জন্য মূলত কৃষি কিংবা দিন মজুরের কাজের উপর নির্ভর করে।
এই এই ফিল্ম সিটিটি যদি রামনগরে হয় তাহলে জেলাটি যেমন উন্নতি করবে তেমনই ব্যাঙ্গালুরুরের বহু মানুষের কর্মসংস্থানও হবে।
কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতি বছর প্রায় ১৫০টি ছবি তৈরি হয়। এই সব ছবির প্রায় ৯৬ শতাংশই কর্নাটকে শুটিং করা হয়। প্রত্যেক বছর ছবি থেকে লাভ হয় প্রায় ৪০০ কোটি।
রামনগরকে ঘিরে যে আশার জাল বোনা হচ্ছে সেই চাপ কী এই জেলাটি নিতে পারবে?
'শোলে' ছবির একটি দৃশ্য
অনেকেই মনে করেন পরিকাঠামোগত ভাবে জায়গাটি এখনও ঠিক অতখানি উন্নতি করেনি যে শুটিং চলাকালীন বড় তারকারা এসে এখানে থাকতে পারবেন। এমনকি কাছাকাছির মধ্যে কোনও এয়ারপোর্টও নেই, কয়েক ঘন্টা গিয়ে মিলবে এয়ারপোর্ট। বরং মহিশুরে একটি এয়ারপোর্ট আছে যেটি তারকারা ব্যবহার করতে পারবেন।
এই বিয়ষটিকে কেন্দ্র করে এখন কন্নড় সিনেমা জগৎও দুভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে।
আবার অনেকেই মনে করেন যে দুটি জেলাতেই একটি করে ফিল্ম সিটি হওয়া উচিত।
আবার বহু কন্নড় অভিনেতারা মনে করেন যে কোন জায়গায় ফিল্ম সিটিটি গড়ে উঠবে সেটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। বিষয়টা হল ফিল্ম সিটিটি যেখানেই হোকনা কেন তা যেন দর্শককে ভালো ভালো উপহার দিতে পারে।
এখন দেখতে হবে জল কোন দিকে গড়ায়।
লেখাটি ইংরেজিতে পড়ুন