রাজ্যে পরিচালকের স্বাধীনতা নেই, তাই শ্যামাপ্রসাদের জীবনীনির্ভর ছবি দেখানো বন্ধ
পদ্মাবৎ ছবি প্রদর্শন নিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বিরাট প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন
- Total Shares
পদ্মাবত ছবি প্রদর্শন নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলেছে, ছবিটি নিষিদ্ধ করার কথাও হয়েছে, কিন্তু তখন সবই হচ্ছিল অন্য এক রাজ্যে। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তখন এ নিয়ে বিরাট প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। ওই ছবি না দেখানো যে অন্যায়, সে কথাও বলেছিলেন। উনি শিল্পের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, বিজেপি সরকার নাকি সব কিছুতেই বাধা দেয়, তারা সাম্প্রদায়িক।
বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক বলে এ রাজ্যে এখন কেন ছবি দেখানো যাচ্ছে না, বিশেষ করে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো ব্যক্তির জীবনী অবলম্বনে তৈরি ছবিকে কেন এ রাজ্যে মুক্তি পেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে? তার অর্থ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বৈত নীতি। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়েয়র অবদান কেন এ রাজ্যের মানুষকে জানতে দেওয়া হচ্ছে না? নাকি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জীবন সম্বন্ধে মানুষ যাতে জানতে না পারে তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে? যাতে বিজেপি এ রাজ্যে ঢুকতে না পারে সে জন্যই এই ছবি দেখানো বন্ধ করা হচ্ছে?
দাঙ্গা দ্য রায়ট
আজকাল কিন্তু কোনও ছবির প্রদর্শন হলে বন্ধ করে খুব একটা সুবিধা হয় না। কারণ আজকাল সিনেমা হলে না গিয়েও সিনেমা দেখা সম্ভব। কোনও বিশেষ ছবি দেখতে হলে কেউ সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেটি দেখতে পারেন। ইউটিউবে ছবি দেখা যায়।
শুধু এই ‘দাঙ্গা’ ছবিটি দেখানো বন্ধ করাই নয়, যাঁরা ওঁর খুব কাছের পরিচালক বলে পরিচিত, তাঁরাও অনেকে ওঁর উপরে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। কারণ ওঁর কথা রাখতে গিয়ে তাঁদের অনেক সময় সংলাপ বা তার অংশ, কোনও শব্দ বাদ দিতে হয়েছে, তবেই সেই ছবি মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এতটাই অনুগত যে এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারেন না, কারণ বললে কাজ করতেই পারবেন না।
পদ্মাবৎ ছবি প্রদর্শন নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক চলেছে, ছবিটি নিষিদ্ধ করার কথাও হয়েছে, কিন্তু তখন সবই হচ্ছিল অন্য এক রাজ্যে
এই ছবিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং স্বাধীনতার সময়ের দৃশ্য দেখানো হয়েছে, কিন্তু উনি চাইছেন না তা দেখানো হোক। ওঁর হয়তো মনে হয় নন্দীগ্রাম আন্দোলন থেকেই স্বাধীনতা শুরু। তাই বইয়ের পাতায় পাতায় এখন সে সব ছাপানো হচ্ছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যে মানুষ রয়েছেন, সেটা যে পাকিস্তানের অংশ হয়ে যায়নি, যিনি পাকিস্তানে যাওয়ার হাত থেকে এই বাংলাকে রক্ষা করেছেন, অর্থাৎ এই পশ্চিমবঙ্গের যিনি স্রষ্টা তাঁর ছবির চালানো যাচ্ছে না রাজ্যের হলগুলিতে।
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
ছবিটা দেখিনি, দেখতে পারিনি, কিন্তু শুনেছি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জীবনকে সত্যিই সামনে তুলে ধরা হয়েছে। সত্যিকে স্বীকার করতে এত অসুবিধা কোথায়? কোনও ঐতিহাসিক ঘটনাকে যদি তুলে ধরা হয়, সেটা তো মানুষের জানার অধিকার আছে, সেই অধিকার কেন বন্ধ করা হচ্ছে? আজ রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আছে, কিন্তু কাল তো তা নাও থাকতে পারে। তা ছাড়া সিনেমা ও একটা শিল্প, একজন পরিচালকের তো স্বাধীনতা আছে নিজের মতো করে ছবি বানানোর।