বাণিজ্যিক যুদ্ধে চিন কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ভয় পাচ্ছে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংঘাত নিয়ে চিনের চাপা আশঙ্কা রয়েছে
- Total Shares
চিনের হাইনান দ্বীপে অবস্থিত উপকূলবর্তী শহরটির নাম বোয়াও। আর, ছবির মতো সুন্দর এই শহরটির উপর এখন গোটা বিশ্বের নজর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংঘাতের মাঝে মঙ্গলবার এই শহরেই চিন প্রেসিডেন্ট জাই জিনপিং এক বৈঠকে যোগ দিতে মঞ্চে ওছেন। বৈঠকের পোশাকি নাম চিনের দাভোস।
ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের দাবি মেনে জাই জানিয়েছেন যে ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট সংক্রান্ত সমস্যাগুলোকে খতিয়ে দেখতে তিনি বদ্ধপরিকর। একই সঙ্গে তিনি অটোমোবাইল শিল্পে আমদানি শুল্ক কমানোর কথা ঘোষণা করেছেন। জাইয়ের বক্তৃতার কয়েকঘণ্টা আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট টুইট করে জানিয়েছিলেন, "চিন থেকে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনও গাড়ি পাঠানো হয় তখন মাত্র ২.৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্র থেকে চিনে গাড়ি পাঠানো হলে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হয়। এটা কী ধরণের ব্যবসায়িক নীতি? এটি একটি বোকা বোকা ব্যবসায়িক নীতি যা বহু বছর ধরে চলে আসছে।"
When a car is sent to the United States from China, there is a Tariff to be paid of 2 1/2%. When a car is sent to China from the United States, there is a Tariff to be paid of 25%. Does that sound like free or fair trade. No, it sounds like STUPID TRADE - going on for years!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) April 9, 2018
বেশ কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে একটি প্রচার চলছে - "চিন ভয় পায় না"। চিনের ওয়েবসাইটগুলো খুললেই এই প্রচার লক্ষ করা যাবে যার মূল লক্ষ ব্যাণিজ্যিক নীতির ক্ষেত্রে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দেওয়া। কিন্তু তা সত্বেও চিন জুড়ে কিন্তু চাপা আশঙ্কা রয়েছে। তাই তো জি, কিছুটা হলেও, সমঝোতার পথে হাঁটলেন। নীতিগত কারণ থাকুক বা না থাকুক চিন কিন্তু বহুদিন ধরেই অটোমোবাইল শিল্পের বিভিন্ন ধরণের শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করে চলেছে। কয়েকটি শুল্কের পরিমাণ তো ইতিমধ্যেই কমানো হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কতটা সন্তুষ্ট করতে পারলেন চিন প্রেসিডেন্ট
চিনের সমস্যা হল যুক্তরাষ্ট্রের থেকে মাত্রাতিরিক্ত ব্যাণিজ্যিক সুবিধা ভোগ করে চিন। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন চিনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ করতে বাধ্য হচ্ছে। ট্রাম্প ইতিমধ্যেই ইস্পাতের উপর ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করেছেন। চিন প্রায় ১৪ লক্ষ ডলারের (প্রায় ৬.৪ হাজার কোটি টাকা) ইস্পাত রপ্তানি করে। উল্টোদিকে চিনও ১২০ টি মতো যুক্তরাষ্ট্রীয় পণ্যের উপর (শুয়োরের মাংস থেকে শুরু করে ওয়াইন) শুল্ক বৃদ্ধি করে দিয়েছে। এই পণ্যগুলোর রপ্তানির পরিমাণ প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার (১৯.৪ হাজার কোটি টাকা)।
এপ্রিলের শুরুতে ট্রাম্প আবার বৈদ্যুতিক মেশিনারি-সহ বেশ কয়েকটি চিনে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ধার্য করেছে। পরেরদিনই আবার যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তািনযোগ্য বেশ কয়েকটি পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছে চিন। এর পরেই ট্রাম্পও আরও বেশ কয়েকটি চিনা পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক ধার্য করবার হুমকি দিয়ে রেখেছেন, যা সত্যি সত্যি চাপানো হলে চিন সমস্যায় পড়তে পারে।
এখন দেখার বিষয়, জাইয়ের মঙ্গলবারের ভেটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সন্তুষ্ট হন কিনা। নাকি এখনও তাঁর 'দিল মাঙ্গে মোর'। সন্তুষ্ট না হলে দু'দেশে এই লড়াই কিন্তু চলতেই থাকবে।
(সৌজন্য: মেল টুডে)