নয়া দৌড় ছেড়ে এবার বাহুবলী, কংগ্রেস প্রচারে অভিনবত্বের ছোঁয়া
এই ধরনের প্রচারের প্রভাব নির্বাচনে কতটা পড়বে তার উত্তর যথাসময়ে পাওয়া যাবে
- Total Shares
২০১৩ সাল পর্যন্ত কংগ্রেস শিবিরের প্রতিটি নির্বাচনী প্রচারে 'নয়া দৌড়' সিনেমার 'ইয়ে দেশ হ্যায় বীর জওয়ানও কা' নামে বিখ্যাত গানটি বাজানো হত।
খুব স্বভাবতই এই গান আর নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মনে দাগ কাটছে পারছে না।
২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাই আর এই গানটি শুনতে পাওয়া যাচ্ছে না। বরঞ্চ বিজেপিকে লক্ষ করে কংগ্রেস শিবির এখন সাম্প্রতিক ছবি বাহুবলীর মতো সিনেমাগুলোর অনুকরণে ভিডিয়ো চালিয়ে যাচ্ছে।
নতুন প্রজন্মের মন জয় করতে কংগ্রেস এবছর তাদের দশক প্রাচীন রীতিনীতির অনেকখানি পরিবর্তন করে ফেলেছে। দলের নির্বাচনী প্রচারে বেছে বেছে এমন কিছু জিনিস ব্যবহার করা হচ্ছে যা তরুণ ভোটারদের মন জয় করতে পারে।
কংগ্রেসের এই প্রচারের ফল মধ্যপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কতটা পড়বে তার উত্তর যথাসময়ে পাওয়া যাবে। কংগ্রেসের এই নতুন ধরণের নির্বাচনী প্রচারের ফলে রাজ্যে ১৫ বছরের বিজেপি শাসন শেষ হবে কিনা তার উত্তরও সময়ই দেবে। কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার - এ রাজ্যে কংগ্রেস নেতানেত্রীরা একত্র হলে রাজ্য কংগ্রেস যুগান্তকারী চিন্তাভাবনা রূপায়ণ করতেই পারে।
এ বছর মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের প্রচার এতটা অন্যরকম লাগছে কেন?
কংগ্রেসের প্রচার [ছবি: পিটিআই]
শুরুতেই বলে নেওয়া যাক, এ বছর প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ। যিনি ১৯৮০ সালে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং বহু নির্বাচনী যুদ্ধের অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পরেই কংগ্রেস অফিসকে কর্পোরেট রূপ দিয়েছেন তিনি। প্রদেশ কংগ্রেস দফতরকে তিনি সাজিয়ে তুলেছেন, প্রদেশ কংগ্রেসের কাজকর্মও বেশ জাঁকজমকপূর্ণ করে তুলেছেন তিনি।
তিনি প্রতিটি কাজের জন্য বিশেযজ্ঞ সংস্থাকে নিয়োগ করেছিলেন। যেমন সমীক্ষার জন্য একটি সংস্থা। আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার চালানোর জন্য অন্য একটি সংস্থা।
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঠিক করা হয়েছে বিস্তর আলাপ আলোচনার পরে।
প্রতিটি আসনই যে কংগ্রেসের পক্ষে জেতা সম্ভব নয় তা নিয়ে সকলেই নিশ্চিত। কিন্তু প্রতিটি আসনে জয় নিশ্চিত করতে যা যা যুক্তিপূর্ণ পদক্ষেপ করা যায় তাই করা হয়েছে।
দলের মিডিয়া টিমের দায়িত্ব মহিলা কংগ্রেস সভাপতি শোভা ওঝাকে নির্বাচনের বহু আগেই দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ইস্যু ও কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
এই প্রথবার এমন হল যে কংগ্রেসের তৈরি ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে বাধ্য হল বিজেপি।
নির্বাচনের একদিন আগে ভোটারদের উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়াতে রাহুল গান্ধী ও কমল নাথের লেখা দুটি চিঠি প্রকাশ করল কংগ্রেস। এর ফলে, শিবনাথ সিং চৌহানকে দিয়েও একটি চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াতে বাধ্য হল বিজেপিও।
নির্বাচন প্রচারে কেউ যেন একে অপরের কাজে দখলদারি না করেন তার জন্য প্রত্যেক নেতাকে আলাদা আলাদা কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
যেমন কমল নাথ মূলত দফতরের কাজ সামলাতেন। প্রচারের খুঁটিনাটি দেখতেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আর দিগ্বিজয় সিংয়ের উপর দায়িত্ব ছিল দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আটকানো।
শিবরাজ সিং চৌহানের বিলাহাবহুল ফার্মহাউসের ছবি ড্রোন ক্যামেরায় বন্দি করে সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি নেতাদের বেশ কিছু জালি অডিও রেকর্ডিংও প্রকাশ করা হয়েছিল।
ওয়াটস অ্যাপ যুগে কেউ আর সত্যি যাচাই করতে যান না। ২০১৪ সালে এই মাধ্যমকে হাতিয়ার করে বিজেপি লাভবান হয়েছিল। এবার কি কংগ্রেস পারবে?
(সৌজন্যে: মেল টুডে)
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে